More

Social Media

Light
Dark

হাজার নাটক শেষে জিতল বাংলাদেশ

জিতলে সেমিফাইনালের স্বপ্ন জেগে উঠবে আর হারলে বিদায়ের রাগিণী বেজে উঠবে। এমন সমীকরণে মাঠে নেমেছিলো বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। ব্রিসবেনের গ্যাবায় জিম্বাবুয়েকে তিন রানে হারিয়ে সেমির স্বপ্ন জিইয়ে রাখলো বাংলাদেশ। অপরদিকে ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত না হলেও সেমিফাইনালে যেতে বিশেষ কিছু করতে হবে ক্রেইগ আরভিন-সিকান্দার রাজাদের। 

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে জিততেই হবে এমন  ম্যাচে বাংলাদেশ মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ দেয় ইয়াসির আলী রাব্বিকে। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। 

ব্রিসবেনের গ্যাবায় প্রথম খেলতে নামা বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলে। মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফিরে যান সৌম্য সরকার। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন লিটন কুমার দাস। ১২ বলে ১৪ রান করা লিটন অহেতুক স্কুপ করতে গিয়ে টেন্ডাই চাতারার কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান তোলা বাংলাদেশের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। 

ads

শুরুর ধাক্কা সামলে এই দুই ব্যাটার ৪৪ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে শন উইলিয়ামস কে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ব্লেসিং মুজারাবানির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর উইকেটে আসা আফিফ হোসেনকে নিয়ে দলের রানের গতি বাড়াতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

৪৫ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করা বাঁহাতি এই ব্যাটার ১৬ তম ওভারে ব্র্যাড ইভান্সেকে দুই চার ও এক ছয়ে ১৭ রান তোলেন তিনি। ১৬ ওভার শেষে তিন উইকেট হারিয়ে ১২০ রানে পৌঁছানো বাংলাদেশ দল স্কোর ১৬০ পার করার স্বপ্ন দেখছিল। 

তবে সিকান্দার রাজার পরের ওভারেই শান্ত ৫৫ বলে ৭১ আউট হয়ে গেলে বাংলাদেশ এর ব্যাটিংয়ে যেন খরা নেমে আসে। শেষ চার ওভারে চার উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩০ রান তুলতে পারে আফিফ হোসেন-মোসাদ্দেক সৈকতরা। টি টোয়েন্টি চার-ছয়ের ক্রিকেট হলেও শেষ চার ওভারে মাত্র একটি ছয়ের মার রয়েছে টাইগার ব্যাটারদের। 

শেষদিকে আফিফ হোসেনের ১৯ বলে ২৯ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে কাটায় কাটায় ১৫০ রান তোলে বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে অসংখ্য মিস ফিল্ডিংয়ের সাথে দুইটি ক্যাচ ও একটি রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করে জিম্বাবুয়ের ফিল্ডাররা। জিম্বাবুয়ের দুই পেসার রিচার্ড এনগারাভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি দুইটি করে উইকেট তুলে নেন।

১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তাসকিন ঝড়ে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। নিজের প্রথম দুই ওভারেই ওপেনার ওয়েসলি মাধভীরে ও ক্রেইগ আরভিনকে সাজঘরে ফেরান তিনি। ১৭ রানে দুই উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের হাল ধরেন আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টির সবচেয়ে অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামস ও তরুণ মিল্টন শুম্বা। তবে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান বোলিংয়ে এসেই মিল্টন শুম্বা ও ধারাবাহিক পারফর্মার সিকান্দার রাজাকে ফিরিয়ে দিলে ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের দিকে হেলে পড়ে। 

তবে একপ্রান্তে উইলিয়ামস ব্যাট হাতে ছিলেন অবিচল। তিনি পঞ্চম উইকেটে উইকেটকিপার ব্যাটার রেগিস চাকভাকে নিয়ে দলকে খাঁদের কিনারা থেকে উদ্ধার করেন। ক্রমশ ভয়ঙ্কর হতে থাকা এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ১২তম ওভারে রেগিস চাকাভাকে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন ডানহাতি এই পেসার। 

বিশ্বকাপে শুরু থেমেই অফফর্মে থাকা শন উইলিয়ামস ষষ্ঠ উইকেটে অলরাউন্ডার রায়ান বার্লকে আবারো জুটি গড়ে ম্যাচে ফেরান জিম্বাবুয়েকে। ১৬তম ওভারে দলীয় শতরান পূর্ণ করা জিম্বাবুয়ের শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৪৬ রানের। 

১৮তম ওভারে নিজের অর্ধশতকে পৌঁছান বাঁহাতি শন উইলিয়ামস। ১৯তম ওভারে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে শীন উইলিয়ামস ৪২ বলে ৬৪ করে ফিরে গেলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন হয় ১৬ রান। উইকেটে তখনো ছিলেন রায়ান বার্ল। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

রিচার্ড এনগারাভা দুই বলে চার ও ছয় মেরে পঞ্চম বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান। শেষ বলে ৫ রানের প্রয়োজন হলে ব্লেসিং মুজারাবানি রান নিতে না পারলে চার রানে জিতে উল্লাস করতে থাকে বাংলাদেশ। তবে উইকেটকিপার নুরুল হাসান স্টাম্পের আগে থেকে বল ধরে ফেললে থার্ড আম্পায়ার নো বলের ঘোষণা দেয়।

শেষ বলে জয়ের জন্য চার রানের প্রয়োজন হয় জিম্বাবুয়ের। তবে শেষ বলে ব্লেসিং মুজারাবানি আবারো মিস করলে তিন রানে জয়লাভ করে টাইগাররা। ২০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে ১৪৭ রানেই থেমে যায়। পেসার তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে এক মেডেনসহ তিন উইকেট তুলেন।

এই জয়ে তিন ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসলো বাংলাদেশ। তিন পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের চতুর্থ অবস্থানে আছে জিম্বাবুয়ে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link