More

Social Media

Light
Dark

বিরতি নেওয়া খারাপ কিছু নয়

একটা কথা আপনাদের বলতে পারি, টেস্টের নেতৃত্ব ছাড়ার পর, কেবল একজন মানুষের কাছ থেকেই ম্যাসেজ পেয়েছি, যার সঙ্গে আগে খেলেছি-তিনি হলেন এমএস ধোনি। অনেকের কাছেই আমার ফোন নম্বর আছে। টিভিতে কত লোকে পরামর্শ দেন আমাকে, কত কথা বলেন! কিন্তু যত জনের কাছে আমার নম্বর আছে, আর কেউ একটা ম্যাসেজ দেননি।

এই যে শ্রদ্ধাবোধ, কারও সঙ্গে এরকম যোগাযোগ, এটা যখন খাঁটি হয়, তখন এভাবেই ফুঁটে ওঠে। কারণ দুই দিকেই যখন নির্ভরতা থাকে। তার আমার কাছে কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই, আমারও নেই তার কাছে। আমারা কেউ পরস্পরকে নিয়ে ইনসিকিউরড নই। আমি স্রেফ এটাই বলতে পারি, যখন কাউকে কিছু বলতে চাই, আমি ব্যক্তিগতভাবেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করি, এমনকি সেটা যদি তাকে সহায়তা করার ব্যাপারও হয়।

গোটা দুনিয়ার সামনে আমার জন্য পরামর্শ মেলে ধরলে, আমার কাছে সেটির কোনো মূল্য নেই। যদি আমার উন্নতির জন্যই হয়, তাহলে আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন যে, ‘সত্যিই তোমার ভালো চাই।’ আমি জীবনটা যাপন করি অনেক সততা নিয়ে, কাজেই সবকিছু এভাবেই দেখি।

ads

আমি বলছি না যে, ওসবকে পাত্তা দেই না। তবে কোনটা সত্যিকার, সেটা বোঝা যায়। এত বছর ধরে যখন খেলছেন, সততার সঙ্গে খেলছেন, তখন কিছু দেওয়ার মালিক তো ওপরওয়ালাই। যতই হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করুন, তার যখন দেওয়ার, তখনই দেবেন। এখানে আর কারও কিছু করার নেই। আমি তো আমার জীবন এভাবেই যাপন করি। যতদিন খেলব, যতদিন খেলার সুযোগ থাকবে, এভাবেই খেলে যাব।

এক মাস ব্যাট ধরব না, আগে এটা আমি ভাবতেও পারতাম না। কিন্তু পরিস্থিতিই এমন হয়ে গিয়েছিল যে বিরতি নিতেই হতো। শারীরিক ব্যাপারের চেয়েও এটা জরুরি ছিল মানসিক কারণে। এক মাস বিরতির পর ব্যাট হাতে নেওয়ার সময় পুরনো সেই অনুভূতি ফিরে আসে, যে ভালোবাসা থেকে খেলাটা শুরু করেছিলাম।

খেলা চালিয়ে যাওয়ার সময় সেটা অনেক সময় মনে থাকে না। লোকে আপনার জন্য গর্জন করছে, এত খ্যাতি, মূল উপলব্ধিটা অনেক সময় হারিয়ে যায়। খেলার জন্য সেই তাড়না, সেই শুদ্ধতা, খেলার নিখাঁদ আনন্দটুকু হারিয়ে যায়। আমার জন্য তা পুনরায় খুঁজে পাওয়া জরুরি ছিল।

আমি জানি যে, ভালো অবস্থায় থাকলে দলের জন্য কতটা কী করতে পারি। খারাপ অবস্থায় থেকে খেলা আমার বা দলের, কারও জন্যই ভালো নয়। আমার মনে হয়, কেউ যদি নেতিবাচক অবস্থায় থাকে বা মানসিকভাবে বাজে অবস্থায় থাকে, এটা থেকে পালিয়ে বেড়ানো উচিত নয়। বরং বিরতি নেওয়া খারাপ কিছু নয়।

আশা করি, ওই খারাপ সময়টা থেকেই লোকে শক্তি খুঁজে নেবে। ভেতরে যেটাই চলুক, সেটাকে মোকাবেলা করবে। আমরা সবাই মানুষ, সবাই এভাবে চিন্তা করতেই পারে। এটাকে স্বীকার করা ও যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এড়িয়ে যেতে চাইলেই হতাশা বাড়বে। আমি এটা উপলব্ধি করেছি ও উপকৃত হয়েছি। এখন আমি খুশি, রোমাঞ্চিত, ক্রিকেট খেলতে আবার মজা পাচ্ছি। আমার জন্য এটাই ছিল জরুরি।”

– বিরাট ‘চ্যাম্পিয়ন’ কোহলি, সংবাদ সম্মেলন থেকে

(ফেসবুক থেকে)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link