More

Social Media

Light
Dark

ঐ ‘ভিনদেশি’ নূতনের কেতন ওড়ে

আইপিএলের প্রতি মৌসুমের পরই দেখা যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিছু নতুন তারকা আসে, যাদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র ভারতীয় নয়, বিদেশি বিভিন্ন তারকারও উত্থানের মঞ্চ ছিলো আইপিএল। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরেই বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারদেরকে দলে ভিড়িয়েছে আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিগুলো।

শুধুমাত্র ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটাররা নয়, আইপিএলের নিলামে দল পেয়েছেন কিছু বিদেশি প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার যারা কিনা এইবারের আইপিএলে করতে পারেন দুর্দান্ত কিছু পারফর্ম।

ভারতের ক্রিকেটে হার্দিক পান্ডিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহদের মত ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দূর্দান্ত পারফর্ম করেছেন কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বলার মত কোনো অভিজ্ঞতা নাই। তারপরও তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন শুধু মাত্র আইপিএলে ভালো করার মাধ্যমে।

ads

আইপিএলে ভালো পারফর্ম করার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিশ্চিতভাবে ভালো করবে সেটা ভাবার কোনো কারণ নাই। আইপিএলের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট তাদেরকে ভালো করা আত্মবিশ্বাস দেয়। আর এই আত্মবিশ্বাসের জোরেই তারা জাতীয় দলে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন।

  • ডেভিড মালান (ইংল্যান্ড)

ডেভিড মালানকে এবার দলে ভিডিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিলো টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে। কিন্তু ইংল্যান্ড দলের ম্যানেজমেন্টের সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। এর ফলে ইংল্যান্ড টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। বাদ পড়ে নিজেকে নতুন ভাবে গরে তোলেন ডেভিড মালান। ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোটো সংস্করণে নিজেকে প্রমাণ করেন ডেভিড মালান।

বর্তমানে টি-টোয়েন্টি রাংকিং এর সেরা ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান। টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান রাংকিং এ সর্বোচ্চ রেটিং প্রাপ্ত ব্যাটসম্যানও তিনি। মালান শুধু ওপেনিং এ নয়, চার এবং পাঁচ নম্বর পজিশনেও ব্যাট করতে পারেন। তিনি হয়তো ক্রিস গেইলের মত বড় বড় ছক্কা মেরে ইনিংস তৈরি করতে পারেন না, তবে দুর্দান্ত কিছু পারফর্ম করে দলকে এগিয়ে নিতে পারেন।

  • ঝাই রিচার্ডসন (অস্ট্রেলিয়া)

২০১৯ বিশ্বকাপে দলে সুযোগ না পাওয়ার পর বিশ্বকাপের পর কিছু সময়ের জন্য জাতীয় দলে ফিরেছিলেন ঝাই রিচার্ডসন। করোনা মহামারির কারণে জাতীয় দলের খেলা বন্ধ হবার আগে জাতীয় দলে প্রায় নিয়মিত মুখ ছিলেন ঝাই রিচার্ডসন। দলে আসার পর বলার মত খুব ভালো পারফর্মেন্স ছিলো না তাঁর। কিন্তু করোনা মহামারির দূর্দান্ত পারফর্ম করা শুরু করেন ঝাই রিচার্ডসন। করোনা পরবর্তী সময়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৭.৬৯ ইকোনমি রেটে ২৯ উইকেট শিকার করেছেন।

ঝাই রিচারডসনের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ২০১৫ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। কিন্তু ফিটনেস সমস্যা এবং ইনজুরির কারণে নিয়মিত হতে পারেননি। ফিটনেস নিয়ে কাজ করে এখন নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন বিভিন্ন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট। শুধু ফিটনস নয়, স্কিল নিয়েও বেশ কাজ করেছেন ঝাই রিচার্ডসন। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ম্যাচের যেকোনো পর্যায়ে বোলিং করার দক্ষতা তাঁকে করে তুলেছে টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে।

  • কাইল জেমিসন (নিউজিল্যান্ড)

কাইল জেমিসন ক্রিকেটে প্রথম নজর কাড়েন ২০২০ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে। এই সিরিজে দূর্দান্ত বোলিং করেন কাইল জেমিসন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর পরিসংখ্যান যতটা সমৃদ্ধ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তা পরিসংখ্যান ঠিক উল্টো। আইপিএল নিলাম তাঁর দাম একটু বেশিই হয়ে গেছে।

কিন্তু যারা তাঁর খেলা দেখেছেন তারা নিশ্চিত ভাবেই বলবেন তাঁকে নিয়ে আগ্রহ থাকা টা স্বাভাবিক। কারণ তাঁর মধ্যে পারফর্ম করার সেই যোগ্যতা আছে। কাইল জেমিসন শুধু বোলিং নয় নিচের দিকে বেশ ভালো ব্যাটিংও করতে পারেন। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে দুর্দান্ত কিছু করবেন সেটা দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট বিশ্ব।

  • ফ্যাবিয়ান অ্যালেন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি ভালো পারফর্ম করতে পারেননি তিনি। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগে দুর্দান্ত পারফর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। ব্যাটিং অর্ডারে সাত নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করার জন্য এই মুহুর্তে সেরা ব্যাটসম্যান ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। এছাড়াও বল হাতে বেশ ভালো স্পিন করতে পারেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন।

তাঁর ব্যাটিং এর বিশেষত্ব হলো তিনি বেশ দ্রুত রান করতে পারেন এবং কিছু ক্যামিও ইনিংস খেলতে পারেন। ব্যাটিং অর্ডারে একটু উপরের দিকে খেলালে নিয়মিত পারফর্ম করতে পারেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। সাম্প্রতিক সময়ে বল হাতেও বেশ ভালো ফর্মে আছে তিনি। পাঞ্জাব কিংসে প্রতিষ্ঠিত স্পিনার অভাব কিছুটা হলেও ঘোচাতে পারবেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন।

  • রাইলি মেরেডিথ (অস্ট্রেলিয়া)

এই পেসারকে ৮ কোটি রুপি দিয়ে জাতীয় দলে ভিড়িয়েছে পাঞ্জাব কিংস। রাইলি মেরেডিথ মূলত নজর কেড়েছেন এইবারের বিগব্যাশে দূর্দান্ত পারফর্ম করে। এই বারের বিগব্যাশে ২৪.৬২ গড়ে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। মেরেডিথ তাঁর পেস বোলিং এর মাধ্যমে ব্যাটসম্যানদের বেশ ভোগান্তিতে ফেলতে পারেন।

একজন উইকেট শিকারী বোলার হিসেবে তাঁর ইকোনমি রেট একটু বেশি। মেরেডিথের জন্য চালেঞ্জিং বিষয় হবে ভারতীয় কন্ডিশনে নিজেকে মানিয়ে নেয়া। এছাড়াও তাকে ভারতীয় কন্ডিশনের স্পিনিং উইকেটে বোলিং করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারবেন এই উইকেটে তত দ্রুতই উপমহাদেশের কন্ডিশনে ভালো করতে পারেবেন রাইলি মেরেডিথ।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link