More

Social Media

Light
Dark

তিলক ভার্মা, ভারতের নতুন ‘মধ্যমণি’

হায়দ্রাবাদের কাছে তিনি ‘ঘরের ছেলে’। কিন্তু সেই ঘরের ছেলে তিলক ভার্মা শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন জন্মশহরের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে। রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের চেনা মাঠে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে খেলতে নামা তিলক ভার্মা মোটেই হতাশ করেননি। বরং ৬ নম্বরে নেমে তাঁর খেলা ১৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংসেই ১৯২ রানের সংগ্রহ পায় মুম্বাই।

শুধু এ ম্যাচেই নয়, তিলক ভার্মা ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন এবারের আইপিএলের শুরু থেকেই। এখন পর্যন্ত খেলা পাঁচ ম্যাচে ৫৩ গড়ে তাঁর সংগ্রহ ২১৪ রান। সাথে রয়েছে একটি হাফসেঞ্চুরিও। এ ছাড়া তাঁর ব্যাটিং স্ট্রাইকরেটও বেশ ঈর্ষণীয়, ১৫৮.৫১।

মুম্বাইয়ের হয়ে মিডল অর্ডারে ব্যাট করা এ ব্যাটার খেলতে পারেন প্রায় সব পজিশনেই। তবে এ ব্যাটারের সবচেয়ে বড় গুণ হল, তিনি সময়োপযোগী ব্যাট করতে পারেন। দলের বিপদে যেমন উইকেটে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন, ঠিক তেমনি বোলারদের উপর ব্যাটিং তাণ্ডবও চালাতে পারেন।

ads

মিডল অর্ডারে এ ব্যাটার কতটা সফল তার প্রমাণ মিলে মিডল ওভারে তাঁর ব্যাটিংয়ের কার্যকারিতাই। আইপিএলের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ থেকে এখন পর্যন্ত ইনিংসের ৭ থেকে ১৬ ওভারের মাঝে অর্থাৎ মিডল ওভারগুলোতে সবচেয়ে বেশি রান এসেছে তিলক ভার্মার ব্যাট থেকে। এই সময়ের ব্যাটিংয়ে তিনি মোট ৪৭০ রান করেছেন।

তিলক ভার্মার পরে মিডল ওভারে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন জশ বাটলার, ৪৪৫ রান। এ তালিকায় রয়েছেন সাঞ্জু স্যামসনও। রাজস্থান রয়্যালসের এ অধিনায়ক ৭ থেকে ১৬ ওভারের মাঝে সবমিলিয়ে রান করেছেন ৪১২ রান। আর মিডল ওভারে রান তোলার দৌড়ে চারে আছেন হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি করেছেন ৩৭৫ রান।

মিডল অর্ডারে তিলক ভার্মার এমন ব্যাটিং নজরে এসেছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের সাবেক কোচ টম মুডির।যিনি হায়দ্রাবাদের ডাগআউট প্রধান কোচ হিসেবে নয়টি মৌসুম কাটিয়েছেন। তাঁর দৃষ্টিতে, ‘ভারতের মিডল অর্ডারে নতুন ভবিষ্যৎ হচ্ছেন তিলক ভার্মা।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর ব্যাটিং দেখতে আমি খুব পছন্দ করি। ও এক কথায় দুর্দান্ত। একটা ইনিংস খেলার জন্য যেমন পরিণৎ ভূমিকা পালন করতে হয় তার সব রসদই তিলক ভার্মার মাঝে আছে। সে শুরু মুম্বাইয়ের হয়ে নয়, একদিন ভারতের হয়ে খেলবে বলেই মনে করি।’

তিলক ভার্মাকে নিয়ে তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘‘তিলকের ব্যাটিংয়ে সলিড টেকনিক আছে। সে পেস এবং স্পিন-দুটো বলই দারুণ খেলে। আর এটাই ওকে এগিয়ে দিয়েছে। দলের প্রয়োজনে যেকোনো ভঙ্গিমায় খেলতে পারেন। আরেকতা ব্যাপার হল, অনেকেই ফ্রন্ট ফুট, ব্যাকফুটে ভাল খেলতে পারে না। কিন্তু ওর ব্যাটিংয়ে কোনো প্রি-ডিটারমাইন্ড এপ্রোচ থাকে না। এ কারণে ওর মাঝে বলের লাইন ও লেন্থ বুঝে খেলার দক্ষতা আছে।’

টম মুডি আরো বলেন, ‘দেখুন। তাঁকে আমি চিনিনা। তাঁর সাথে একতা সেশনও আমি কাটাই নি। কিন্তু সে যেভাবে চাপের মুহূর্তে ব্যাট করেছে তা আমি দেখেছি। আর তাতে তাঁকে আমার কাছে সম্ভাবনাময় বলেই মনে হয়েছে। সে যেভাবে খেলছে, সেভাবে খেলা বেশিরভাগ তরুণ ক্রিকেটার পক্ষেই খেলা অসম্ভব। আমি ওর ব্যাপারে আশাবাদী। আশা করছি, সে খুব শীঘ্রই জাতীয় দলের রাডারে চলে আসবে।’

তিলক ভার্মার ব্যাটিংয়ের প্রশংসা শুধু টম মুডিই করেননি, তাঁকে নিয়ে প্রশংসা ঝরেছে ভারত ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক রোহিত শর্মার কণ্ঠেও। হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষের পর রোহিত এটি নিয়ে বলেন, ‘আমরা তাঁকে গত মৌসুম থেকেই দেখছি। ও আগে যেমন ছিল , তার চেয়েও পরিণত হয়ে এবার খেলতে এসেছে। ওর ব্যাটিংয়ের সময় আমার সবচাইতে বেশি পছন্দ হয়, ওর এপ্রোচ। ওর যা বয়স, তার চেয়েও পরিণত ব্যাটিং করে সে। আশা করছি তিলক ভার্মা ভবিষ্যতে নিজেকে অনেকদূর নিয়ে যাবে।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link