More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

প্রোটিয়াদের কাছেই প্রোটিয়াদের পরাজয়

সবচেয়ে বড় অঘটন বললে নিশ্চয়ই ভুল বলা হয় না। প্রত্যাশা আর সকল হিসেব-নিকেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ স্বপ্নে স্বজোরে আঘাত। শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর দলটার সকল স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে ধূলিসাৎ। দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। খানিক ভ্রু কুচকে যাওয়ার মত তথ্য নিশ্চয়ই। হ্যা সত্যিকার অর্থেই প্রোটিয়া খেলোয়াড়দের কাছেই হেরেছে প্রোটিয়ারা।

বিষয়টা খোলাসা করা যাক। তবে এর আগে নেদারল্যান্ডসের এবারের আসরটার দিকে একটু ঢুঁ মেরে আসা যাক। বাছাই পর্বের বাঁধা পেরিয়ে তবে ডাচদের আসতে হয়েছে এবারের বিশ্বকাপের মূল পর্বে। সেখানেও অবশ্য ভাগ্য সহায় হয়েছিল বলেই নেদারল্যান্ডস মূল পর্বের টিকিট কাটতে পেরেছিল। ভাগ্য ঠিক তেমনি করে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই সাথে ছিল নেদারল্যান্ডসের। গ্রুপ পর্বের শেষ দিনটাতেও ভাগ্য দেবতা সহায় হয়েছিল ডাচদের পক্ষে।

তাইতো শিরোপা প্রত্যাশী দলকে এক ঝটকায় টুর্নামেন্ট থেকে বাদ দিতে পেরেছে দলটি। এর পেছনে ভাগ্যের ঠিক যতটা না অবদান রয়েছে ঠিক ততটা অবদান রয়েছে ডাচদের দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়দের। হ্যাঁ, নেদারল্যান্ডস দলটায় বেশকিছু খেলোয়াড় রয়েছেন যাদের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানেই বেড়ে ওঠা। সেখানেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি। তবে তাঁরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বর্তমানে কমলা আর্মিদের প্রতিনিধি।

ads

খানিকটা কাকতালীয় ঘটনা হলেও, একাদশে থাকা প্রতিটা খেলোয়াড়রাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদানের সম্বনয়েই হারানো গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। প্রথমত যদি বলতেই হয়, তবে ব্র্যান্ডন গ্লোভারের কথা আসবে সবার আগে। ডাচদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন গ্লোভার। তুলে নিয়েছেন তিনখানা গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। রাইলি রুশো, ডেভিড মিলারদের মত তুখোড় ব্যাটারদের উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি তিনি ইনিংসের ১৬ তম ওভারে জোড়া আঘাত হিসেবে ওয়েইন পার্নেলের উইকেটও শিকার করেন।

গ্লোভারের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে। প্রোটিয়াদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যও ছিলেন এই ডানহাতি ফাস্ট বোলার। ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রস্তুতির সময় তৎকালীন ডাচ কোচ রায়ান ক্যাম্পবেলের নজড়ে আসেন গ্লোভার।

এরপর ক্যাম্পবেল তাঁকে নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলার প্রস্তাব দেন ও বহু প্রচেষ্টার পর গ্লোভার রাজি হন। ডাচদের হয়ে সফলতার দেখাও পান গ্লোভার। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।

গ্লোভার ছাড়াও প্রোটিয়াদের হারানো দলে ছিলেন, স্টিফেন মাইবার্গ। পাওয়ারপ্লেতে ডাচদের উড়ন্ত সূচনা এনে দিতে ভূমিকা রাখেন মাইবার্গ। পাওয়াপ্লেতে মোট সাতখানা গুরুত্বপূর্ণ বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন বাঁ-হাতি এই ওপেনিং ব্যাটার। জন্মসূত্রে তিনিও দক্ষিণ আফ্রিকান। সেখানেই তিনি নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা শুরু করেন। প্রোটিয়াদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেক হয়েছে তাঁর। তবে তিনি বদলে ফেলেছেন নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের গতিপথ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ভয়ংকর বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধে ইনিংসের শেষদিকে দুর্দান্ত এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন কলিং অ্যাকারম্যান। ২৬ বলে ৪১ রানের সেই ইনিংসটি ডাচদের লড়াই করবার পুঁজি জোগায়। এই অ্যাকারম্যানও জন্মেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তাছাড়া ইনিংসের ১৬ তম ওভারে মিলারের দূর্দান্ত ক্যাচ ধরা রলফ ভ্যান ডার মারউই দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য ছিলেন। বাকি সবার মতই তিনি ক্যারিয়ারের চলার পথটা বদলে ফেলেছেন।

এই খেলোয়াড়দের অটুট নিবেদনেই এবারের বিশ্বকাপ তো বটেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটনটা ঘটিয়েছে নেদারল্যান্ডস। তাছাড়া আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেওয়ার টিকিটটাও কেটে ফেলেছে ডাচরা। সুতরাং নিশ্চয়ই এ কথা বলাই যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেই হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link