More

Social Media

Light
Dark

চৌকস অলরাউন্ডারের ভারতীয় খনি

ভারতের ক্রিকেট কিংবা তাঁদের সমর্থকরা নিজেদের বেশ ভাগ্যবান হিসেবে বিবচেনা করতেই পারে। কেননা যুগে যুগে ভারতীয় ক্রিকেটকে আলোকিত করে গিয়েছেন এক একজন রথী-মহারথীরা। ভারতের ক্রিকেট যেন তারকাদের মিলনমেলা। সময়ে সময়ে নিয়ম মেনে ক্রিকেটের আকাশ আলোকিত করেছেন সে সব তারকারা।

ক্রিকেটের আকাশ আলোকিত করেছেন, সেই সাথে ভারতের ক্রিকেটকে বর্ণিল করেছেন তাঁরা। অলরাউন্ডাররা যেন সেদিক থেকে খানিকটা এগিয়ে। তাঁরা ব্যাটে-বলে মাতিয়ে রেখেছেন দর্শকদের। সেই সাথে দলের জয়ের ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন বাকি সবার থেকে একটু বেশি। ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ডারদের নিয়েই আলাপ হবে আজকের আয়োজনে।

  • কপিল দেব  

কোন প্রকার সন্দেহ ছাড়াই এক বাক্যে হয়ত অনেকেই বলে দেবেন যে কপিল দেবই হচ্ছেন ভারতের ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ডার। বিতর্ক হওয়ার সুযোগটাও খানিক কম। কেননা তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের বিশ্বের সেরা সব অলরাউন্ডারদের একজন। তাছাড়া তাঁর ব্যাটে-বলের পারফরমেন্স ও সঠিক দিক নির্দেশনায় প্রমথবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিল ভারত।

ads

ওয়ানডেতে তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে উইকেট শিকার করেছেন ২৫৩টি। এই সময়ে তাঁর ইকোনমি রেট ছিল ৩.৭১ আর গড় প্রায় ২৭.৪৫। দূর্দান্ত বোলিংয়ের পাশপাশি ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে রানও তুলেছিলেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে ১৭৫ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তাছাড়া পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই ওয়ানডেতে তিনি রান করে গিয়েছেন ২৩.৭৯ গড়ে। তাঁর মোট সংগ্রহ ৩৭৮৩ রান।

  • রবীন্দ্র জাদেজা

এই সময়ে ভারত দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার ও দলের অন্যতম স্তম্ভ রবীন্দ্র জাদেজা। বাঁ-হাতে অসাধারণ ব্যাটিং, বোলিং যেমন করেন ঠিক তাঁর থেকেও দুরন্ত, চনমনে ফিল্ডার হিসেবে তাঁর এক সুনাম রয়েছে। ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ বলতে যা বোঝায় আরকি। ক্রিকেটে ওই সবুজ মাঠটায় যে ব্যাট ও বল ছাড়াও দলের জয়ে অবদান রাখা যায় তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন জাদেজা।

তবে ক্যারিয়ারে শুরুর দিকে তিনি খানিকটা নড়বড়ে ছিলেন। থিতু হতে সময় লেগেছে তাঁর। সময় নিয়েছেন তবে হাল ছেড়ে দেননি। নিজের ক্রিকেট সত্ত্বার উন্নতির জন্য কাজ করে গিয়েছেন ক্রমাগত। ক্রিকেট ময়দানে যা কিছু প্রয়োজন তাঁর সবটাই যেন রপ্ত করে ফেলেছেন তিনি। পারফরমেন্স বিচারে ভারতের অলরাউন্ডারদের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তিনি।

  • ইরফান পাঠান 

দুই ভাই ইরফান পাঠান ও ইউসুফ পাঠান একটা লম্বা সময় ধরে ভারত জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান ছিলেন একজন কার্যকর অলরাউন্ডার। উপমহাদেশের বাইরে তাঁর পেস বোলিং অপশনটা ভারতকে স্বস্তি জোগাতো। তিনি নিরাশও করতেন না খুব একটা। সুযোগ পেলেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখে দলের জয়কে সহজ করার প্রচেষ্টা করে গিয়েছেন।

তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে ১২০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি ক্যারিয়ারের শেষ অবধি পারফর্ম করে যাওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন। ফলশ্রুতিতে তিনি ১৭৩ টি উইকেট শিকার করতে পেরেছেন। ইকোনমি রেট ছিল ৫.২৬ আর গড় ছিল ২৯.৭২। অন্যদিকে ব্যাট হাতে ২৩.৩৯ গড়ে তিনি রান করে দলের তরী জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। যার সুবাদে তাঁর নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ১৫৪৪ রান।

  • মনোজ প্রভাকর

১৯৮৩ বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে নতুন মুখ হয়ে হাজির হয়েছিলেন মনোজ প্রভাকর। ডান-হাতি মিডিয়াম পেস বোলিং অলরাউন্ডার সময়ের সাথে নিজেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্যে পরিণত করে ফেলেন। দলও তাঁর উপর বেশ আস্থা রাখার সুযোগ পায়। তিনি ক্যারিয়ার জুড়েই চারের আশেপাশের ইকোনমি রেটে উইকেট শিকার করেছেন ১৫৭টি। এ সময়ে তাঁর গড় ছিল ২৮.৭। 

অন্যদিকে ব্যাট হাতেও তিনি যথেষ্ট কার্যকর একজন ব্যাটার ছিলেন। রান করেছেন ২৪.১২ গড়ে। অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি ভারতের ম্যাচে প্রভাব বিস্তারে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। তিনি প্রায় ১৮৫৮ রান করেছেন ভারতের জার্সি গায়ে সাদা বলের ক্রিকেটে।

  • মহিন্দর অমরনাথ 

আরও একজন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার। ভারতের ক্রিকেটের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রদের একজন মহিন্দর অমরনাথ। ভারতের ক্রিকেটের একেবারে শুরুর দিকের তারকা ছিলেন মহিন্দর অমরনাথ। তিনি তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটিং অলরাউন্ডার ছিলেন। প্রায় ৩০ এর একটু বেশি গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে রান এসেছে নিয়মিত।

৮৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা অমরনাথের রান মোট ১৯২৪। অন্যদিকে খুব নিয়মিত তাঁকে বল করতে দেখা না গেলেও প্রায় ৬৪টি ইনিংসে তিনি বল করে উইকেট নিয়েছেন ৪৬টি। ৪২.৮৪ গড়টা খানিক বেমানান হলেও ইকোনমি রেট ছিল চারের ঘরে।

  • রবি শাস্ত্রী

ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন রবি শাস্ত্রী। ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেলে থাকলেও তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর একজন কার্যকর অলরাউন্ডার। ব্যাট-বল দুই ক্ষেত্রেই তিনি সমানতালে পারফর্ম করে যেতে পারতেন। তিনি সে কাজটা করেও গিয়েছেন একটা লম্বা সময় ধরে।

তবে ব্যাট হাতে তিনি পারফর্ম করতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। তাঁর স্বপক্ষে যুক্তি হিসবে দাঁড় করানো যায় ৩১০৮ রানে একটা পরিসংখান। যেখানটায় গোটা গোটা অক্ষরে রবি শাস্ত্রীর নামটিও লেখা রয়েছে। ২৯.০৪ গড়ে তিনি রান করেছেন পাশাপাশি ৩৬.০৪ গড়ে তিনি উইকেটও শিকার করেছেন ১২৯টি।

  • রবিন সিং 

ভারতের অলরাউন্ডারদের ফিরিস্তি করতে গেলে একটা লম্বা সময়ের প্রয়োজন। তবে আজকের আয়োজন শেষ হচ্ছে রবিন সিং-কে দিয়ে। রবিন সিং ভারতের হয়ে ১৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন। এ সময়ের ভেতরে তিনি ২৫.৯৫ গড়ে রান তুলেছেন, অন্যদিকে ৪৩.২৬ গড়ে উইকেট শিকার করেছেন।

রবিন সিং তাঁর ক্যারিয়ারে মোট রান করেছেন ২৩৪৬টি। তাছাড়া ৪.৭৯ ইকোনমি রেটে তিনি উইকেট নিয়েছেন সময় সুযোগ বুঝে। তাইতো তাঁর নামের পাশে রয়েছে ৬৯ রানের একটি ট্যালি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link