More

Social Media

Light
Dark

মরিয়া সেই চেষ্টা ফিরবে তো!

‘সাদা পোশাকে টানটান ম্যাচ খেলা আমাকে যে উত্তেজনা ও আনন্দ দেয় পৃথিবীতে আর সব কিছু তার কাছে ম্লান। আমি ধন্য ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতে পেরে।’ – বক্তা বিরাট কোহলি। বিরাট বর্তমান সময়ে টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম পূজারী।

খেলাটা যে এখনো বেঁচে বর্তে আছে এবং দূরদর্শনে আমরা দেখতে পাচ্ছি তার একটা কারণ ভারত অধিনায়কের একনিষ্ঠ টেস্ট ভক্তি। ঠিক এই কারণেই উনি ২০১৪ সালের দু:স্বপ্নসম বিলেত সফরের পর নিজের টেকনিক নিয়ে মাজাঘষা করেছিলেন এবং ফিরেও এসেছিলেন বছরের শেষে রীতিমতো অভাবনীয় ভাবে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিরাটের উঠতি ভাইরাও কি টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে একইরকম নিষ্ঠাবান? যা দেখছি, বুঝছি বা শুনছি তাতে মনে হচ্ছে নয়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) বারবার ইনকামিং ডেলিভারিতে আউট হওয়া পৃথ্বী শ, তাঁর টেকনিক শুধরানোর জন্যে বিরাট মাজাঘষা করেছেন, এমন গুজব কোথাও শুনিনি।

ads

কঠিন বিদেশ সফর এলেই রোহিত শর্মার চোঁট লাগে, কিন্তু তিনি চোট নিয়েও দিব্যি আইপিএল খেলে বেড়ান। এই দলে টেস্টে ভালো করার মনন বা মানসিকতা যাদের মধ্যে দেখি প্রত্যেকেই প্রায় ত্রিশোর্ধ্ব। মুশকিল হচ্ছে রাহানে, পূজারা বা অশ্বিনরা আর বেশিদিন টানতে পারবেন না। তারপর? গাভাস্কারের পর যেমন সচিন এসে গেছেন, শচীনের পর বিরাট বা কুম্বলের পর অশ্বিন, রাহুলের পর পূজারা, তেমন সাপ্লাই লাইন আর বছর পাঁচেক বাদে থাকবে তো?

আমার এক সহকর্মী কাল আমাকে বলছিলেন, টেস্ট ম্যাচ দেখার এতো কি আছে বুঝিনা। ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি হলে তাও মানা যেত। টেস্ট ম্যাচের সময় সারাদিন ডেস্কে সনিলিভ চালিয়ে রাখার কি মানে কে জানে? ঠিক এই কারণেই ভয় হয়। ক্রিকেট বা যেকোনো ধরণের বিনোদনই যে বাজারের চাহিদা ও যোগানের হিসাবেই চলে এই কথা একটা ক্লাস ১০ এর বাচ্চাও জানে।

কাজেই এরপর টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করার আলাদা করে কোনো কারণ থাকবে না। বিদ্দ্বজনেদের সম্মান বা সমাদর? ধুর ওইসব ইম্প্র্যাক্টিকালিটির মধ্যে এই প্রজন্ম নেই। আইপিএল আর টি২০ খেলো, টাকা কামাও, ঘোরো বেড়াও-এই তো জীবন কালিদা।

সৌরভ, দ্রাবিড়, শচীন, গাভাস্কারদের সময় তাই এই ধরণের বিপর্যয় ঘটলেও তাঁরা ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। কিছু সময় সফল হতেন, কিছু সময় ব্যর্থ। কিন্তু চেষ্টাটা থাকতো। প্রশ্নটা সেটাই-সেই মরিয়া চেষ্টা দেখতে পাবো কি? কিন্তু আশায় বাঁচে চাষা।

যাদের বিরুদ্ধে ভারত কাল ছড়িয়ে এরকম লাট করলো, গত দশকে তারাই দুবার এরকম বিপর্যয়ের ধ্বংসস্তূপ থেকে সুস্বাদু জয়ের হাইরাইসে উত্তরণ ঘটিয়েছিল। একবার ২০১১ সালে কেপটাউন টেস্টে ৪৭ এ অলআউট হবার পর জোহানেসবার্গে অভাবনীয় জয়, এবং ২০১৫ সালে ট্রেন্টব্রিজে ৬০ রানে দুরমুশ হবার পর ওভালে ইংল্যান্ডকে পাল্টা ইনিংস হারের ওষুধ গেলানো।

তাই ভারতও এরকম অভাবনীয় কিছু ঘটাতেই পারে এরকম আশা করতে অসুবিধা কোথায়? সর্বোপরি আজিঙ্কা মানে মারাঠিতে অপরাজেয় তো। পারবেন না তিনি (রবি শাস্ত্রীর কথা ছেড়ে দিচ্ছি, কারণ তিনি এমন কোচ যে তিন বছরেও ব্যাটসম্যানদের সুইং খেলা শেখাতে পারলেন না) আগারওয়াল, বিহারি, বুমরাদের নিয়ে একটা মরণ কামড় দিতে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link