More

Social Media

Light
Dark

অ্যাশেজ খেলা এক রেড ডেভিল

খেলোয়াড় শব্দটা বললে আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন ক্রিকেট নাকি ফুটবল? নাকি ভলিবল নাকি অন্য কোনো খেলা? কিন্তু আর্নি সাইডবটমের ক্ষেত্রে সেটা উল্টো! তিনি তার জীবনে পেশাদার ক্রিকেটারের পাশাপাশি ছিলেন একজন পেশাদার ফুটবলার। ক্রিকেটার হিসেবে অ্যাশেজ খেলেছেন, আবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও।

অলরাউন্ডার বলতে আমরা বুঝি যিনি বল-ব্যাট দুটোতেই সমান পারদর্শী। আর্নি সাইডবটম ছিলেন স্পোর্টসের অলরাউন্ডার, যিনি ক্রিকেট-ফুটবল দুই খেলাতেই পারদর্শী ছিলেন। তবে ক্যারিয়ারে অর্জনের খাতাটা খালি বরং পারদর্শীতা দেখাতে গিয়ে নাম লিখিয়েছেন লজ্জার তালিকায়।

আর্নি সাইডবটম আপনার কাছে নাম টা বেশ অপরিচিত মনে হচ্ছে নিশ্চই? আরেকটু সহজ ভাবে বলতে সাবেক ইংলিশ পেসার রায়ান সাইডবটমের বাবা বললে হয়তো চিনতে আর ভুল হবার কথা নয়।

ads

আর্নি সাইডবটম জন্মগ্রহণ করেন বার্নসলের শোল্যান্ডে। ক্যারিয়ারের শুরুটা করেছিলেন একজন প্রোফেশনাল ফুটবলার হিসেবে। সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে তিনি খেলতেন। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে একজন অপেশাদার ফুটবলার হিসেবে তিনি ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন।

পরের বছর ১৯৭২ সালেই প্রফেশনাল হিসেবে খেলা শুরু করেন তিনি। ১৯৭৪-৭৫ এর দিকে তিনি জিম হল্টোনের ইনজুরিতে সেকেন্ড ডিভিসনে সুযোগ পান, সেবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে সেকেন্ড ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন করেন সাইডবটম।

শুধু ফুটবলেই নয় আর্নি সাইডবটম ছিলেন একজন পেশাদার ক্রিকেটারও! ১৯৭৩ সালে তিনি কাউন্টিতে ইয়োর্কশায়ার্র হয়ে খেলেছিলেন। তবে কাউন্টি ক্যাপ পেতে তার সময় লেগেছিল প্রায় ৭ বছর। এরপর তিন বছরের জন্য তিনি নিষিদ্ধ হন আর্নি, কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সেই কুখ্যাত বিদ্রোহী সফরে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি।

নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরেই আকস্মিকভাবে ডাক পেয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯৮৫ সালের ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে। সেই টেস্টে ইনজুরিতে পড়ার আগে ৬৫ রানের বিনিময়ে এক উইকেট নেন আর্নি। সাইডবটম নিজেও মেনে নিয়েছিলেন যে তিনি টেস্টে সুযোগ পেয়েছেন যখন তখন তার ক্যারিয়ার প্রায় শেষ!

ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে তিনি কোচিং পেশায়ও জড়িত হন। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ইয়োর্কশায়ারের হয়ে খেলার পর সাইডবটম ১২ বছর ইয়োর্কশায়ারে কোচিং করান! ২০০৩ সালে ইয়োর্কশায়ার ছেড়ে দেন তিনি। বর্তমানে তিনি ছোট বাচ্চাদের ক্রিকেট ও ফুটবল শেখান। পশ্চিম ইয়োর্কশায়ারের উডহাউজ গ্রোভ স্কুলে বাচ্চাদের ফুটবল ও ক্রিকেট শেখান আর্নি। এছাড়া তিনি থংসব্রিজ ক্রিকেট ক্লাব ও তার ছেলের রায়ান সাইডবটম একাডেমিতে যুবাদের কোচিং করান।

তার ছেলে রায়ান সাইডবটম ইংল্যান্ড জাতীয় দলে এক সময় নিয়মিত মুখ ছিলেন। টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই রায়ান খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। ২০১০ সালে রায়ান সাইডবটম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়। রায়ান সাইডবটম কিন্তু ছেলেবেলা থেকে বাবাকে অনুসরণ করে ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন।

ছেলে রায়ানের সাথে আর্নি

কিন্তু তাঁর বাবা তাকে কি বলেছিলেন জানেন? ‘ফুটবলার হিসেবে তুমি একেবারেই গাধা’ – এরপর রায়ান তার দ্বিতীয় স্বপ্ন ক্রিকেট নিয়েই ভাবতে শুরু করেন। ছেলেকে যিনি ফুটবলে গাধা হিসেবে আখ্যা দেন সেই বাবার ফুটবল অবস্থাটা কি সেটাও একটু জানুন!

আপনি কি জানেন সবচেয়ে খারাপ ফুটবলারের তালিকায় আর্নি সাইডবটমের নাম আছে?! একটু অবাক হবারই ব্যাপার – আর্নি সাইডবটমের একটা লজ্জার রেকর্ড আছে!

২০০৭ সালে এক ভোটে ইংলিশ ডিভিশন লিগের সবচেয়ে বাজে ৫০ ফুটবলারের তালিকা করা হয়। সেই তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিল আর্নি সাইডবটমের নাম!

ফুটবলার হিসেবে না হোক, ক্রিকেটার হিসেবে বাবার আক্ষেপটা ঘুচিয়ে দিতে পেরেছেন রায়ান। ২২ টেস্ট, ২৫ ওয়ানডে ও ১৮ টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link