More

Social Media

Light
Dark

স্পিনে শুরু, অন্য পরিচয়ে সফল

জীবন ক্রমশ পরিবর্তনশীল। বলা হয়, সময়ের সাথে সাথে যারা নিজেদের পাল্টাতে জানেন তাঁরাই নাকি সাফল্যের চূড়ায় উঠতে জানেন। ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি।

ক্রিকেট তো জীবনের মতই। বাইশ গজে তাই এমন অনেককেই দেখা যায় যারা শুরু করেছেন একটা পরিচয়ে, কিন্তু সাফল্য পেয়েছেন প্রায় বিপরীতধর্মী কোনো ভূমিকায়। একগাদা ক্রিকেটার আছেন, যাদের ক্যারিয়ার শুরু স্পিনার হিসেবে হলেও সাফল্য পেয়েছেন অন্য কোনো পরিচয়ে। তাঁদের নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

  • স্টিভেন স্মিথ

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়কের রূপান্তরের গল্প দিয়ে চাইলে সিনেমাও বানানো যায়। লেগ স্পিনার হিসেবেই তাঁর জাতীয় দলে আসা। মনে করা হত, স্বয়ং শেন ওয়ার্নের জায়গা নেবেন তিনি। শেন ওয়ার্নের সাথে নেটেও সময় কাটান।

ads

তবে, কালক্রমে নিজেকে পাল্টে ফালেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। এখন তিনি সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান, যেকোনো ফরম্যাটে। আগে যার তুলনা হতে ওয়ার্নের সাথে এখন তাঁকেই বলা হয় ‘একালের স্যার ডন ব্র্যাডম্যান’।

  • নাসের হুসেইন

তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের আপদকালীন অধিনায়ক। ভয়াবহ দু:সময়ে তিনি ইংলিশদের দায়িত্ব নিয়ে দলটিকে ফিরিয়েছিলেন কক্ষপথে। নব্বই দশকে ইংল্যান্ড দলের হয়ে দারুণ সব ইনিংস আছে ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই ক্রিকেটারের।

যদিও, খুব কম লোকই জানেন যে – নাসের হুসেইনের ক্যারিয়ার শুরু হয় লেগ স্পিনার হিসেবে। তবে, কালক্রমে তাঁর ব্যাটসম্যান প্রতিভা বিকশিত। আর নিজের এই দক্ষতার জায়গাটা ঝালাই করে বড় ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠেন তিনি।

  • কেভিন পিটারসেন (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন কেভিন পিটারসেন, সংক্ষেপে কেপি। উদ্ভাবনী ক্ষমতার জন্য বাইশগজে বিখ্যাত ছিলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভুত ব্যাটসম্যান। ক্রিকেটে তিনি সুইচ হিটকে জনপ্রিয় করেন।

তবে, এসবের কোনো কিছুই সম্ভব হতো না যদি না তিনি নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলতেন। ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন অফ স্পিনার হিসেবে। যদিও, পরে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করে পুরোদস্তর ব্যাটসম্যান বনে যান।

  • শান্তাকুমারান শ্রীশান্ত (ভারত)

তালিকায় এই নামটা দেখে চমকে উঠতে পারেন। তবে, কোনো গালগল্প নয় – সত্যিই শ্রীশান্ত নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন লেগ স্পিনার হিসেবে। আদর্শ মানতেন স্বয়ং অনিল কুম্বলেকে।

যদিও, ভবিষ্যতে তিনি একজন আক্রমণাত্মক পেসার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েন। এরপরও শ্রীশান্তের রূপান্তর হয়েছে। তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ক্যারিয়ারের সর্বনাশ করেছেন, বড় পর্দায় অভিনয়ও করেছেন।

  • ক্যামেরন হোয়াইট (অস্ট্রেলিয়া)

২০০৮ সালে ভারতের বিপক্ষে লেগ স্পিনার হিসেবেই ক্যামেরন হোয়াইটকে দলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখানে বাড়তি পাওনা ছিল হোয়াইটের টুকটাক ব্যাটিং জানা। যদিও, স্পিনার হিসেবে তিনি ‘লম্বা বিনিয়োগ’ হতে পারেননি। হাতে অস্ত্র ছিল সীমিত। তাই তো চার টেস্টে পান মাত্র পাঁচ উইকেট।

তবে, ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে দলে টিকে যান তিনি। ৯১ টি ওয়ানডে খেলে ৩৪-এর কাছাকাছি গড়ে তিনি রান করেন দুই হাজারের ওপরে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেও হাজারখানেক রান আছে তাঁর ঝুলিতে।

  • আসতে পারতেন তারাও

এই তালিকায় আরো কয়েকটা নাম আসি আসি করেও আসিনি। চাইলে এখানে পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক কিংবা শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়াসুরিয়ার নামও নেওয়া যায়। তারাও ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন স্রেফ স্পিনার হিসেবে। তবে, পরে ব্যাটিংয়েও জোর দেন। যদিও, তারা নিজেদের বোলিংটাকে একদম ‘সাইডলাইন’ করে দেননি। বরং দু’টোই চালিয়ে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

আসতে পারেন ভারতের রবি শাস্ত্রীও। তিনি পুরোদস্তর স্পিনার হিসেবে শুরু করেন। পরে অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার তাঁকে দিয়ে নিয়মিত ব্যাটিং উদ্বোধন করাতেন। পরে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে সুনাম কুড়ান শাস্ত্রী।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link