More

Social Media

Light
Dark

আত্মবিশ্বাসের তলানিতে সাঁতার কাটি

ক্রিকেট দুনিয়ায় মাঝেমধ্যেই বিরতির সুর বেজে ওঠে। মূলত ইনজুরি কিংবা অসুস্থতা এর পেছনের ভিলেন। সাময়িক বাঁ দীর্ঘ বিরতি শেষে ক্রিকেটারদের প্রত্যাবর্তনের গল্প অহরহ আছে। যদিও প্রত্যাবর্তনের পর আগের সেই ফর্ম ধরে রাখা যায় কিনা এখানে একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়ে যায়। ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য কে এল রাহুলের অবস্থাটাও অনেকটা ওরকম। রাহুলের বেলায় ভিলেনের নাম ছিলো ইনজুরি। স্পোর্টস হার্নিয়া এর নাম।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি- টোয়েন্টি সিরিজের জন্য এই বছরের জুন মাসে দলের নেতৃত্বভার পেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে ডান কুঁচকিতে ইনজুরির জন্য দলের বাইরে ছিটকে যান। তাঁর বদলে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বর্তায় ঋষভ পান্তের কাঁধে। চিকিৎসা নিতে যেতে হয়েছিলো জার্মানিতে। শল্য চিকিৎসকের ছুরির নিচেও সঁপতে হয়েছিল নিজেকে। তারপর রিহ্যাভ শেষে প্রায় তিনমাস বিরতির পর ফিরে এসেছেন লোকেশ রাহুল। ফিরে এসে জিম্বাবুয়ে সিরিজের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

যদিও ব্যক্তিগত পারফরমেন্স এর টানপোড়েনটা তাঁকে ভোগাচ্ছে বেশ। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। দীর্ঘ বিরতির পর ফিরে এসে আন্তর্জাতিক বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত হওয়া বেশ বড়সড়ো একটা চ্যালেঞ্জই বটে। ওপেনিংয়ে নেমে মাত্র পাঁচ ডেলিভারি খেলে এক রান করে সাজঘরে ফিরে যাওয়া বেশ একটা ভালো সূচনা নয়। তৃতীয় ওয়ানডেতে লোকেশ রাহুল শিখর ধাওয়ানের সাথে আবার ওপেন করতে নেমেছিলেন। এবার তিনি ত্রিশটি রান করলেন। নড়বড়ে ৪৬ টি ডেলিভারি থেকে ৩০ রানের ইনিংশটি এবারো খুব একটা ‘রাহুলসুলভ’ হলো না।

ads

ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতে প্রত্যাবর্তনের পর লোকেশ রাহুলের সবথেকে বড় বাঁধাটির নাম হচ্ছে ‘আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি’। এশিয়া কাপের মঞ্চেও এই সংকটটি স্পষ্ট। এইতো এশিয়া কাপ যাত্রার প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরেই সাজঘরে ফিরে গেলেন। তাও কিনা সদ্য অভিষিক্ত নাসিম শাহ এর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলেই কে এল রাহুলের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার বধ হলেন!

তারপরের ম্যাচটি ছিল হংকং এর বিরুদ্ধে। ভারতীয় বাঘা বাঘা ব্যাটারদের সামনে হংকং এর বোলাররা নিতান্ত শিশু এ তো সহজেই বোধগম্য। এই সহজ প্রতিপক্ষের সাথে ৩৯ বলে ৩৬ করেছেন লোকেশ রাহুল। এর মধ্যে ডট বলই ছিলো ১৬ টি। ৯২.৩০ স্ট্রাইক রেটটি টি- টোয়েন্টির বিবেচনায় বড্ড বেমানান। লোকেশ রাহুল সময় ব্যয় করে খেলছিলেন, বেশ দেখেশুনে খেলা যাকে বলে ওরকম। যাতে স্পষ্ট ছিলো তাঁর আত্মবিশ্বাসের দারুণ ঘাটতি ছিল। টিটোয়েন্টি মান অনুযায়ী ধীরগতির এই ইনিংসটি অন্যান্য বযাটারদের কিছুটা চাপে ফেলেছিলো।

অথচ এই লোকেশ রাহুলের ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট জুড়েই সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ড রয়েছে। কেবল টি- টোয়েন্টি ফরম্যাটেই তিনি দুইটি সেঞ্চুরির ও ১৬ টি হাফসেঞ্চুরির মালিক। খেলেছেন মোট ৫৮ টি ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে ১৬৪ টি চার ও ৭৫ টি ছক্কা পেটানোর রেকর্ড রয়েছে তাঁর। অতীতে ওয়ানডে ও টেস্টেও খেলেছেন দুর্দান্ত জৌলুস নিয়ে।

এই মুহুর্তে সেই রাহুলকে তার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে হলে দ্রুত হারে স্কোর করতে হবে এবং চাপে আটকা পড়লে হবে না। মনে রাখতে হবে তিনি একজন শক্তিশালী ব্যাটার ছিলেন এবং সেই প্রতিভাটা তাঁর মধ্যে এখনো সুপ্ত। সেই সুপ্ত প্রতিভাকে আরেকবার বের করে আনতে হবে। বর্তমান ভারতীয় দলে বাঘা বাঘা ব্যাটারের অভাব নেই, সেইখানে ওপেনারসুলভ খেলতে না পারলে লোকেশ রাহুলের দলে জায়গাটা ধরে রাখাই যে কঠিন হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link