More

Social Media

Light
Dark

চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্য কি আদৌ বদলাবে!

চোকিংয়ের ইতিহাস ভেঙে নতুন এক গল্প লেখার পথে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই গল্পের আবহও এগিয়েছে দারুণ ছন্দে। তবে অসমাপ্তই থেকে গেল প্রোটিয়াদের ভাগ্য বদলের গল্প। আরও এক বার সেমিতে হারার হতাশা সঙ্গী হয়েছে তাদের সাথে। 

রাউন্ড রবিন লিগে ২ ম্যাচ হারের বিপরীতে ৭ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় অবস্থান৷ শিরোপার সম্ভাব্য দৌড়ে তাই ভালোভাবেই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এবারও যেন ভাগ্য বিপর্যয়ের গল্প লেখা ছিল প্রোটিয়াদের কপালে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩ উইকেটে হেরে ফাইনালের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তাদের। 

দক্ষিণ আফ্রিকার এমন বারবার ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণ কী? ৫ বার সেমিতে গিয়েও কেন তারা একবারও ফাইনালে উঠতে পারেনি? শুধুই কি ভাগ্যের দোষ? নাকি এমন কিছুর পুনরাবৃত্তিতে নিজেদের দায়ও আছে?

ads

এবারের বিশ্বকাপে প্রোটিয়ারা যেমন প্রতাপ দেখিয়েছে, তার উল্টো চিত্র ছিল তাদের অধিনায়কের ক্ষেত্রে। কোনো ম্যাচেই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি টেম্বা বাভুমা। দলের অধিনায়ক হওয়ায় তাঁর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে একাদশে নিতেও পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার টিম ম্যানেজমেন্ট। 

এ ছাড়া সেমিতে টসে জিতে তার আগে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও হয়েছে সমালোচনা। কলকাতা শুষ্ক উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করা কঠিন জেনেও কেন এমন সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ঐ উইকেটেই প্রথমে ব্যাটিং করা দল ২০ ম্যাচের মধ্যে ১৩ বারই জয়ের মুখ দেখেছে। 

এ ছাড়া, শেষ ১১ ম্যাচের ১০ টিতেই প্রথমে ব্যাট করে জয়ের সুখকর স্মৃতি রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। একই সাথে, পরে ব্যাট করে প্রোটিয়াদের হোঁচট খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা এই বিশ্বকাপেই হয়েছে৷ সব মিলিয়ে পরে ব্যাট করে অস্বস্তিকর কিংবা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। আর এমন রক্ষণাত্মক মানসিকতায় তাদের সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে। 

প্রোটিয়াদের বারবার চোকিংয়ের নেপথ্যে রয়েছে আরো কিছু গলদ। এবারের বিশ্বকাপে দলগত সর্বোচ্চ, সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের সৌজন্যেই। কিন্তু গোটা টুর্নামেন্টে দাপুটে ব্যাটিং করলেও রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১০০ এর নিচেই অলআউট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ এমন অপ্রত্যাশিত ব্যাটিংয়ের সম্মুখীন তারা আগেই হয়েছে৷ কিন্তু সেই আশঙ্কাকে মাথায় রেখে দক্ষিণ আফ্রিকার টিম ম্যানেজমেন্ট আলাদা করে কোনো রণকৌশল সাজায়নি। 

এ ছাড়া ফিল্ডিংয়ে দুর্দশার ছবি তো আছেই। সেমিতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ছেড়েছেন কুইন্টন ডি কক। আর তাতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও তার আগে ব্যাট করে অল্প রানে আটকে যাওয়াটাই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ হারার মূল কারণ।

অধিনায়কত্ব, উইকেট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত না নেওয়া, মিস ফিল্ডিং— মূলত এসব কারণেই দারুণ খেলতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনাল খেলার পথ আটকে গিয়েছে। যেটা একের পর এক বিশ্বকাপেই হয়ে আসছে। চোকার্স তকমাও তাই লেগে গিয়েছে চিরায়ত রূপে। যেন সেখান থেকে উত্তরণের পথটাই হারিয়ে ফেলেছে তাঁরা।

 

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link