More

Social Media

Light
Dark

যশস্বী জয়সওয়াল, তিরাঙ্গার নতুন তারকা

তাঁর ব্যাটিং নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। তবে টি টোয়েন্টিটা তাঁর ফরম্যাট কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন ছিল বিস্তর। এবারের আইপিএলে দারুণ পারফর্ম করে সমালোচনার জবাবটা ব্যাট হাতেই দিচ্ছেন যশস্বী জয়সওয়াল। 

ছোটবেলাতেই জীবনের নিষ্ঠুর রূপটা খুব কাছে থেকে দেখেছেন জয়সওয়াল। তাঁর বয়সের বাকি কিশোররা যখন জীবন উপভোগে ব্যস্ত, সেই সময়টাতে বাড়ি থেকে শত কিমি দূরে যশস্বী লড়াই করেছেন নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে। থাকার জায়গা ছিল না, অনুশীলন শেষে ফুসকা বিক্রি করেছেন বড় একটা সময়। তবু কখনো হাল ছাড়েননি এই তরুণ। 

জয়সওয়াল জানতেন সাফল্যের কোনো শর্টকাট হয় না। বরং যতটা পরিণত আর পরিশ্রমের পর বাইশ গজের লড়াইয়ে নামবেন, ততো সহজ হবে তাঁর আগামী দিনের পথচলা। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে থাকতেই আলোড়ন তুলেছিলেন গোটা বিশ্ব। খানিকটা দেরিতে হলেও আইপিএলের মঞ্চেও  জানান দিচ্ছেন নিজের সামর্থ্যের। 

ads

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সমানতালে পারফর্ম করে গেছেন এই তারকা। বয়সভিত্তিক দল, ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা এ দলের সফর, সবখানেই যেন জয়সওয়ালের জয়জয়কার। তবে আইপিএলের মঞ্চে হোঁচট খেয়েছিলেন শুরুতে। সবাই ধরে নিয়েছিলেন টি টোয়েন্টির মারকাটারি ব্যাটিং তাঁর জন্য না। বরং বাকি দুই ফরম্যাটে মনোযোগী হলেই ক্যারিয়ারে সামনে এগোবেন এই তারকা। 

তাছাড়া জয়সওয়াল নিজেও খানিকটা ধীরেসুস্থে ইনিংস বড় করতেই বেশি পছন্দ করতেন। পেশিশক্তির উপর নির্ভর না করে বরং উইকেটের চারপাশে নিখাদ ক্রিকেটীয় শটে রান করাতেই তাঁর আনন্দ। তবে আইপিএলে ব্যর্থতার পর নিজের ব্যাটিংয়ে আমূল পরিবর্তন আনেন এই তারকা। 

সবচেয়ে বড় বদলটা এনেছেন মানসিকতায়। আগে ব্যাটিংয়ে নামলে যেন খানিকটা জড়তা কাজ করতো এই তারকার। ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই এখন আগের চাইতে অনেক বেশি আক্রমণাত্নক এই তরুণ। ফিটনেসেও পরিবর্তন এনেছেন, কব্জির জোর বাড়িয়েছেন। পাওয়ারপ্লের বাইরেও তাই বাউন্ডারি বের করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে না জয়সওয়ালকে। 

২০২০ মৌসুমে রাজস্থান রয়্যালসে নাম লেখানোর পর একপ্রকার ঘরের ছেলেই বনে গেছেন দলটির। আগের মৌসুমগুলোর ব্যর্থতার হিসেব যেন সুদে আসলে মিটিয়ে দিচ্ছেন এবারের মৌসুমে। ব্যাট হাতে প্রায় ম্যাচেই জশ বাটলারকে সঙ্গী করে এনে দিচ্ছেন উড়ন্ত সূচনা। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে মাঝে মাঝে বড্ড ম্লান লাগছে বাটলারকেও। 

ইতোমধ্যেই আইপিএলের মঞ্চে সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেছেন জয়সওয়াল। সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষেও , কিন্তু অপরাজিত থাকতে হয়েছে ৯৮ রানে। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কোনো জবাব ছিল না কলকাতার বোলারদের সামনে। 

১৫০ রানের মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নিজের লক্ষ্যটা। প্রথম ওভারেই ২৬ রান তোলার পর ছন্দটা ধরে রেখেছেন গোটা ম্যাচ জুড়েই। মাত্র ১৩ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে গড়েছেন আইপিএল ইতিহাসের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। 

শেষপর্যন্ত ১২ চার এবং পাঁচ ছক্কায় ৪৭ বলে ৯৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এই তরুণ। হয়তো ম্যাচশেষে আক্ষেপ করেছেন, কলকাতা আরেকটু বেশি রান করলে হয়তো পেয়ে যেতেন সেঞ্চুরির দেখা। এখনো পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ৫৭৫ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন জয়সওয়াল। 

আইপিএলে পারফর্ম করলেও এখনো জাতীয় দলে অভিষেক ঘটেনি এই তরুণের। যশস্বী জয়সওয়ালের সামনে তাই ফর্মটা ধরে রেখে বহু পথ পাড়ি দেয়া বাকি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link