More

Social Media

Light
Dark

রাজ্যাভিষেকের আগেই রাজার প্রস্থান

বাংলাদেশের টেস্ট দলে দুই নতুন মুখ। তরুণ শাহাদাত হোসেন দিপুর সাথে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের শিবিরে মুশফিক হাসান। বেশ একটা ডামাডোল আর শোরগোল। সবাই ব্যস্ত দিপু আর মুশফিককে নিয়ে। সেটাই যেন স্বাভাবিক। ক্রিকেটের বনেদী ফরম্যাটে দুই তরুণে আগমন বাড়তি উন্মাদনার সৃষ্টি করে।

এই উন্মাদনার মাঝেও একটা প্রশ্নের উদয় ঘটে। রেজাউর রহমান রাজার জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার বিষয়টিই বরং বাধ্য করে প্রশ্ন উত্তোলনে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের স্কোয়াডে ছিলেন রাজা। তিনি অবশ্য সেই দলে জায়গা করে নেওয়ার কথা নয়। ভাগ্যক্রমে সেই সুযোগটি এসেছিল তার কাছে।

সেবার বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা পেসার তাসকিন আহমেদ ম্যাচের আগে ইনজুরি আক্রান্ত হন। সেই সুবাদেই দলে ডাক পেয়েছিলেন রাজা। যদিও একাদশে সুযোগ মেলেনি তার। মিরপুরে বাংলাদেশ তিন পেসার নিয়ে খেলতে নামে। এবাদত হোসেনের নেতৃত্বে বাকি দুই পেসার ছিলেন শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ।

ads

স্বাভাবিকভাবেই অভিজ্ঞতায় খানিকটা পিছিয়ে পড়েছিলেন রাজা। অন্যদিকে বা-হাতি একজন বোলারের বিকল্পও বাদ রাখতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তাছাড়া সেটিও ছিল একমাত্র টেস্ট। সবকিছু মিলিয়ে রাজাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে নিজের অভিষেকের জন্যে। তিনি হয়ত অপেক্ষা করছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের জন্যে।

তবে এবারও তার সে আশা পূরণ হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট দলের ঘোষণা চলে এসেছে। তাসকিন দলে ফিরেছেন ইনজুরি কাটিয়ে। আর নতুন অন্তর্ভুক্তি মুশফিক হাসান। রাজাকে বাদ দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ সম্ভবত ইনজুরি।

এইতো ক’দিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচের আগে ইনজুরিতে পড়েছিলেন রাজা। সাইড স্ট্রেইনের ইনজুরিতে আক্রান্ত হন তিনি। তার বদলি হিসেবে এ দলে ডাক পান খালেদ আহমেদ। সেই ইনজুরি থেকে এখন অবধি পুরোপুরি সেরে হয়ত ওঠেননি রাজা।

যদিও হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের উপস্থিতিতে হওয়া প্রথম অনুশীলনে বল করেছেন রাজা। তাকে বেশ সাবলীলই ঠেকেছে সেখানটায়। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটের সেন্টার পিচে একটানা লম্বা সময় ধরে বল করেছেন রাজা। তবুও তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার পেছনে ইনজুরিই হয়ত মূল প্রভাবক।

তবে আরেকটু গভীর চিন্তা করলে সুদূর প্রসারী একটি পরিকল্পনার প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে। বাংলাদেশ হয়ত আগামী দিনের জন্যে নিজেদের প্রস্তুত করছে। সেই প্রস্তুতির প্রথম ধাপেই হয়ত তরুণ কিংবা পাইপলাইনে থাকা পেসারদের একটু সুযোগ করে দেওয়া।

জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সময় নেয়। হুট করে জাতীয় দলের শিবিরে এসে খানিকটা বিব্রতও হয় হয়ত। সেই সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকার চাপ। সব মিলিয়ে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়। তাতে করে মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ে খেলোয়াড়রা।

তাই হয়ত জাতীয় দলের রাডারে থাকা খেলোয়াড়দের খাপ খাইয়ে নেওয়ার সুযোগ হিসেবেই দলে অন্তর্ভূক্তি। সেদিকটা ভেবেই হয়ত মুশফিক হাসান ও শাহাদাত হোসেন দিপুর সুযোগ মিলেছে এবার।

এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মত বেশ গুরুত্বপূর্ন কারণ ছাড়া তেমন প্রশ্নবিদ্ধ কোন কারণ নেই, রাজার বাদ পড়ার।

তাছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে পেস বিপ্লব চলমান। পেছনের কারিগর অ্যালান ডোনাল্ড। তার সান্নিধ্যে আগামী দিনের রসদে পরিণত হতে পারে তরুণ পেসাররা। সেই ডোনাল্ডের নজর কেড়েই জাতীয় দলের ডেরায় মুশফিক হাসান। এখন দেখবার পালা খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার স্থায়ীত্ব কত কাল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link