More

Social Media

Light
Dark

যুজবেন্দ্র চাহাল, আইপিএলের ঘূর্ণি জাদুকর

আইপিএলে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করাটাকে রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করেছেন যুজবেন্দ্র চাহাল। গত মৌসুমে ২৭ উইকেট শিকার করে রাজস্থান রয়্যালসকে ফাইনালে তোলার পাশাপাশি জিতেছিলেন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির খেতাব। এবারেও মৌসুমেও ফাইনালে হারের ক্ষত ভুলে যাবার লড়াইয়ে বল হাতে ফর্মটা ধরে রেখেছেন চাহাল। 

হরিয়ানার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলো ছড়ানো চাহাল সর্বপ্রথম বিশ্বক্রিকেটে আলোচনায় আসেন এক যুগ আগে। সেবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি টোয়েন্টিতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে শিরোপা জেতানোর পথে বল হাতে ছিলেন দারুণ ছন্দে। বয়স কুড়ি পেরোনোর আগে নাকাল করেছেন বিশ্বসেরা সব ব্যাটসম্যানদের।

ফাইনালে চার ওভারে মাত্র নয় রান দিয়ে শিকার করেছিলেন দুই উইকেট। সেদিন থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ লেগস্পিনার হিসেবে চাহালকে ভাবতে শুরু করেন সকলে। 

ads

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকেই সাদা বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য চাহাল। ভারতের হয়ে টি টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে ছয় উইকেট শিকার করা মাত্র দ্বিতীয় বোলার তিনি। বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে চাহালের লেগস্পিন যেন দুর্বোধ্য প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কাছে। 

তবে চাহালের ক্যারিয়ারেও মাঝে এসেছিল দুঃসময়। আইপিএলের দল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু নিলামের আগে ছেড়ে দিয়েছিল, জাতীয় দলের বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছিলেন। তাঁর বোলিংয়ের সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো গতি। আধুনিক ক্রিকেটে লেগস্পিনাররা যেখানে গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত, সেখানে চাহাল ভরসা করতেন ফ্লাইটে।

বেশিরভাগ বলেই উইকেটের জন্য নির্ভর করতেন ব্যাটসম্যানদের ভুল টাইমিংয়ের। কিন্তু তাঁর কম গতির বল সামলাতে কোনো বেগ পোহাতে হয়নি ব্যাটসম্যানদের। তবে সদাহাস্য চাহাল হাল ছাড়েননি, হাসির আড়ালে ঠিকই পরিশ্রমটা চালিয়ে গেছেন। নিজের বোলিংয়ের খোলনালচ বদলে ফেলেছেন। বলে গতি বাড়িয়েছেন, ফ্লাইটের চাইতে মনোযোগী হয়েছে কুইকারে।

ফলাফলও মিলেছে দ্রুতই, দল বদলে রাজস্থান রয়্যালসে নাম লেখানোর পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশ্বকাপ খেলতে না পারার হতাশা কাটাতেই কিনা গত মৌসুমে রীতিমতো উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন এই তারকা। তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদেই প্রায় দেড় যুগ বাদে আইপিএলের ফাইনালে উঠেছিল দলটি। যদিও সেবারে রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দলটিকে। 

আইপিএলে পারফর্ম করার সুবাদেই কিনা জাতীয় দলে ফিরতেও বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। বছর পেরিয়ে আরেকটি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই গায়ে জড়িয়েছেন জাতীয় দলের জার্সি। আইপিএলের মঞ্চেও চাহালকে থামানোর যেন সাধ্য নেই কারো। এবারের মৌসুমের শুরু থেকেই আছেন দারুণ ছন্দে। মৌসুমের মাঝপথে কয়েক ম্যাচে উইকেট পাননি, তাঁর দলও রাজস্থানও পায়নি জয়ের দেখা। 

তবে চাহাল ফর্মে ফিরতেই যেন পুরনো ছন্দে সাঞ্জু স্যামসনের দল। ইডেন গার্ডেন্সের ব্যাটিং সহায়ক পিচেও তাঁর লেগস্পিনের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের মাঝের ওভারে বোলিংয়ে এসে কলকাতার মিডল অর্ডারকে মাথা তুলে দাঁড়াতেই দেননি চাহাল।

চার ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে শিকার করেছেন চার উইকেট। ১২ ম্যাচে ২১ উইকেট শিকার করে এবারের মৌসুমেও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষস্থানেই আছেন এই তারকা। আইপিএলের মঞ্চটা চাহালের বরাবরই প্রিয়। চাহাল চাইবেন ফর্মটা ধরে রেখে বছরশেষের বিশ্বকাপেও ব্যাটসম্যানদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link