More

Social Media

Light
Dark

তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে

লম্বা খেলোয়াড়দের আধিপত্য দেখা যায় বাস্কেটবলে। সেখানে লম্বা হওয়াটাই বাড়তি একটা দক্ষতা। তবে, সব লম্বা ক্রীড়াবিদেরই বাস্কেটবলে ঝোঁক থাকে না।

আবার এটাও ঠিক যে, প্রায় সব খেলাতেই দেখা যায় লম্বা খেলোয়াড়রা একটু বেশি সুবিধা পেয়ে থাকেন। ক্রিকেটও এর ব্যতিক্রম না। ক্রিকেটে লম্বা বোলারটা একটু বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। তুলনামূলক খাটো বোলারদের থেকে লম্বা বোলাররা একটু বেশিই সুবিধা পেয়ে থাকেন। লম্বা ব্যাটসম্যানরা আবার বাউন্সের বিপরীতে হন দারুণ।

আজকের আয়োজনটা সেই সব লম্বা ক্রিকেটারদেরকে নিয়ে। আজ বলবো তাঁদের কথা যারা নিজেদের উচ্চতা দিয়ে বাজিমাত করেছেন ক্রিকেটে।

ads
  • টম মুডি (অস্ট্রেলিয়া): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেস বোলিং অলরাউন্ডার – এই পরিচয়ের চেয়েও এখনকার মুডির সবচেয়ে বড় পরিচয় হল তিনি সময়ের আলেচিত কোচদের একজন। পিঠের ইনজুরির কারণে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবন মাত্র আট টেস্ট ও ৭৬ টি ওয়ানডেতে থেমে যায়।

তবে, পরবর্তীতে কোচ হিসেবে পান বিস্তর সাফল্য। ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনি শ্রীলঙ্কা দলকে নিয়ে যান বিশ্বকাপের ফাইনালে। আর এখনকার টি-টোয়েন্টির জমানায় তিনি বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর কোচিং করিয়ে থাকেন।

  • স্টিভেন ফিন (ইংল্যান্ড): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

স্টিভেন ফিন ইংলিশ পেসার। মাত্র ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক। আর তখন থেকেই তাকে প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হত। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি।

ইনজুরি জনিত সমস্যার কারণে জাতীয় দলের বাইরে থাকতে হয়েছে অনেক দিন। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৬ টেস্টে ১২৫ উইকেট নিয়েছেন। ওয়ানডেতে ইংলিশদের হয়ে খেলেছেন ৬৯ ম্যাচ। উইকেট সংখ্যা ১০২ টি। টি-টোয়েন্টিতে ২১ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ২৭ উইকেট।

  • ক্যামেরুন কাফি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১৫ টেস্ট এবং ৪১ ওয়ানডে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নব্বইয়ের দশকে তার সমসাময়িক পেসার কার্টলি অ্যামব্রোস, কোর্টনি ওয়ালশরা থাকায় জাতীয় দলে খুব বেশি সময় খেলতে পারেননি।

১৫ টেস্টে ৪৩ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। আর ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৪১ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য তিনি বিরাট আক্ষেপ।

  • জেসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

এই ক্যারিবিয়ান বোলিং অলরাউন্ডার ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলের অধিনায়কের দাতিয়ত্ব পালন করছেন। ২০১১ সালে জাতীয় দলের অভিষেক হয় হোল্ডারের। তিনি এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ৪৫ টেস্ট ,১১৫ ওয়ানডে এবং ১৭ টি-টুয়েন্টি।

হোল্ডার বলের পাশাপাশি নিচের দিকে ব্যাট হাতেও ঝড় তুলতে পারেন। ৪৫ টেস্টে শিকার করেছেন ১১৬ উইকেট। আর ব্যাট হাতে করেছেন ২১১৫ রান। ওয়ানডে তে বল হাতে নিয়েছেন ১৩৬ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১৮২১ রান। টি-টুয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে নিয়েছেন ১৩ উইকেট এবং করছেন ১১১ রান।

  • কার্টলি অ্যামব্রোস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

তার সময়ের আক্রমণাত্নক পেসারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কার্টলি অ্যামব্রোস। দূর্দান্ত পারফর্মেন্সের কারণে জায়গা পেয়েছেন আইসিসির হল অফ ফেমে।

তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ৯৮ টেস্ট এবং ১৭৬ ওয়ানডে। ৯৮ টেস্টে নিয়েছেন ৪০৫ উইকেট এবং ওয়ানডেতে শিকার করেছেন ২২৫ উইকেট। টেস্ট কিংবা ওয়ানডে – যেকোনো ফরম্যাটেই নিজের দিনে তিনি ছিলেন অবিসংবাদিত সেরা।

  • সুলেমান বেন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি

সুলেমান বেন, ক্যারিবিয়ান স্পিনার। বেন মাঠে তার বোলিং এর থেকে বেশি পরিচিতি ছিলেন তার বিভিন্ন বাজে কর্মকান্ডের জন্য। বেনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০০৮ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে। জাতীয় দলে আসার আগেই তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনার সৃষ্টি করেছেন।

তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন ২৬ টেস্ত,৪৭ ওয়ানডে এবং ২৪ টি-টুয়েন্টি। বির্তকিত ঘটনা ঘটানোর পরও তিনি যখনই দলে সুযগ পেয়েছেন তখনই পারফর্ম করেছেন। তিনি ২৬ টেস্টে নিয়েছেন ৮৭ উইকেট । এছাড়াও ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টিতে নিয়েছেন যথাক্রমে ৩৯ এবং ১৮ উইকেট।

  • পিটার জর্জ (অস্ট্রেলিয়া): ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি

পিটার জর্জ অস্ট্রেলিয়ান পেসার। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট গ্লেন ম্যাকগ্রার হুবহু নকল। গ্লেন ম্যাকগ্রার মত বোলিং করতে পারতেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাত্র ১ টেস্টেই থমকে গিয়েছে।

২০১০ সালে শচীন টেন্ডুলকারকে স্লেজিং করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। ১ টেস্টে ২ উইকেট নিয়েই ক্যারিয়ার থমকে গেছে তার।

  • ব্রুস রিড (অস্ট্রেলিয়া): ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি

পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই বিভিন্ন ধরণের ইনজুরির সাথে লড়াই করেছেন তিনি। জিওফ মার্শ এবং মার্ক হিউজের সাথে অভিষেকের পরও খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি।

এতো ইনজুরির মাঝেও খেলেছেন ২৭ এবং ৬১ ওয়ানডে। এই বাঁহাতি অস্ট্রেলিয়ান পেসার ২৭ টেস্টে শিকার করেছেন ১১৩ উইকেট। আর ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৬৩ উইকেট।

  • জোয়েল গার্নার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি

জোয়েল গার্নার এর ডাক নাম ছিলো বড় পাখি।এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ৫৮ টেস্ট এবং ৯৮ ওয়ানডে। ৫৮ টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ২৫৯ উইকেট এবং ওয়ানডেতে উইকেট সংখ্যা ১৪৬ টি। গার্নার ছিলেন তার সময়ে সবচেয়ে দূর্ধষ বোলারদের মধ্যে একজন।

  • রয়েড র‍্যানকিন (ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড): ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি

রয়েড র‍্যাংকিন খেলেছেন ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের হয়ে। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো সময় ছিলো আয়ারলযান্ডের পক্ষে। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছেন ৩ টেস্ট,৭৫ ওয়ানডে এবং ৫০ টি-টোয়েন্টি।

তিন টেস্টের মধ্যে এক টেস্ট খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে এবং বাকি বাকি দুই টেস্ট নিজ মাতৃভূমি আয়ারল্যান্ডের হয়ে। তিন টেস্টে শিকার করেছেন ৮ উইকেট। এছাড়াও ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টিতে নিয়েছেন যথাক্রমে ১০৬ এবং ৫৫ উইকেট।

  • মোহাম্মদ ইরফান (পাকিস্তান): ৭ ফিট ১ ইঞ্চি

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ক্রিকেটার। ইরফান বর্তমানে ফিক্সিং এর অভিযোগে জাতীয় দলের বাইরে আছেন। তিনি পাকিস্থানকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই।জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৪ টেস্ট, ৬০ ওয়ানডে এবং ২২ টি-টুয়েন্টি। ৪ টেস্টে উইকেট পেয়েছেন ১০টি।

টেস্টে রেকর্ড ভালো না হলেও ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির পরিসংখ্যান বেশ উজ্জ্বল। ৬০ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৮৩ উইকেট এবং ২২ টি-টুয়েন্টিতে ১৬ উইকেট।

এছাড়াও জ্যাকব ওরাম, মরনে মরকেল ক্রিস ট্রেমলেটের তুলনামূলক উচ্চতা সম্পন্ন ক্রিকেটারও খেলেছেন।

 

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link