More

Social Media

Light
Dark

কণ্টক সিংহাসনের নতুন সম্রাট

এ যেন ‘গেমস অব থ্রোন্স’-এর  সেই ‘আয়রন থ্রোন’। যেখানে বসাটা এক স্বপ্ন। দীর্ঘ অপেক্ষা, যুদ্ধের নির্মমতা। তবুও যেন টিকে থাকা দায়। সেই আয়রন থ্রোন কাঁটা হয়ে চুবতে থাকে জীবনে। অতিষ্ঠ করে নিয়ে যায় ধ্বংসের দিকে। এমন এক উপমায় বেঁধে ফেলা যায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়কের পদটিকে।

বহু খেলোয়াড়ের হয়ত কলকাতার মত এক ফ্রাঞ্চাইজির অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়াটা স্বপ্ন। নিজেদেরকে প্রমাণ করেই তবে সেই দায়িত্বের ভারটা পাওয়ার যোগ্য হতে হয়। সে পথটা ততটা নির্মম না হলেও মধুর এক প্রতিদ্বন্দিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই পথ অতিক্রম করেই কত বাঘা খেলোয়াড়ই তো বসেছিলেন কলকাতার নাইটদের সিংহাসনে।

প্রথম অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, ইয়ন মরগান, গৌতম গম্ভীর, দীনেশ কার্তিক –  কত ভারীভারী নাম। তবে বলেছিলাম গেম অব থ্রোন্সের আয়রন থ্রোন্স এই অধিনায়কত্ব। যারাই অধিনায়ক হয়েছেন তাঁদের ক্যারিয়ারটাই যেন হয়ে গিয়েছিলো বিপন্ন।

ads

ফর্মহীনতার চূড়ান্ত পর্যায় যেন নিজেদের আবিষ্কার করতে শুরু করেন এরা সবাই। মরগান আর গম্ভীরের তো আইপিএল ক্যারিয়ারেরই ইতি হবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কি এক অলক্ষুণে সিংহাসন চিন্তা করুন! নেহাৎ এক কাকতালীয় ঘটনা মেনে আপনি নিতেই পারেন। আবার এই অদ্ভুত এক ঘটনার অবসান হয়ত ঘটাতে পারেন শ্রেয়াস আইয়ার।

কেননা ঘটা করে তাঁকে যে বসানো হয়েছে সেই কাঁটার সিংহাসনে। আসন্ন আইপিএলে শ্রেয়াসই কোলকাতার অধিনায়ক। ব্যাটার হিসেবে নিজের সামর্থের প্রমাণ ইতোমধ্যেই রেখেছেন শ্রেয়াস। গতবার লিগ পর্যায়ে তাঁর ব্যাটিং বেশ সহয়তা করেছিলো দিল্লীকে টেবিলের শীর্ষে থেকে লিগ পর্ব শেষ করতে।

অধিনায়ক শ্রেয়াসের তেমন কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও কোলকাটা নাইট রাইডার্সের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ভেঙ্কি মাইশোর বেশ আশাবাদী তাঁকে নিয়ে। মাইশোর বলেন, ‘সে (শ্রেয়াস) সর্বোচ্চ পর্যায়ে তাঁর ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রদর্শন করে আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। আমি আত্মবিশ্বাসী সে কলকাতার অধিনায়ক হিসেবেও সেরাদের একজন হবে।’

শ্রেয়াসের হয়ত এই অপয়া অধিনায়কত্ব নিয়ে খুব একটা বেশি জানাশোনা নেই। তাই তিনিও বেশ সানন্দে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শ্রেয়াস বলেন, ‘কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো মর্যাদারপূর্ণ এক দলকে নেতৃত্ব দেওয়াটা আমার জন্যে বেশ গর্বের। আইপিএল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি সংস্কৃতিকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার সুযোগ করে দেয়। আমি এত এত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের নেতৃত্ব দিতে মুখিয়ে আছি।’

তবে এই যে আনন্দ এবং গর্বোবধ তা কি দীর্ঘস্থায়ী হবে? হয়ত হবে। অলক্ষুণে এই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তো রীতিমত এখন দলের প্রধান কোচ। তিনিও শ্রেয়াসকে নিয়ে বেশ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘ভারতের ভবিষ্যৎ নেতাদের একজনকে দলে পেয়ে আমি বেশ উৎফুল্ল। তাঁর ব্যাটিং আমি খুব উপভোগ করেছি। আমি এখন মুখিয়ে আছি তাঁর সাথে কাজ করার জন্যে।’

শ্রেয়াস ভারত ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকাদের একজন সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে সত্যিকার অর্থেই যদি কোলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়কের দায়িত্ব যদি গেম অব থ্রোন্সের অপয়া আয়রন থ্রোনের মতো হয় তাহলে শ্রেয়াসের কি হবে? সে প্রশ্ন তোলা থাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link