More

Social Media

Light
Dark

তাসকিনের ছন্দ ফিরে পাওয়ার অভিযান

এই যে বলটা গিয়ে উপড়ে ফেলল লেগ স্ট্যাম্প। সেটাই তো হবার কথা তাসকিন আহমেদের প্রতিচ্ছবি। নিয়ম করে দর্শকে ঠাসা স্টেডিয়ামের মধ্যখানে, এমনই সব ভেল্কি দেখানোর কথা তাসকিনের। তবে হায়, ইনজুরি যে প্রতিবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়!

প্রতিবার উড়তে শুরু করবার মুহূর্তেই হোঁচট খেতে হয়েছে তাসকিনকে। পাখা গুটিয়ে তাকে আবার শুরু করতে হয়েছে প্রথম থেকে। সেই শুরুটা তিনি আরও একদফা করেছেন। নিজের ছন্দ ফিরে পেতে মিরপুর ইনডোর মাঠের নেটে হাজির তাসকিন।

পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পুরোদমে নিজের বোলিং অ্যাকশনে ফিরতে একটু সময় লাগবেই তার, সবেই যে চোট সেরে উঠেছে। এখনই নিজের শতভাগ দিতে চাইলে হতে পারে আরও এক ইনজুরি। তাইতো খানিকটা রয়েসয়ে ধীর গতিতে তিনি বল করে গেলেন নেটে।

ads

মূলত নিজের লাইন আর লেন্থের উপরই জোর দিয়েছেন তিনি। হালকা দৌড়ে এগিয়ে এসেছেন। গতির দিকে খুব একটা মনযোগ না দিয়ে মনমত জায়গায় বল ফেলবার প্রয়াসটা করে গেছেন। তাতে কাজও হয়েছে। বেশ ক’বার উপড়ে ফেলা গেছে স্ট্যাম্প। তাছাড়া ব্যাটারদের কল্পনা করে অফ সাইড অঞ্চলের পাঁচ বা ছয় নম্বর স্ট্যাম্প বরাবর বল করে গেছেন তাসকিন।

একটু বিশ্রাম নিয়ে, আবারও স্মিত এক রিদমে দৌড়ে গিয়ে বল ছুঁড়েছেন। পাশে থাকা সহযোগীর সাথে লাইন লেন্থের আলাপ করেছেন। আবার ফিরে গেছেন রানআপ প্রান্তে। একটু একটু করে দৌড়ের দূরত্ব বাড়িয়েছেন। এভাবেই একটু একটু করে নিজেকে আবার ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

অথচ সাইড স্ট্রেইনের এই ইনজুরির আগেও দূর্বার গতিতে দৌড়েছেন তিনি। উপড়ে ফেলেছেন প্রতিপক্ষের উইকেট। আগ্রাসনে ভয় ধরিয়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মনে। বছরের মধ্যভাগ অবধি তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২১টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার আগেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হয়েছিলেন সিরিজ সেরা। পকেটে পুরেছিলেন আট খানা উইকেট। ঠিক এমন করেই তার উইকেটের ট্যালিটা ছোঁয়ার কথা ছিল আকাশ। সেদিক থেকে খানিকটা দুর্ভাগাই বলা চলে তাকে। অধিকাংশ সময়ে তার করা বলে ক্যাচ ফেলেছেন সতীর্থরা। আর ইনজুরির সাথে সখ্যতা।

এই দুই মিলিয়ে উইকেটের ট্যালিটা খুব বেশি সমৃদ্ধ হয়নি। অবশ্য সেসব নিয়ে এখন আর বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তিনি। তাসকিন বরং এখন নিজের হাতের কাছে থাকা বিষয়গুলো নিয়েই অধিক ভাবেন। নিজেকে ফিট রাখার দিকেই যেন তার পূর্ণ মনোযোগ। সেটা মানসিক হোক কিংবা শারীরিক।

তাছাড়া নিজের অস্ত্র ভাণ্ডারে থাকা অস্ত্রগুলো যেমন শাণ দেন প্রতিনিয়ত, ঠিক তেমনি নিত্যনতুন সব অস্ত্র যোগ করাতেও দিচ্ছেন মনোযোগ। নিজের আয়ত্ত্বে থাকা জিনিসগুলোকে একেবারে ঝালিয়ে রাখছেন তিনি। বাদবাকি সব তো নিতান্ত ভাগ্য়ের নির্মমতা।

এসব কিছু ছাপিয়ে তাসকিন আরও ধারাবাহিক হবে। অন্তত মাশরাফি বিন মর্তুজার মত ইনজুরির ভয়াল থাবা কেড়ে নেবে না তাসকিনের ক্যারিয়ারের সিংহভাগ। তেমনটাই হয়ত প্রত্যাশা করে সকলে। তাসকিনেরও ঠিক তেমনটাই প্রত্যাশা হবার কথা। তাইতো গ্রীষ্মের তপ্ত রোদেও নিজেকে ফিরে পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link