More

Social Media

Light
Dark

জন্ম যাদের লঙ্কায়

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের বিরাট কিছু পুরোনো দল নয়।

১৯৮১ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া দলটি ক্রিকেট দুনিয়ায় মাথা তুলে দাঁড়াতে সময় নিয়েছিল বেশ। তবে সেই দুঃসময়কে খুব দীর্ঘায়িত হতে দেয়নি দলটি। ১৯৯০ সালের শুরু থেকেই দলটি তাঁদের সামর্থ্যের ছাপ রাখতে শুরু করে। গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকা একটি দল ১৯৯৬ সালে অর্জুন রানাতুঙ্গয়ার হাত ধরে বিশ্বকাপ ছুঁয়ে ফেলে। এরপর থেকেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দুনিয়ার বড় দল। যারা আর কখনো গুটি গুটি পায়ে নয়  বরং ক্রিকেট দুনিয়ায় রাজত্ব করেছে সিংহের মত।

তবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ভ্রুনাবস্থায় শ্রীলংকায় জন্ম নেয়া অনেক ক্রিকেটারই দলের হাল ধরেননি। তারা তাঁদের ক্রিকেট প্রতিভা দেখাতে কিংবা বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন অন্য কোনো দেশে। শ্রীলঙ্কায় জন্ম নিয়ে ভিন্ন কোনো দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা এমন কিছু ক্রিকেটারদের নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

ads
  • মাহাদেভান সাথাসিভাম

১৯১৫ সালে কলম্বোতে জন্ম হয় এই ব্যাটসম্যানের। স্যার গারফিল্ড সোবার্স বলেছিলেন মাহাদেভান ক্রিকেট দুনিয়ার সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রেট ফ্রান ওরেলও বলেছিলেন তিনি নাকি মাহাদেভানের চেয়ে ভালো ব্যাটসম্যান কখনো দেখেননি।

যেহেতু শ্রীলঙ্কার তখন টেস্ট স্ট্যাটাস পায়নি সেহেতু সাথার কখনো টেস্ট ম্যাচ খেলা হয় না। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং দেখে সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যেত। তবে পরবর্তীতে তিনি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার হয়ে ক্রিকেট খেলেন। আসলে, শ্রীলঙ্কায় তিনি আর টিকতে পারছিলেন না তখন, স্ত্রী-হত্যা মামলায় ফেঁসে গিয়েছিলেন। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।

  • সঞ্জয় থুরাইসিঙ্গাম

সঞ্জয়ের জন্ম হয় শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে; ১৯৬৯ সালে। তবে পরবর্তীকালে তিনি দেশ ছেড়ে কানাডায় পাড়ি জমান। কানাডার হয়েই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন। ২০০১ সালের আইসিসি ট্রফিতে তিনি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন।

২০০৩ সালে কানাডার হয়েও তিনি বিশ্বকাপও খেলেছেলেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে সেই বিশ্বকাপে তিনি নিজের দেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন। ওই ম্যাচে এই ফাস্ট বোলার সনাথ জয়াসুরিয়ার উইকেট নিয়েছিলেন।

  • ডেভ হোয়াটমোর

সম্ভবত এই তালিকার সবচেয়ে পরিচিত নাম হোয়াটমোর। শ্রীলঙ্কার হয়ে ক্রিকেট না খেললেও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে দু হাত ভরে দিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তবে সেটা ক্রিকেটার হিসেবে নয় কোচ হিসেবে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ী শ্রীলঙ্কা দলের কোচ ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর।

তবে তিনি প্রায় ১১ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। কোচিং জীবনটা বেশি কেটেছে উপমহাদেশেই। শ্রীলঙ্কা ছাড়াও বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপাল দলের কোচিং করিয়েছেন। কোচ ছিলেন জিম্বাবুয়ে দলেও। আইপিএল ও কেরালা রাজ্য দলের কোচিংও করিয়েছেন।

  • রুভিন্দা গুনাসেকারা

২৪ বছর বয়সী কানাডার এই ক্রিকেটারেরও জন্মসূত্রে শ্রীলঙ্কান। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার নিরন গুনাসেকারার সন্তান। তবে তারা ২০০৬ সালে কানাডায় চলে যান। তাঁর দুই বছর পরেই রুভিন্দা কানাডার হয়ে খেলা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি কানাডা জাতীয় দলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

  • এন্ড্রি বেরেঞ্জার

১৯৯১ সালে শ্রীলঙ্কায় জন্ম নেন এই ওপেনিং ব্যাটসম্যান। তবে এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যানের ক্রিকেটিং ক্যারিয়ার গড়ে ওঠে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে পরবর্তীতে স্কলারশিপ নিয়ে তিনি আবার শ্রীলঙ্কা চলে আসেন।

২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কায় তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ২০১০ সালে তিনি শ্রীলঙ্কার হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেন। তবে পরবর্তীতে তাঁর শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলে খেলার আশা ক্ষীণ হতে থাকলে তিনি আবার আরব আমিরাতে চলে আসেন। ২০০৪ সালে আমিরাতের হয়ে তাঁর অভিষেক ঘটে।

  • ফ্লাভিয়ান আপোনসো

শ্রীলঙ্কায় জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী ট্যুর করার কারণে তাঁকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ফলে বাধ্য হয়ে আপন্সো নেদারল্যান্ডে চলে যান এবং ৪৪ বছর বয়সে তিনি নেদারল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেন। সেই বিশ্বকাপে তিনি সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি হিসেবে বিশ্বকাপে হাফ সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের পরেই তিনি ক্রিকেট থেকে অবসরে যান।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link