More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

পায়ের আগুন মুখে দ্বিগুন

‘আমার মনে হয় আমি ওয়াইনের মতো, বয়সের সাথে আমিও সেরা হবো।’ উক্তিটি জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের। ৪০ বছর বয়স্ক ইব্রাহিমোভিচ সত্যিকার অর্থেই ওয়াইনের মতো। এই বয়সে অধিকাংশ খেলোয়াড় তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানেন। কিন্তু তিনি ইব্রাহিমোভিচ, তিনি কি আর বয়সের ভারে দমে যাবেন?

তিন অক্টোবর, ১৯৮১ সালে সুইডেনের শহর মালমোতে জন্ম ইব্রাহিমোভিচের। তারপর আর কি? ফুটবল বিশ্ব পেল এক অসাধারণ গোল স্কোরার। এই তারকা খেলতে নামলেন ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে। ঘরের ক্লাব মালমোর হয়েই ফুটবলের জগতে তাঁর পদার্পণ। তারপর খেললেন দুই মৌসুম। ৪০ ম্যাচে ১৬ গোল। অতি অসাধারণ কিছু করে ফেলেননি তিনি।

কিন্তু তিনি নজর কেরেছিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গারের। তাঁর সাথে আয়াক্সের কর্মকর্তাদেরও রাডারে চলে এসেছিলেন। আর্সেন ওয়েঙ্গার তাঁকে দলে ভেড়াতে ব্যর্থ হলেও আয়াক্স সফল হয়। ইউরোপিয়ান ফুটবলের লাইমলাইটের গোড়াপত্তন।

ads

তারপর আসলেও তিনি পুরো ওয়াইনের মত করে বয়সের সাথে সাথে হয়েছেন পরিপক্ক। আর তার সাথে তিনি দাপিয়ে বেড়ালেন ইউরোপিয় ফুটবল। খেলেছেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান , জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। আমেরিকান সকার লিগ ঘুরে আবা ফিরেছেন ইতালিয় জায়েন্ট এসি মিলানের ডেরায়।

তাঁর পরিসংখ্যান ঘাটলে বোঝা যায় তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে তিনি কতটুকু বিধ্বংসী ছিলেন। তিনি ছিলেন ফুটবল মাঠের ত্রাস। তাঁর ভয়ে এখনো থাকেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রা। ইব্রাহিমোভিচের ক্লাব ইতিহাসে তিনি এখন অবদি ম্যাচ খেলেছেন ৮৩৬ টি। ইনজুরি জনিত বিভিন্ন সমস্যা সামনে না আসলে নি:সন্দেহে তিনি পেরিয়ে যেতেন ১০০০ ম্যাচের কোটা এবং হয়ে যেতে এক এলিট ক্লাবের সদস্য।

তিনি যে এলিট তাঁর স্বপক্ষে ক্লাব ক্যারিয়ারে করা ৫০৩ গোল প্রমাণ দেবে। রোনালদো, পেলে, মেসিদেরই অনুসরণ করছেন তিনি। কিন্তু বরাবরের মতো ঠোঁটকাটা স্বভাবের ইব্রাহিমোভিচ আমার করা এই মন্তব্যে বেশ গোসসা করতেন তা বলাই যায়।

কেননা তিনি তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের নিজেকে ভেবেছেন সবার সেরা। শুধু ভেবেছেন তা নয় তিনি অকপটে স্বীকারও করেছেন নিজ মুখ। ক্যারিয়ারের শুরুতে আর্সেনালে তাঁর দলবদলের প্রসঙ্গে তিনি একবার বলেছিলেন, ‘আর্সেন ওয়েঙ্গার আমাকে আর্সেনালে ট্রায়াল দিতে বলেছিল, আমি মানা করে দিয়েছিলাম। কারণ জ্লাতান কখনো অডিশন দেয় না।’

তিনি তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে বেশ দাপুটে এবং কৌশলী খেলোয়াড় ছিলেন। তাঁর খেলার পাশাপাশি তিনি আলোচনায় ছিলেন তাঁর এ সকল উক্তির জন্যে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভান্টাসের বিপক্ষে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর করা বাইসাইকেল গোলটি নিশ্চয়ই ফুটবল ইতিহাসের সেরা গোলগুলোর মধ্যে একটি। তবে তা জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা বাইসাইকেল গোলটি ভুলে যাবার কথা নয় ফুটবল ভক্তদের। গোলপোস্টের প্রায় ৩২ মিটার বাইরে থেকে করা সেই বাইসাইকেল গোল এত সহজে কি মস্তিষ্ক থেকে ঝেড়ে ফেলা যায়।

এমন নানন্দিক অসংখ্য গোলের জোগানদাতা এই জলাতান ইব্রাহিমোভিচ। তিনি একজন গোল স্কোরার। তিনি যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে গোল বের করে নিজের দলকে নিয়ে যেতে পারেন জয়ের বন্দরে। নিজ দেশ সুইডেনের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়ের পায়ের উপর আস্থা করেই সুইডেন জিতেছে বহু ম্যাচ। তাইতো তিনি তাঁর জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।

এছাড়াও ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে ইব্রাহিমোভিচ ছিলেন টানা তিনবারের গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে। তাঁর করা গোলগুলো যেমন আমাদের বিনোদনের খোরাক মেটায়, তেমনি তাঁর করা বিভিন্ন উক্তি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারার টোটকা দেয়।

পা দিয়ে তিনি গোল করে জয় করেন ম্যাচ আর অর্জনের ঝুলিতে ভরেছেন শিরোপা। তার পাশাপাশি তিনি তাঁর উক্তি দিয়ে জিতেছেন বহু ভক্তের মন। পা আর মুখ সমান ভাবে চলে – এমন ফুটবলার পৃথিবীতে আগে আসেননি, আর আদৌ আসবেন কি না সন্দেহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link