More

Social Media

Light
Dark

দক্ষ নাবিক পাল তুলেছে বইছে তরী নতুন দিশায়

শীতের সকাল। আড়মোড়া ভেঙে বাংলাদেশ জেগে ওঠার আগেই নতুন এক জয় সঙ্গী হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এসেছে বহুল আকাঙ্খার ফলাফল। ১৯ তম ম্যাচে গিয়ে সুদূর নিউজিল্যান্ডে হারানো গিয়েছে স্বাগতিকদের। তাও আবার নানান রকম রেকর্ড গড়ে।

জয়সূচক শেষ রানটাও এসেছে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। দল পেয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়। জয়ের বন্দর খুঁজে নেওয়ার কাজটা তিনি করেছেন সামনে থেকেই। দেখিয়েছেন পথ। একাট্টা করেছেন গোটা দলকে। তাইতো অচেনা এক কন্ডিশনেও বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ।

উইকেটের সহয়তা ছিল পেসারদের। তাইতো টস জিতে সোজা শান্তর সিদ্ধান্ত আগে বোলিং করবার। তার পেসাররা যে তাকে হতাশ করেননি এক ছটাক। তানজিম সাকিবের হাত ধরে নিউজিল্যান্ডকে পরাস্ত করবার দ্বার হয় উন্মোচিত। শরিফুল ইসলাম ছিলেন খানিকটা ছন্নছাড়া।

ads

তবে অধিনায়ক হিসেবে তো আস্থা রাখা চাই। আবারও দ্বিতীয় স্পেলে শরিফুলের হাতে বল তুলে দিলেন। নিউজিল্যান্ডের মিডেল অর্ডার লণ্ডভণ্ড করে দিলেন শরিফুল। সাকিবের সাথে জুটি বেঁধে নিউজিল্যান্ড বধের গদ্য লিখতে শুরু করলেন শরিফুল। যার উপসংহার টেনে দিয়েছেন সৌম্য সরকার।

মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। জয় তখন খুব দূরের কোন লক্ষ্য না। নাজমুল শান্ত সেই যাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবেন বলেই নেমেছিলেন বাইশ গজে। করেছেনও তাই। ১২১.৪২ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়েছেন ২০৯ বল বাকি থাকতেই।

৪২ বলে ৫১ রানের এক দারুণ ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়েই ছেড়েছেন মাঠ। আগ্রাসনের চিরায়ত ধরণেই ব্যাটিং করে গেছেন তিনি। আগ্রাসনটা যে অধিনায়ক হিসেবেও দেখাতে কার্পণ্য করেন না। এই তো ক’দিন আগেই সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটে এই নিউজিল্যান্ডকেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সাদা পোশাকে ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন শান্ত।

সে টেস্টেই নিজের অধিনায়কত্বের ছাপ ফেলতে শুরু করেছিলেন তিনি। সঠিক সময়ে বোলার পরিবর্তন। ব্যাটারকে মানসিক পীড়া দিতে প্রতি নিয়ত ফিল্ডারদের পরিবর্তন করেছেন তিনি। উইকেটের উদযাপন করেছেন, সাথে সাথ আরও খানিকটা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় ফিল্ডারদের সাজিয়েছেন। দ্বিতীয় টেস্টেও ছিল একই রকম চিত্র।

তবে নিজের জালে নিজেদেরই জড়িয়ে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ঠিক সে কারণেই সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি শান্তর বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডে গিয়েও সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি। তবে অভেদ্য দূর্গটায় সজোরে আঘাত অন্তত করা গেছে।

এদফাও শান্ত মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে নিজের হাতে থাকা অস্ত্রের পূর্ণ ব্যবহারটাই করেছেন তিনি। তাছাড়া নিজের কাজটুকুও করবার চেষ্টা প্রতিনিয়তই করে যাচ্ছেন। একজন ব্যাটার হিসেবে দলের জয়েও অবদান রাখার সর্বোচ্চ প্রয়াশ প্রতিফলিত হচ্ছে তার কাছ থেকে।

অধিনায়কত্বের ভারে নুইয়ে পড়েননি শান্ত। তিনি বরং আরও খানিকটা শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াবার রসদ পেয়ে গেছেন। সিলেট টেস্ট জয় কিংবা নেপিয়ারে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়, দুই ক্ষেত্রেই ব্যাট হাতে নিজের পারদর্শিতা ফুটিয়ে তুলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সেটাই বরং তার দৃঢ়তার পরিচয় দেয়।

অল্পের জন্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজার রান হলো না তার ওয়ানডে ক্রিকেটে। তবে নতুন দিনের মশাল হাতে তিনি এগিয়ে যাওয়ার বার্তাই বরং দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত অর্জনের ঝুলি ভরবে নিশ্চয়ই। বাংলাদেশের অর্জনের ঝুলিও তো আর খালি থাকবে না। শান্তর সাথে সমান্তরালে চলবে বাংলাদেশ কিংবা সময় দেবে সবকিছুর উত্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link