More

Social Media

Light
Dark

‘ড্যাডি’কে থোড়াই কেয়ার করার দু:সাহস দেখাই কি করে!

সাকিব আল হাসান আবার কবে শো রুম উদ্বোধন করতে যাবেন ? কী অবাক হলেন, প্রশ্নটা দেখে? আমরাই তো এগুলো বলে সমালোচনার সৃষ্টি করি। সাকিব সেরা, সাকিব কারো চোখে বিশ্ব সেরা, তারপরও সাকিবের বানিজ্যিক কার্যক্রমে তাঁকে আমরা এক বিন্দুও ছাড় দেই না।

আমরা এই সাকিবে গর্বিত, আবার এই সাকিবেই নিন্দিত। গোটা বিশ্বজুড়ে সাকিবের ভক্তের দেখা মিলে, যাদের কাছে সাকিবের খেলাটাই আসল। আবার সাকিবের সমালোচকও বিস্তর। সত্যিকারের সুপার স্টার এমনই হয়। সবাই তাঁর গুণমুগ্ধ হলে কি আর তাঁর প্রমাণের কিছু থাকে!

বাংলাদেশ যেন ক্রিকেট বিধাতার থেকে ভাগ্য করে পেয়েছিল এই সাকিবকে। সাকিব আল হাসান যেন এক বিস্ময়কর ক্রিকেট প্যাকেজ। ব্যাট হাতে ভালো ইনিংস, বল হাতে ভালো বোলিং, ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স।

ads

তবে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সৌভাগ্য হলেও, সাকিবের জন্য কিছুটা দুর্ভাগ্যই বটে। সাকিব বিশ্ব মানের খেলোয়াড়। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেট থেকে যা পাওয়া উচিৎ, তা কি সে পেয়েছে? তারো তো বড় কোনো অতৃপ্তি রয়ে যেতে পারে। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ কোনটাই তাকে আমরা উপহার দিতে পারিনি। একরাশ আক্ষেপ তাঁর মধ্যেও তো থাকতে পারে।

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য প্রথম উড়াল দেন সাকিব। তখন মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাকদের মতো তুখোড় স্পিনার ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু, তরুণদের বাজিয়ে দেখতে শেষ ম্যাচে লাল-সবুজের জার্সিটা গায়ে ওঠে তাঁর। বাংলার ক্রিকেট আকাশে দেখা মেলে নতুন সূর্যের। তখন যে শুরু হলো, সেই যাত্রা চলছে আজ অবধি।

তিনিও রক্ত–মাংসে গড়া মানুষ। ভুলত্রুটি যে তাঁরও থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের চিন্তাভাবনা কেন যেন ভিন্ন। সাকিবকে সব দিক দিয়ে সেরা হতে হবে, তাঁর মধ্যে কোন দাগ থাকতে পারবে না। পান থেকে চুন খসলে আমরা সব ভুলে যাই। সাকিব বিশ্বসেরা থেকে পরিণত হয়ে যায় ট্রলের পাত্রে।

কোথায় কবে শো-রুম উদ্বোধন করছে, কোথায় বিজ্ঞাপনের শুটিং করছেন এগুলাই আমাদের আলোচ্য বিষয়। এই আচরনে হয়তো ক্রিকেট বিধাতারো রক্তক্ষরণ হয়। তাইতো সাকিব সব উড়িয়ে দিয়ে জবাব দেন ২২ গজে।

এই সাকিবই যখন বাংলাদেশকে জয়ের আনন্দে ভাসায়, তখন নিন্দার জায়গায় ভালোবাসায় ভেসে যান তিনি। তিনি-ই তো সেরা, সাকিব বিশ্ব সেরা। দিন শেষে নিন্দিত–নন্দিত যাই হোক, সাকিবই সেরা। সাকিবের ভক্ত শুধুই যে এই বাংলার কোটি জনতা তাই নয়, বিশ্বজুড়ে সাকিবের ভক্ত।

ভিনদেশি ভক্তদের কাছে সাকিবের খেলাটাই আসল। সাকিব এর শো রুম উদ্বোধন, বিজ্ঞাপনের শুটিং এগুলো তাঁদের বিবেচনার বাইরে। কিন্তু, আমাদের কাছে এগুলোই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। অথচ, আমরা ব্যক্তিজীবনে না পারলেও সাকিব ঠিকই তাঁর ‘প্রায়োরিটি’ সেট করতে পারেন।

দিন শেষে আমরা সাকিবকেই চাই, তা তিনি যাই করুন না কেন। সাকিবের কাছে বাংলাদেশ দলের জয়ের স্বাদটাই চাই। সাকিব কী পেয়েছেন আর কী পাননি, সেটা তিনিই সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন। তবে, আমরা যে সাকিবকে পেয়েছি এটাই আমাদের ক্রিকেটের সৌভাগ্য।

ক’দিন আগে আকাশ চোপড়া তো বলেই ফেললেন, ‘সাকিব আল হাসান দ্য ড্যাডি অব অলরাউন্ডার্স!’ সেই ড্যাডিকে থোড়াই কেয়ার করার দু:সাহস দেখাই কি করে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link