More

Social Media

Light
Dark

অধিনায়ক তামিম, সফল তবুও সমালোচিত

গুঞ্জনের পালে হাওয়া লেগেছিল আগেই; নেতৃত্ব ছাড়তে পারেন তামিম ইকবাল। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসভবনে রূদ্ধদ্বার বৈঠকের পর অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্য হলো। স্বয়ং তামিম ইকবাল নিজেই জানিয়ে দিলেন, তিনি আর বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক থাকছেন না।

হার দিয়ে শুরু, হার দিয়েই শেষ— তামিম ইকবালের অম্লমধুর অধিনায়কত্বের যাত্রায় শুরু আর শেষের মিলটা এখানেই। তবে শুরু আর শেষের এই তিক্ততাটুকু বাদ দিলে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের সময়কালে বেশ সফলই ছিলেন তামিম।

বাংলাদেশকে ৩৭ টি একদিনের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়া তামিম জয় পেয়েছেন ২১ টিতে। জয়ের শতাংশ হিসেবে যা ৫৬.৭৫%। ন্যূনতম ১০ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া সাপেক্ষে জয়ের শতাংশ বিবেচনায় বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তামিমের উপরে রয়েছেন শুধু মাশরাফিই। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ৫৬.৮১ শতাংশ ম্যাচে জয় পেয়েছে।

ads

মজার ব্যাপার হলো, এই মাশরাফির স্থলাভিষিক্ত হয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এমনকি মাশরাফির ইনজুরিতেই অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডে নেতৃত্বে অভিষেক হয়েছিল তামিমের।

সময়টা তখন ২০১৯ সাল, বিশ্বকাপের পর। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি ইনজুরিতে পড়লে শ্রীলঙ্কা সফরে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে পাঠানো হয় তামিমকে। তবে সেবার শূন্য হাতেই দেশে ফিরেছিলেন তিনি। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের ৩ টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

তবে পরবর্তীতে ঠিকই সফল হয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম। ওয়ানডে সুপার লিগ শুরুর সময়েই বাংলাদেশকে সেরা চারে রাখার ইচ্ছাটা জানিয়েছিলেন তামিম। দুই বছরের সুপার লিগ বাংলাদেশ শেষ করে তৃতীয় হয়ে।

তবে নেতৃত্বে সফল হলেও ব্যাট হাতে ঠিক তামিম নিজের সেরাটা দেখাতে পারছিলেন না। ওয়ানডে ক্রিকেটে যেখানে তিনি প্রায় ৩৭ গড়ে ব্যাটিং করেছেন, সেখানে অধিনায়ক থাকাকালীন তাঁর ব্যাটিং গড়টা ছিল ৩৩.২৯। ৯ ফিফটি আর ১ সেঞ্চুরিতে ৩৭ ম্যাচে করেছেন ১১৩২ রান।

অবশ্য ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান এসেছিল তামিমের ব্যাট থেকেই। কিন্তু তারপরও মন্থর গতির ব্যাটিংয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি। তাছাড়া চলতি বছরে নিজের সহজাত ব্যাটিংটাই করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তামিম। এর পিছনে অবশ্য রয়েছ ফিটনেস ইস্যু।

পুরনো চোট সামলে খেলে গিয়েছেন প্রায় এক বছর। কিন্তু পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেননি। আর সেই পুরনো চোটের কারণেই আসন্ন এশিয়া কাপে দেখা যাবে না তামিমকে।

তামিম কেন অধিনায়কত্ব ছাড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো বহু প্রশ্নের অবকাশ আছে। তবে সেসব প্রশ্নের উত্তরটা আপাতত অজানাই থাকছে। অধিনায়ক তামিমের যাত্রাটা এখানেই থেমে যাচ্ছে। এখন দেখার পালা, বিশ্বকাপের মাস তিনেক আগে এভাবে দলের অধিনায়কের এভাবে নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়াটা দলে কোনো নেতিবাচক প্রভাবের কারণ হয় কিনা।

তামিমের অবর্তমানে বাংলাদেশের অধিনায়ক কে হবেন? সাকিব নাকি লিটন? আপাতত এই দুটো নামই ঘুরে ফিরে আসছে। ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে সাকিবের। তাছাড়া অন্য দুই ফরম্যাটের অধিনায়কও তিনি। সব মিলিয়ে বিসিবি নেতৃত্বের ভারটা তাঁর কাধেই দিতে চাইবে।

তবে এখানেও ‘কিন্তু’ রয়েছে। সাকিব নিজে সেই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তো? আরো একটি প্রশ্ন হচ্ছে, ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফির পর তামিম যেভাবে সফলতার স্রোতে দলকে বইয়ে নিয়েছেন, সেটার ধারাবাহিকতা নতুন অধিনায়ক রাখতে পারবেন তো?

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link