More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

ফুটবলে যেখানে এগিয়ে ভারত

বাংলাদেশ ও ভারত – ফিফা র‍্যাংকিং বলে, দু’দলের ব্যবধান রয়েছে বিস্তর। ভারতের র‍্যাংকিং যেখানে ১০৫ সেখানে বাংলাদেশের বর্তমান র‍্যাংকিং ১৮৪। তবে র‍্যাংকিং কে ছাপিয়ে বিগত ২/৩ বছরে দেখা গেছে, দু’দলের লড়াইটা হয় সমানে সমান। সর্বশেষ তিন দেখায় ফলাফল পক্ষে যায়নি কোনো দলেরই। তিনটি ম্যাচই শেষ হয়েছে ড্রতে নিষ্পত্তি হয়ে।

আবার দুদলের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সও প্রায় একই। ভারতে সবশেষ আট ম্যাচের কোনোটিতেই জয়ের মুখ দেখেনি, বাংলাদেশ সেখানে টানা ৭ ম্যাচ ধরে জয়শূণ্য। তবে, দু’দলের পার্থক্যটা গড়ে দেয় সামগ্রিক পরিসংখ্যান। বাংলাদেশ-ভারত মধ্যকার সর্বমোট ২৯ দেখায় ভারতের জয় যেখানে ১৫ টি, সেখানে বাংলাদেশের জয় মাত্র ২ টিতে। বাকি ম্যাচগুলোর ফল হয়েছে ড্র।

চলমান বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলের দিকে দৃষ্টি রাখলেই দেখা যায়, ৫ দলের গ্রুপে ভারত রয়েছে ৪ এ আর বাংলাদেশ আছে ৫ নাম্বারে। পয়েন্ট টেবিলের দু’দলের অবস্থান নির্ভর করছে এ ম্যাচের ফলাফল ‘জয়’ এর উপরে। ভারত জিতলে আফগানিস্তানকে টপকে চলে যাবে ৩ নম্বরে আর বাংলাদেশ জিতলে এক ধাপ এগিয়ে উঠে যাবে ৪ নম্বরে।

ads

সেক্ষেত্রে অবশ্য ভারত চলে যাবে পয়েন্ট টেবিলের তলানীতে। ৩ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতলে ২ ধাপ এগিয়ে ৩ নাম্বারে উঠে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। সে সব সম্ভাবনার জন্য টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখতে হবে আজ ঠিক রাত ৮ টায়।

সাম্প্রতিক সময়ের হিসেবে দু’দলের ব্যবধান উনিশ বিশের মতো। কিন্তু অবকাঠামোগত দিক দিয়ে ভারত যে ফুটবলে এগিয়ে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। আর বাংলাদেশের বর্তমান ফুটবল বেঁচে আছে আশি নব্বই দশকের ফুটবল ঐতিহ্যের নস্টালসজিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের এমন ঈর্ষণীয় উন্নতির কারণগুলো একটু খুজে বের করা যাক।

১. ভারতের মূলত এমন উন্নতি ঘটে ইংলিশ কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের আমলে। তার সময়ে ভারত প্রচুত আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। এভাবেই ফিফা র‍্যাংকিং-এ ভারতের অবিশ্বাস্য উন্নতি ঘটতে থাকে। এর পরে কোচ হিসেবে আছেন ক্রোয়েশিয়ার ইগর স্টিম্যাচ। যিনি ২০১৪ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ক্রোয়েশিয়ায় দলের সাথে কাজ করেছিলেন, যদিও প্রধান কোচ হিসেবে নয়।

১৮ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি সরাসরি কোচিং করিয়েছেন বর্তমানে ইউরোপের দাপুটে ফুটবলার লুকা মদ্রিচ, মারিও মানজুকিচ, ইভান রাকিটিচ, মাতেও কোভাচিচ সহ আরো অনেককে। বলাই বাহুল্য, খেলোয়াড়ি জীবনে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া দলের সদস্য ছিলেন তিনি। এমন হাই প্রোফাইল কোচ, পাশাপাশি বড় পর্যায়ে কোচিং করানো স্টিম্যাচের কাছ থেকে ভারতের ভবিষ্যত ফুটবলের সম্ভাবনা তাই প্রবল।

২. ফুটবলে ভারতে উন্নতির আরেকটি প্রধান কারণ হলো দুটি আন্তর্জাতিক মানের পেশাদার লিগ পরিচালনা করা। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ(আইএসএল) আর ইন্ডিয়ান লিগ(আইলিগ), এ দুটি লিগের কারণে বলা যেতে ভারতের ফুটবলে অবিশ্বাস্য রকমের রেভুলুশন ঘটেছে। আইএসএলে এমন বিদেশি খেলোয়াড়রাও আসেন যাদের রয়েছে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা।

শুধু সেটিই নয়, এ ‍টুর্নামেন্টগুলোতে তরুণদের পাশে একটু বয়স্ক তারকা ফুটবলাররাও খেলেছেন। ফ্রান্সের ডেভিড ত্রেজেগে, ব্রাজিলের রবার্তো কার্লোস, ইতালির আলেজান্দ্রো দেল পিয়েরোর মতো ফুটবলাররাও আইএসএল খেলেছেন। এর ফলে ভারতের লোকাল ফুটবলাররা বিশ্বমানের এ সব ফুটবলারদের সাহচর্যে অনেক কিছু শিখতে পারেন।

বিদেশি তারকা ফুটবলারদের ভীড়ে যে ভারতের লোকাল খেলোয়াড়রা পিছিয়ে পড়েন তাও কিন্তু নয়। পাল্লা দেন সমানে সমান। এই যেমন ২০২০-২১ মৌসুমের আইএসএলের কথাই ধরা যাক। এ মৌসুমের গোল্ডেন গ্লোভ জিতেছেন এথলেটিকো ডি কলকাতার অরিন্দম ভট্টাচার্য।

ঠিক এর বিপরীত চিত্রটা দেখা যায় আমাদের দেশে। বিশ্বমানের লিগ তো দূরে থাক বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অবস্থাকে এক কথায়, ‘ভগ্নদশা’ বললেও খুব একটা ভুল হবে না। গত ১ যুগে টানা ৩ বছর বাংলাদেশকে কোচিং করিয়েছিন এমন কোচও পাওয়া যাবে না। বারংবার পরিবর্তিত হয়েছে কোচ।

ফলস্বরূপ বাংলাদেশ ফুটবলের উন্নতির পথটাও হয়েছে রুদ্ধ। একবার তো টানা ব্যর্থতায় ৩ বছরের নির্বাসনের ফল পেয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ভারতের একেকটা রাজ্যে যেখানে ফুটবল একাডেমি সেখানে বাংলাদেশে একটি পরিপূর্ণ ফুটবল একাডেমির সংখ্যা শূণ্য। ফুটবলার তৈরি কারখানা বলা হয় যে জায়গাটাকে সেটার অপ্রতুলতা থাকলে নতুন ফুটবলার তৈরি হবে কোথা থেকে?

বাংলাদেশ ফুটবলের সোনালি দিন ফিরে আসুক। বাংলাদেশের সফলতা কোনো দলের সাথে শুধু ড্রয়ের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে খোলস ছেড়ে জয়ের দিকে দৃষ্টিসীমা যাক।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link