More

Social Media

Light
Dark

বারংবার হৃদয়ে হৃদয়ভঙ্গ

পুনের উইকেট বড্ড রানপ্রসবা। পরিসংখ্যান অন্তত সেটিই জানান দিচ্ছে। এই মাঠে প্রথমে ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ৩০৭। বোলারদের গড় ইকোনমি রেটও ৬ এর নিচে নয়। সেখানে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছে সর্বসাকুল্যে ২৫৬ রান। 

অথচ বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা কিন্তু ভালই হয়েছিল। দুই ওপোনারই ফিফটি পেয়েছেন। যদিও কেউই এরপরে ইনিংস বড় করতে পারেননি। তারপরও তানজিদ-লিটনের ৯৩ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে চোখ রেখেছিল বাংলাদেশ।

তবে মিডল অর্ডারে ছন্দ পতনের কারণেই শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহে পৌঁছাতে পারেনি টাইগাররা। মিডল ওভারগুলোতে ব্যাটারদের মন্থর ব্যাটিং বরং আরো চাপ বাড়িয়েছে পরের ব্যাটারদের।

ads

অবশ্য এখন পর্যন্ত বাংলাদোশের বিশ্বকাপ অভিযানে সবচেয়ে ভুগিয়েছে মিডল অর্ডার ব্যর্থতাই। বিশ্বকাপের আগে দারুণ ছন্দে থাকা তাওহিদ হৃদয়ের ফর্ম চ্যূতি হয়েছে বৈশ্বিক আসরেই। দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠতে পারছেন না এ ব্যাটার।

ভারতের বিপক্ষেও নড়বড়ে একটি ইনিংস খেলেছেন হৃদয়। ৩৫ বলে নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন ১৬  রানে। তাতে ছিল না কোনো চার বা ছক্কার মার। আর বাউন্ডারি বের না করতে পারার সেই চাপেই পরাস্ত হন তিনি।

শার্দুল ঠাকুরের শর্ট লেংথের বলে খেলা শটে কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না তাওহীদ হৃদয়ের। অবশ্য ব্যাট হাটে এ দিন নিজেও ততটা সাবলীল ছিলেন হৃদয়। মুশফিককে সঙ্গ দিয়েছিলেন যদিও। উইকেটে থেকে মুশফিকের সঙ্গে ঐ একটা জুটি কিছুটা হলেও মাঝের ওভার গুলোতে ধরে রেখেছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং।

তবে শেষ পর্যন্ত তা পূর্ণতা পায়নি। তাওহিদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন শটে মিডল ওভারেই খেই হায়িয়ে ফেলে বাংলাদেশ। অথচ ২০২২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত, এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১০ দলের মধ্যে ভারতের পর মিডল অর্ডারে সবচেয়ে বোশি রান তুলেছ বাংলাদশ।

কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে যে তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে বাংলাদের মিডল অর্ডার আশার পাল তুলেছিল, তা এখন পর্যন্ত হতাশার প্রতিচ্ছবি হয়েই ধরা দিয়েছে বারবার।

বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার সময় তাওহিদ হৃদয়ের রিপ্লেসমেন্টও নেয়নি বাংলাদেশ। অর্থাৎ এক প্রকার অটোমেটিক চয়েস হিসেবেই বিশ্বকাপ দলে ঢুকেছিলেন হৃদয়। তবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছেন এ ব্যাটার।

প্রথমত, রান করতে পারছে না। প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের রণকৌশলের কাছে হার মানছেন। নিজের স্কোরিং জোনে বল না পেলেই পরাস্ত হচ্ছেন। আর এতো সীমাবদ্ধতায় কোনো দিন উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারছেন না ঠিকঠাক ভাবে।

তাওহিদ হৃদয়ের এমন ক্রমাগত ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুক্তভোগী হচ্ছে বাংলাদেশও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার পর এখন পর্যন্ত ব্যাটিং নিয়ে তেমন আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি ব্যাটাররা।সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর আগেও যে মিডল অর্ডার নিয়ে বাংলাদেশ অসীম প্রত্যাশায় চোখ রেখেছিল, সেটাই যেন এখন হয়ে উঠছে চক্ষুশূল।

তাওহিদ হৃদয় এবারের আসরে আর কয়টা ম্যাচ সুযোগ পাবেন, তা এখন অনিশ্চিতয়তার বেড়াজালেই লুকিয়ে থাকছে। তবে, এটা বলা যেতেই পারে, বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে রাঙানোর বড় একটা সুযোগ হাতছাড়া করলেন হৃদয়।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link