More

Social Media

Light
Dark

বিশ্বকাপে খেলবেন সৌম্য?

প্রতিবারই দল ঘোষণার আগে একটা গুঞ্জন ওঠে, সৌম্য সরকার ফিরছেন। যেমন এশিয়া কাপে থাকাটা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। শোনা যায় নির্বাচকরাও এশিয়া কাপের দলে সৌম্যকে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মূল স্কোয়াডে তাঁর নাম ছিল না। তাঁর জায়গায় হঠাৎ করেই চলে এলেন সাব্বির রহমান রুম্মন। অথচ বাংলাদেশের তো দরকার ছিল একজন ওপেনার।

এরপর পরিকল্পনা শুরু হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে। আবার আলোচনা শুরু হয় এই ওপেনারকে নিয়ে। বাংলাদেশ ওপেনিং এর সংকটটা তাঁকে দিয়েই কাটাতে চাচ্ছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে সেভাবে প্রমাণ করতে পারেননি তিনি। তবুও সৌম্যকে বাংলাদেশ পরিকল্পনায় রাখতে চেয়েছে।

এর অন্যতম কারণ অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন। ওই কন্ডিশনে ইনিংসের শুরুতেই কোয়ালিটি পেসারদের সামনে বুক উচিয়ে দাঁড়াতে পারেন এমন ব্যাটসম্যান খুঁজে পাওয়া কঠিন। যেই দুই একজন সাহসটা রাখেন তাঁদের একজন সৌম্য সরকার। পেস বোলারদের বিপক্ষে তাঁর ব্যাটিং শক্তিটা সহজাত। এছাড়া দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেয়ার ক্ষমতাও তাঁর আছে। ফলে পুরনো সেই সৌম্যকে ভরসা করা ছাড়া বাংলাদেশের আর তেমন উপায়ও ছিল না।

ads

এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য মিরপুরে বাংলাদেশ যে কয়েকটা সেশন অনুশীলন করেছে সেখানেও ছিল সৌম্য সরকারের সরব উপস্থিতি। তিন দিনের বিশেষ অনুশীলনের পরও নিয়মিত মিরপুরের নেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। বড় বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়াটা সৌম্যের জন্য স্রেফ সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। তবে এবারও দল ঘোষণার দিন দেখা গেল আরেক গুগলি। নতুন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরণ শ্রীরাম ওপেনার হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তকে। বিশ্বকাপে একপ্রান্তে ওপেন করার জন্য টেকনিক্যালি শক্তিশালী কাউকেই নাকি তিনি চাইছিলেন। সেজন্য একেবারে হঠাৎ  করেও বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

শান্ত’র দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে অনেক। কোন জায়গায় নিজেকে প্রমাণ না করে, একেবারে পরিকল্পনায় না থেকেও তিনি কী করে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেলেন এমন প্রশ্নও হয়েছে। নেটে শান্ত’র ব্যাটিং টেকনিক মুগ্ধতা ছড়ালেও, ম্যাচে তাঁর ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। তবে শ্রীধরণ শ্রীরামের তিন দিনের ক্যাম্পেই তাঁর কপাল খুলেছে।

একই আলোচনা অবশ্য সৌম্য সরকারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তিনিও কোথাও সাম্প্রতিক সময়ে প্রমাণ করতে পারেননি। তবে সৌম্য পরিকল্পনায় ছিলেন। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন তাঁকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল। এছাড়া সাদা বলের রেকর্ড ঘাটলেও শান্তর থেকে সৌম্য এগিয়ে থাকবেন।

টিম ম্যানেজম্যান্ট হয়তো অন্য ভাবে তাঁদের পরিকল্পনা সাজাতে চেয়েছে। যে কারণে সব ঠিক থাকার পরেও সৌম্য বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেলেন না। তবে সৌম্য ভাবনা থেকেও একেবারে বের হতে পারেনি দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে ক্যাম্প করতে গিয়েছে বাংলাদেশ সেখানে দলের সাথে সৌম্যকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সেখানে আরব আমিরাতের সাথে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে অবশ্য যাকে ওপেন করার জন্য বিশ্বকাপ দলে নেয়া হলো সেই শান্ত একাদশে ছিলেন না। ওপেন করেছেন সাব্বির রহমান রুম্মন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হয়তো শান্ত কিংবা সৌম্য’র একজনকে সুযোগ দিয়ে দেখতে পারে বাংলাদেশ।

এইসব ঘটনা প্রমাণ করে সৌম্য সরকার এখনও দলের পরিকল্পনাতে আছেন। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে কিংবা অন্য ওপেনারদের নিয়ে তাঁরা পুরোপুরি নিশ্চিত নন। যদি হতেনই তাহলে এখনও দলের সাথে সৌম্যকে রাখার ব্যাখ্যা কী?

বাংলাদেশ কী তাহলে শেষ মুহূর্তে তাঁদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে চলেছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী অক্টোবরের নয় তারিখ পর্যন্ত দলগুলো তাঁদের মূল স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে পারে। তাহলে কী সৌম্য সরকারেরও বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা আছে। উত্তরটা বোধহয় শুধু সময়ই দিতে পারে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link