More

Social Media

Light
Dark

স্কটিশ বিপ্লবের অপেক্ষা

গত কয়েক বছরে অ্যাসোসিয়েট ক্রিকেট জগতে সাদা বলের দুই ফরম্যাটে সবচেয়ে উন্নতি করা দল যদি কেউ হয় তার মধ্যে একদম প্রথম সারিতেই থাকবে স্কটল্যান্ড। প্রিস্টোন মমসেনের বদলে কাইল কোয়েটজার অধিনায়ক হয়ে আসার পরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলার ধরণই বদলে গেছে তাঁদের।

একদিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ড বা জিম্বাবুয়েকে হারানো কিংবা বেসরকারি একদিনের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়েই পরিষ্কার প্রচুর উন্নতি করেছে স্কটিশ ক্রিকেট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় দলের সাথে খুব বেশি খেলার সুযোগ শেষ কয়েক বছরে না পেলেও সবমিলিয়ে পারফরমেন্স খারাপ নয়।

শেষ ৫ বছরে মাত্র ২৭টা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাওয়া স্কটিশরা যদিও এর মধ্যে ১৬ ম্যাচেই জিতেছে। সাদা বলের ক্রিকেটে ক্রমশ উন্নতি করা, বিশ্ব টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকি ১৪ নম্বরে থাকা দল স্কটল্যান্ড এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভালো ফল করবে আশা করা যায়।

ads
  • শক্তি

স্কটল্যান্ড দলের মূল শক্তি যদি কিছু হয় তাহলে তাঁদের দারুণ ব্যাটিং। টপ অর্ডারে কাইল কোয়েটজার ও কালাম ম্যাকলিয়োদের ঝোড়ো ব্যাটিং স্কটিশ দলের সম্পদ। কোয়েটজার তো প্রায় ১২ বছর ধরেই স্কটল্যান্ড ব্যাটিং এর মূল স্তম্ভ, এর সাথে ম্যাকলিয়ড, যিনি একসময় বেশ ভালো পেস বোলার ছিলেন, সেখান থেকে পিঠের চোট ও অ্যাকশনের সমস্যায় পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান হয়ে যাওয়ার পরে টপ অর্ডারে এ রীতিমতো ভরসার পাত্র হয়ে উঠেছে বছর কয়েক যাবৎ।

স্পিন খেলাতেও দারুন দক্ষ ম্যাকলিয়োড সুইপ শটে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারেন স্পিনারদের। এছাড়া মিডল অর্ডারে জর্জ মানসী ও ব্যাট হাতে ‘ইনোভেটিভ’ সব স্ট্রোক খেলায় এবং যেকোনো সময় ছক্কা মারতে পারায় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ব্যাটসম্যানদের টি-টোয়েন্টি বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে প্রথম ১৫র মধ্যে থাকা মানসী কিন্তু মিডল ওভার ও স্লগ ওভারে বড় ভরসা হতে চলেছেন।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে তিন নম্বরে থাকা অলরাউন্ডার রিচি বেরিংটন ব্যাট ও বল হাতে দলের এক বিরাট স্তম্ভ। বছর দশেক আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করা বেরিংটন তাঁর মিডিয়াম পেস দিয়ে মাঝের ওভার গুলোতে দারুণ কার্যকরী। অ্যাসোসিয়েট জগতের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক ম্যাট ক্রস ও দুর্দান্ত ডেথ বোলার সাফিয়ান শরিফ ও এই স্কটিশ ব্রিগেডেই আছেন।

ব্যাটিং স্কটল্যান্ডের প্রধান শক্তি হলেও বল হাতেও পিছিয়ে থাকবে না তাঁরা। বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ১২ নম্বরে থাকা বাঁহাতি স্পিনার মার্ক ওয়াট কিংবা আরেক বাঁহাতি স্পিনার হামজা তাহির কিন্তু প্রথম রাউন্ডে ওমানের উইকেটে যথেষ্টই কার্য্যকরী হতে চলেছেন।

  • দুর্বলতা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এতটাই কম খেলার সুযোগ পায় স্কটল্যান্ড যে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে চাপের মুখে ভেঙে পড়া তাঁদের কাছে অস্বাভাবিক নয়। নিয়মিত বড় ম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়ায় ম্যাচ ফিনিশ করে আসার ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা পিছিয়েই থাকবে স্কটিশরা।

  • স্কটল্যান্ড দল ও তাঁদের সম্ভাবনা

এবারের বিশ্বকাপে নির্বাচিত হওয়া স্কটল্যান্ড দল অভিজ্ঞতায় অনেক দলের থেকেই এগিয়ে থাকবে। বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে হলে কোয়েটজার, ম্যাকলিয়োড, বেরিংটন, শরীফ বা ২০১৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে প্রথম ৫ ম্যাচের পরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর দলে থাকা জোশ ডেভির মতো সিনিয়রদের দিকে তাকিয়ে থাকবে স্কটল্যান্ড। বাঁহাতি স্পিনার মার্ক ওয়াট অনেক হিসেব বদলে দিতে পারেন।

এছাড়া স্কটল্যান্ডের অনেক খেলোয়াড়েরই ইংল্যান্ড এ কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় বড় খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে পূর্বসূরীদের মতো হীনমন্যতা থাকবে না আশা করা যায়। আর ঘরোয়া ক্রিকেটে চমৎকার ফর্মে থাকা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অলি হেয়ার্স বা অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মাইকেল লিস্ক কিন্তু বড় চমক হতে পারেন।

গ্ৰুপে পাপুয়া নিউ গিনি বা ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততেই হবে পরের রাউন্ডে যেতে গেলে, এছাড়া এর আগে বাংলাদেশকেও একবার ঘরের মাঠে হারানোর ফলে সাকিবদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে মানসিক ভাবে চাঙ্গাই থাকবে স্কটিশরা। সুপার ১২-এ স্কটল্যান্ড পৌঁছলে আরো অনেক চমক দেখাতেই পারেন কোয়েটজার বাহিনী।

  • স্কটল্যান্ড স্কোয়াড

কাইল কোয়েটজার (অধিনায়ক), ক্যালাম ম্যাকলিয়ড, ম্যাট ক্রস, রিচি বেরিংটন, জর্জ মুন্সী, মাইকেল লিস্ক, ডায়লন বাজ, জস ডেভি, অ্যালেসডার ইভান্স, ক্রিস গ্রিভস, সাফিয়ান শরিফ, মার্ক ওয়াট, হামজা তাহির, ক্রিস সোল, অলি হেয়ার্স, ব্র্যাড হোয়েল, ক্রেগ ওয়ালেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link