More

Social Media

Light
Dark

আগ্রাসনে অদম্য শরিফুল

আগ্রাসনই তার পরিচয়। তবে শরিফুল ইসলাম সম্ভবত নিজেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পরিচয় দিতেই সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। তবে এবার সামনে তার বিশাল পরীক্ষা। হতে হবে ক্রিকেট বিশ্বের সেরাদের একজন। একদিন ট্রফি জয়ের নেশায় বুদ শরিফুলের হাতেই তো শিরোপা মানায়।

এবারের বিশ্বকাপে সেই শিরোপা জয়ের জন্যে নিশ্চিতভাবেই ছুটবেন শরিফুল ইসলাম। যুব বিশ্বকাপ জেতার পর দ্রুতই তার অভিষেক হয়েছিল জাতীয় দলে। তবে বছর তিনেক কঠোর পরিশ্রমই করতে হয়েছে তাকে। তবে তো মিলেছে বড়দের বিশ্বকাপ খেলবার টিকিট।

বাংলাদেশের পেস আক্রমণ ইতিহাসের সেরা সময়ই পার করছে। একটা সময় এই বঙ্গদেশে পেসার পাওয়াই ছিল দুষ্কর। শরিফুলরা তবুও চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন বলেই তো বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভার ইউনিট এখন পেস ইউনিট। শরিফুল ইসলাম বিশ্বকাপের মঞ্চে কতগুলো সুযোগ পাবেন সেটা নিশ্চিত নয়। তবে সময় এলে তার আগ্রাসনেই পুড়বে প্রতিপক্ষে সেটা অনুমান করাই যায়।

ads

তিনি এক্সপ্রেস বোলার নন। মোটামুটি গতি রয়েছে তার বলে। প্রতিনিয়ত হয়ত ১৪০ কিলো/ঘন্টায় বল ছুড়তে পারেননা। তবে তিনি বলকে শাসন অবশ্য করতে পারেন। তার বা-হাতের তর্জনী আর মধ্যমা তার কথা শোনে। তাতেই তো বলের গতিপথে ভরকে দিতে পারেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের।

তাছাড়া তার ছোড়া এক একটি বাউন্সারও যথেষ্ট ভয় জাগানিয়া। তিনি নিজের ক্ষমতা আর সীমাবদ্ধতা খুব ভাল করেই জানেন। তবে একটি বিষয় বেশ ভাল করেই তার রপ্ত করা। বিপদে ভরকে না যাওয়া। এমনও দিন তিনি দেখেছেন, যেদিন উইকেট পাননি। হাত ফসকে রান খরচ হয়েছে মুষ্টিবদ্ধ বালুর মত।

তবুও পরদিনই তিনি ফিরেছেন। নিজের চিরায়ত আগ্রসন নিয়ে। তিনি আরও খানিকটা তেজ নিয়েই বল ছুড়েছেন প্রতিপক্ষে ব্যাটারদের নিশানা করে। তাতে সফলতাও এসে ধরা দিয়েছে। হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দানে তিনি তারকায় পরিণত হননি। বরং নিজেকে সময় দিয়েছেন। একটু একটু করে নিজের উন্নতির জন্যে কাজ করেছেন।

যে চিত্র স্পষ্ট তার পরিসংখ্যানে। ২০২২ সালে ১০ ওয়ানডে খেলে মোটে ১২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। গড় করলে যা দাঁড়ায় ৩৩.৬৬। তবে সেই গড় বছর ঘুরতেই হয়ে গেছে প্রায় অর্ধেক। ১৮ গড়ে এই বছর তার শিকার ১৬ উইকেট। রান খরুচে তিনি। কারণ উইকেটের পেছনে ছুটেছেন সর্বদাই। তবে এই বছর রান খরচের পরিসংখ্যানও হয়েছে নিম্নগামী।

যা আবার প্রচণ্ডরকম ইতিবাচক। ৫ নিচের ইকোনমি রেটে এই বছর ৮ ইনিংস। কন্ডিশনের কিঞ্চিৎ সহয়তা পেলেই শরিফুল হয়ে উঠতে পারেন ভীষণ ভয়ংকর। হার না মানার যেই স্পৃহা নিজের মধ্যে ধারণ করে, সেটিও তার জন্যে, বাংলাদেশের জন্যে বেশ ইতিবাচক। এই অদম্য ইচ্ছে শক্তিই শরিফুলকে এগিয়ে দিতে পারে শিরোপার আরও একটু কাছে।

তাতে করে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ দলও খানিকটা এগিয়ে যাবে শিরোপার দিকে। তবে দলের বাকিদেরও তাকে সাহায্য করা চাই। দলের প্রতিটা খেলোয়াড়দের আসলে নিজেদের সর্বোচ্চটুকুই দিতে হবে নির্দিষ্ট দিনে। তবুও একটু বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে শরিফুল ও আর যারা তরুণ।

কেননা তারুণ্য নির্ভর একটা দলই বলা চলে এবারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলকে। খুব বেশি খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতা নেই এর আগের বিশ্বকাপ খেলবার। এমন একটা দলে আবার বৈশ্বিক শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়া খেলোয়াড়দের সংখ্যা হাতেগোনা।

তাদেরই একজন শরিফুল ইসলাম। তিনি চাইবেন এই ক্ষুদ্র সংখ্যার মধ্য থেকেও আলোক রশ্মি হতে। লাল-সবুজের পতাকার আরও এক উৎসবের সঙ্গী হতে। সেটা স্রেফ বল হাতেই না। শেষের দিকে বিশাল সব ছক্কা হাকিয়েও তিনি হতে পারেন উজ্জ্বলতম কোন নক্ষত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link