More

Social Media

Light
Dark

কেন শচীন ‘পাজি’!

শচীন টেন্ডুলকারের কথা শুনলেই প্রথমে মনে হয় একটি কথা। মোটামুটি খর্ব উচ্চতার একজন ব্যাটসম্যান। যিনি কিনা ব্যাটিং এ নেমে দূর্দান্ত সব শটে বোলারদের নাভিশ্বাস তুলছেন। আর এই শচীন টেন্ডুলকারকে কি নামে ডাকা হয় সেটা নিয়ে একটু হলেও ভাবনা আছে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে।

শচীন টেন্ডুলকারকে তো কত নামেই ডাকা হয়। কেউ বলেন লিটল মাস্টার, কেউ বা বলেন মাস্টার ব্লাস্টার। কিন্তু এর বাইরেও বেশ পরিচিত একটি নাম আছে তাঁর।

যারা নিয়মিত ক্রিকেট নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন তারা সবাই জানেন শচীন টেন্ডুলকারকে ‘পাজি’ বলে ডাকা হয়। শুধুমাত্র তাঁর সতীর্থরা নয়, মোটামুটি ভারতীয় সব ক্রিকেটারই তাঁকে পাজি বলে ডাকে। কপিল দেবকেও ‘পাজি’ বলা হয়। সেটার সহজ ব্যাখ্যা হল তিনি পাঞ্জাবের মানুষ। সেখানে ‘বড় ভাই’ অর্থে ‘পাজি’ ব্যবহৃত হয়।

ads

এখন কথা হলো কেন শচীন রমেশ টেন্ডুলকারকে ‘পাজি’ বলে ডাকা হয়? তিনি তো মহারাষ্ট্রের মানুষ। সেই প্রশ্নের উওর বেশিরভাগ মানুষেরই জানা নেই। আর সেই রহস্যের সমাধান করেছেন তাঁরই সতীর্থ আশিষ নেহরা।

আর সেই রহস্য ঘুটতে চলে যেতে হবে একটা বিশ্বকাপের মঞ্চে।

সেটা ছিল ২০০৩ বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় ভারত। এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৭৩ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ২৭৪ রানে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দূর্দান্ত সূচনা এনে দেন শচীন এবং শেবাগ।

৫ ওভার ৩ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তারা। এরপর পর পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শেবাগ এবং সৌরভ। এখান থেকে কাইফের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান শচীন।

খেলেন ৭৫ বলে ৯৮ রানের একটি ইনিংস। দূর্দান্ত ব্যাটিং করে জিতে নেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। বলা হয় এটা শচীনের ওয়ানডে ক্যারিয়ারেরই অন্যতম সেরা একটা ইনিংস।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে দল হোটেলে ফেরার সময় টিম বাসে হঠাৎই তাঁকে পাজি বলে সম্বোধন করেন ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং। আর সেখান থেকেই এই নামের সূচনা হয়। আর শুধু সূচনা নয় নামটা জনপ্রিয় হয়ে যায় দলের মধ্যে।

স্টার স্পোর্টসের এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এসে সেসব দিনের কথা স্মরণ করেন আশিষ নেহরা। তিনি বলেন, ‘এর আগে আমরা শচীনকে ডাকতাম শচীন বা শচীন ভাই বলে। ২০০৩ সালে পয়াকিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচের পর থেকে আমরা তাঁকে পাজি বলে ডাকা শুরু করি।’

তিনি ঘটনাটা একটু বিস্তারিত বলেন, ‘দল হোটেলে ফিরছিল টিম বাসে করে। সবাই বেশ খুশি। ফেরার সময় পিছন থেকে হরভজন (সিং) বলে উঠেন পাজি নাম্বার ওয়ান। এর পর থেকেই আমরা ওকে পাজি বলে ডাকি। এর আগে শুধুমাত্র একজনই পাজি ছিলো, তিনি হলেন কপিল দেব।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৭৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শচীনের এই দূর্দান্ত এই ইনিংসের কারণে ২৬ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেই ভারত। শোয়েব আক্তারের বলে আউট হবার আগে দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন শচিন টেন্ডুলকার।

সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ভারতীয় দর্শকদের মনে এই ইনিংস গেঁথে থাকবে অনেক দিন। আর সেই ম্যাচ দিয়ে শচীনের ‘পাজি’ নামটাও পাকাপোক্ত হয়ে যায়।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link