More

Social Media

Light
Dark

তামিমের সাথে শাহীন ফকির: রূপকথার এক সন্ধ্যা

বরিশালের তরুণ শাহীন ফকিরের জীবনের স্বপ্ন ছিল প্রিয় ক্রিকেটার তামিম ইকবালের সাথে দেখা করা। অবশেষে খোদ তামিমের আগ্রহে শাহীনের সেই স্বপ্ন পূরণ হল।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের আগে টিম হোটেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী এই তরুণের  সাথে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। কেবল তামিম নন, এদিন মুশফিকুর রহিম, শাহরিয়ার নাফিস, নাফিস ইকবালরাও দেখা করেন শাহীনের সাথে। 

বরিশালের মুলাদি উপজেলার শাহীন উচ্চতায় মাত্র আঠারো ইঞ্চি। ছোটবেলাতে পোলিও আক্রান্ত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী মেনেই বেড়ে ওঠা। কিন্তু এই দুর্বলতা দমিয়ে রাখতে পারেননি দারুণ উদ্যমী এই তরুণকে। পরিবারের বোঝা না হয়ে বরং ইচ্ছাশক্তি এবং চেষ্টার জোরে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছেন। 

ads

ক্রিকেটপ্রেমী শাহীনের জীবনের একটি স্বপ্ন ছিল তামিম ইকবালের সাথে দেখা করা এবং কথা বলা। সিলেটে আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ শুরুর আগে ভক্তের এই চাওয়া পূরণ করেন তামিম।

নিজেই নিমন্ত্রণ জানান শাহীনকে, শাহীনসহ তাঁর চারজন সঙ্গীর সিলেটে আসার সমস্ত খরচ বহন করেন তামিম নিজেই। এছাড়া চলাফেরায় অসুবিধা হওয়ায় শাহীনকে একটি মোটরচালিত হুইলচেয়ার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তামিম এবং মুশফিকুর রহিম।

 শাহীন হোটেলে আসার পর তৈরি হয় আবেগঘন এক পরিবেশের। স্বপ্নের নায়ককে সামনে থেকে দেখার অপার্থিব অনুভূতিতে বাঁধভাঙা খুশিতে যেন বাক্যহীন হয়ে পড়েন শাহীন।

ঘোর কেটে গেলে প্রিয় নায়ককে বলতে শুরু করেন ক্রিকেটের প্রেমে পড়ার গল্প, তামিমে মজে যাবার গল্প। মুগ্ধ শ্রোতার ন্যায় তামিমও শুনেছেন সেই গল্প, কখনোবা হতবাক হয়ে গেছেন ভক্তের ভালোবাসায়। 

কিছুক্ষণ পর তামিম নিজেই ডেকে আনেন আরেক তারকা মুশফিকুর রহিমকে। বাড়ে আড্ডার বহর, একে একে যোগ দেন শাহরিয়ার নাফিস এবং নাফিস ইকবালও। শাহরিয়ার নাফিসের বাড়িও বরিশালে হওয়ায় শাহীনের সাথে খানিকক্ষণ খুনসুটি সারেন বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায়।

শাহীন এবং তাঁর সঙ্গী বাকি চারজনকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের পাঁচটি টিকিট উপহার দেন তামিম। এছাড়া নিজের স্বাক্ষরিত একটি জার্সিও শাহীনকে উপহার দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শাহীনের যেন কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না, স্বপ্ন পূরণের মূহুর্তে বুঝি সবারই এমন হয়!

টিম হোটেলে এদিন শাহীনকে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় দেন বাংলাদেশের ওডিআই অধিনায়ক। উপহার এবং আড্ডা দেয়ার পাশাপাশি শাহীনকে নাস্তা করান তামিম। তামিমের জীবনে হয়তো এমন সন্ধ্যা বহুবার এসেছে, কিন্তু এই ৪৫ মিনিটেই শাহীন পেয়ে গেছেন বাকি জীবন গল্প করার খোরাক।

এই যুবকের সাথে দেখা করার ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন তামিম। ক্যাপশনে লিখেন, ‘বিনয়ী থাকুন, নিজের যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। আলহামদুলিল্লাহ! বরিশালের এই ব্যক্তির সাথে দেখা করে ভালো লাগল।’

উল্লেখ্য, বরিশালের মুলাদি উপজেলার চর কমিশনার এলাকার বাড়ি শাহীনের। ছোটবেলায় পোলিও আক্রান্ত হলে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে হাত পা বেঁকে যায় তাঁর। এরপর থেকেই হুইলচেয়ারই তাঁর সঙ্গী।

কিন্তু, তা সত্ত্বেও সমাজের বোঝা হতে চায়নি শাহীন, নিজের দোকানে ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রেমে পড়া শাহীনের স্বপ্নের নায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল। স্থানীয় পত্রিকায় এই ব্যাপারে জানার পর তামিম নিজেই দেখা করার জন্য ডেকে নেন শাহীনকে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link