More

Social Media

Light
Dark

চোখটাই প্রায় হারাতে বসেছিলেন চাঁদ

শুরুটা সাফল্যের আতিশয্যে ডুব দিয়ে। অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ১১১ রানের ক্যাপ্টেনস নক খেলে ভারতকে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসালেন উন্মুক্ত চাঁদ। আর এতেই বয়স উনিশ না পেরোতেই বিশ্ব ক্রিকেটের লাইমলাইটে চলে আসলো ছেলেটা। মুহূর্তের মাঝেই পরিচিতি, যশ, খ্যাতিতে ছেলেটাকে নিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ তখন গগণচুম্বী।  

কিন্তু পরবর্তীতে ভারতের ক্রিকেট আকাশে উন্মুক্ত চাঁদের আর ‘চাঁদ’ হয়ে ওঠা হয়নি। অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপের পর আইপিএলে সুযোগ পেলেও সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ব্যর্থ হন তিনি। মাত্র ২৯ বছর বয়সে অবসর নিয়ে নেন উন্মুক্ত। ভারতের ক্রিকেট কক্ষপথ থেকে দূরে সরে গিয়ে আমেরিকায় গিয়ে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন তিনি। ভারতের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ।  

মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে এই বছর খেলেছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মাইনর লিগ খেলার সময় এবার ভয়ংকর এক মুহূর্তের সম্মুখীন হয়েছেন উন্মুক্ত চাঁদ। সিলিকন ভ্যালির হয়ে খেলার সময় চোখে মারত্মক চোট পেয়েছেন তিনি। বল যেভাবে চোখে লেগেছে তাতে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারতো তাঁর। তবে এ যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন উন্মুক্ত। চোখের উপর পাশ ফুলে গিয়েছে। তবে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।  

ads

শনিবার উন্মুক্ত একটি ছবি টুইট করেন। সেখানে তাঁর একটি চোখ ফুলে রয়েছে। উন্মুক্ত টুইটে লিখেছেন, ‘এক জন ক্রীড়াবিদের জীবন সহজ নয়। কোনও দিন জিতবে, কোনও দিন হারবে। কোনও দিন চোট লাগবে। ঈশ্বরের কৃপায় খুব বড় কিছু হয়নি। যারা আমাকে শুভকামনা জানিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ।’

অথচ উন্মুক্ত চাঁদের করা আগের করা রিটুইটেই ছিল তাঁর ক্রিকেটীয় সাফল্যের গল্প। এবারের মাইনর লিগ ক্রিকেটে ৬৯৩ রান করে উঠে এসেছিলেন সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটারদের শীর্ষে। তখন এমএলসি টুইট করেছিল, ‘নতুন বছর, তবে একই টপ রান স্কোরার। ৬৯৩ রান করে এখন সর্বোচ্চ রান স্কোরার সিলিকন ভ্যালির উন্মুক্ত চাঁঁদ।’ 

ক্যারিয়ারে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের চেয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেই সফল ছিলেন উন্মুক্ত চাঁদ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যেখানে ৩১.৭৯ গড়ে ৩৩৭৯ রান করেছেন সেখানে লিস্ট এ ক্রিকেটে ৪১.৩৩ গড়ে করেছেন ৪৫০৫ রান। সব মিলিয়ে শতক হাঁকিয়েছেন ১৮ টি। এর মধ্যে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে করেছেন ৩ সেঞ্চুরি। তবে সে ফর্মটা টেনে আনতে পারেননি আইপিএলে। আইপিএলে ২১ ম্যাচ খেললেও এক ফিফটি ছাড়া বলার মতো তেমন ইনিংসও খেলতে পারেননি।  তাই নিজেকে জাতীয় দলের বিবেচনায় কখনোই তিনি আনতে পারেননি। এ জন্য মাত্র ২৯ বছরেই ভারতের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি।

ভাল সুযোগের উদ্দেশ্যে ভারত থেকে নিজেকে কক্ষচ্যুত করে অবশ্য উন্মুক্ত চাঁদের লাভই হয়েছে। খেলতে পারছেন বিভিন্ন দেশের ফ্রাঞ্চাইজি লিগ। ভারতে থাকলে যে সুযোগ তিনি কখনোই পেতেন না। এ ছাড়া ক্রিকেট নিয়ে আমেরিকা ঢেলে সাজানোয় প্রচুর লিগ হচ্ছে সেখানে। উন্মুক্ত চাঁদও ব্যস্ত থাকছেন সেসব ক্রিকেট খেলে।  নিকট ভবিষ্যতে হয়তো তাঁকে আমেরিকার হয়ে ক্রিকেট খেলতে দেখা যেতে পারে। ভারতের ‘চাঁদ’ হয়ে ধরা দেননি। এখন সে সব নিরাশার গল্পকে ছুটিতে পাঠিয়ে উন্মুক্ত চাঁদ আমেরিকার আকাশের চাঁদ হতে পারেন কিনা – সেটাই দেখার বিষয়।             

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link