More

Social Media

Light
Dark

ভিনিসিয়াস, রিয়ালের সংকট?

কিশোর বয়সেই বড় অংকের ট্রান্সফার ফি দিয়ে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে দলে ভিড়িয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজের শুরুর বাজে দিনগুলো ক্রমশই কাটিয়ে উঠেছেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। গত মৌসুমেই করিম বেনজেমার সাথে গড়ে তুলেছিলেন ভয়ংকর এক জুটি, দলকে জিতিয়েছেন লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। কিন্তু এবারের মৌসুমে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না ভিনিসিয়াসের, ফলে ছন্দপতন ঘটছে মাঠের খেলাতেও। 

লা লিগায় নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। তবে নিজেদের ভাল ফুটবল উপহার দিয়ে নয় বরং বিলবাও এতটাই বাজে খেলেছে যে ম্যাচটা এক প্রকার তুলেই দিয়েছে মাদ্রিদের হাতে। তাছাড়া লা লিগার পয়েন্ট টেবিলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চাইতে পিছিয়ে আছে তিন পয়েন্টে। সব মিলিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই মাদ্রিদের দলটা। 

বিলবাওয়ের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের বেঞ্চের খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখেছেন আনচেলত্তি। মার্কো আসেনসিও, ডাই সেবায়েস, নাচো ফার্নান্দেজ সবাইকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। কিন্তু এদিনও পুরনো সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বর্ষীয়ান এই কোচের জন্য। ঘরের বাইরে খেলতে গেলেই যে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে দুয়ো দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের সমর্থকরা। 

ads

ফলস্বরূপ অ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে খানিকটা নিষ্প্রভই থাকছেন এই তারকা। বিলবাও ম্যাচ ছাড়াও এই মৌসুমে ভ্যালেকাস, ভিয়ারিয়াল, ভালাদোলিদ ম্যাচেও দেখা গেছে একই দৃশ্য। স্টেডিয়ামে ভিনিসিয়াসের নাম উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে দর্শকেরা দুয়ো দিচ্ছেন। সব সময় যে তাঁতে ভিনিসিয়াসকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে সেরকম নয়। ভিয়ারিলারের বিপক্ষে কোপা দেল রে’র কোয়ার্টার ফাইনালের কথাই ধরুন, সেদিন দুয়ো দিয়েও দমিয়ে রাখা যায়নি ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে। মাদ্রিদের তিনটি গোলেই ছিল তাঁর অবদান। 

কিন্তু এর বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে। বিলবাওয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই স্যান ম্যামেস স্টেডিয়ামের ভিনিসিয়াস ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। সমর্থকদের দুয়ো আর গালাগালিতে হতাশ ভিনিসিয়াস বারবার তর্কে জড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সাথে। মাদ্রিদ বস আনচেলত্তিও বুঝতে পারছেন সেটা।

ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘সবাই তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করতে চায়, সমর্থক, প্রতিপক্ষ, রেফারি সবাই। আমি আসলেই জানি না এমনটা কেন হচ্ছে, সে মাঠে নিজের সেরাটা ঢেলে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করছে। কিন্তু এই ব্যাপারগুলো তাঁর খেলায় প্রভাব ফেলছে।’

আনচেলত্তি আরো বলেন, ‘ভিনিসিয়াসের বয়স অনেক কম, এখনো তাঁর উন্নতির জায়গা আছে। সে অনেক আবেগপ্রবণ। আমি তাঁর সাথে কথা বলেছি এবং খেলায় মনোযোগ দিতে বলেছি। সে আরো বেশি সম্মান পাবার যোগ্য।’

অভিজ্ঞ এই কোচ জানেন অতিদ্রুত তাঁকে এই সমস্যার সমাধান বের করতে হবে। অন্যথায়, সামনের দিনগুলোতে রিয়ালের জন্য অপেক্ষা করছে ঘোর অমানিশা। তাই এই কোচ চেষ্টা করে যাচ্ছেন মাঠ এবং মাঠের বাইরে নিজের খেলোয়াড়কে রক্ষা করে যাওয়ার। ভিনিসিয়াসের খেলার ছন্দপতন খানিকটা ভাবনায় ফেলেছে তাঁকেও।

এই মৌসুমে ১১ গোল করলেও গত তিনমাস যাবত লা লিগায় গোল পাননি ভিনিসিয়াস। রেফারি, সমর্থক কিংবা প্রতিপক্ষের কথা না ভেবে ভিনিসিয়াস যেন কেবল নিজের খেলাতেই ফোকাস রাখেন এমনটাই চাওয়া তাঁর। ভিনিসিয়াস সবকিছু সামলে যতদ্রুত গত মৌসুমের ফর্মে ফিরবেন, মাদ্রিদের জন্য তত মঙ্গল। 

প্রতিপক্ষের মাঠে দুয়ো শুনলেও ঘরের মাঠে সমর্থকরা অবশ্য আগলেই রাখেন ভিনিসিয়াসকে। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এই তারকা শুভাকাঙ্ক্ষীর অভাব নেই। কিন্ত রিয়ালের পরবর্তী ম্যাচ রিয়াল মায়োর্কার মাঠ এস্তাদিও সন ময়েক্সে। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, এই সান ময়েক্সেই গত সেপ্টেম্বরে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা পুরো ম্যাচ জুড়ে দুয়ো দিয়ে গেছেন ভিনিসিয়াসকে। এই ব্রাজিলিয়ানের জন্য সামনে তাই অপেক্ষা করছে কঠিন নব্বই মিনিট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link