More

Social Media

Light
Dark

লিটনের সাথে কলকাতায় সাকিব: কেন ও কিভাবে!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) যেমন রোমাঞ্চ ছড়ায় ক্রিকেট ভক্তদের মনে, তেমনি রোমাঞ্চ ছড়ায় এই টুর্নামেন্টের নিলাম অনুষ্ঠানও। কোন খেলোয়াড় ডাক পাবেন, কোন দল-ই বা কার জন্য খরচ করবে উদার হস্তে সেটি জানার আগ্রহ থাকে সবার মাঝে। বিশেষ করে লাল-সবুজের প্রতিনিধি থাকায় এবারের আইপিএলের নিলাম নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা ছিল বাংলাদেশিদের মধ্যে।

বৃথা যায়নি বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের এত অপেক্ষা; আইপিএলের পরবর্তী আসরে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। দুইজনকেই স্কোয়াডে অন্তর্ভূক্ত করেছে  কলকাতা নাইট রাইডার্স। এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ রুপি ভিত্তিমূল্য ছিল অভিজ্ঞ সাকিবের আর পঞ্চাশ লক্ষ রুপি নির্ধারণ করা হয়েছিল উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাসের জন্য। এই দুই বাংলাদেশিকেই ভিত্তিমূল্যে নিতে পেরেছে কলকাতা।

অবশ্য নিলামের শুরুটা সুখকর ছিল না বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের জন্য। প্রথম দফায় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সাকিব আল হাসানের নাম ঘোষণা করলেও আগ্রহ দেখায়নি কোন দল। একই ঘটনা ঘটেছিল দুই বাংলাদেশি লিটন দাস এবং তাসকিন আহমেদের ক্ষেত্রেও। হতাশার এক নিলাম যখন শেষ পর্যায়ে তখনই বদলে যায় দৃশ্যপট; কাছাকাছি সময়েই সাকিব ও লিটনকে কিনে নেয় শাহরুখ খানের দল।

ads

যদিও তাসকিন আহমেদের নাম দ্বিতীয়বার তোলা হয়নি, আফিফ হোসেনর নাম উঠেনি কোনবারই। তবে বাংলাদেশীরা অন্তত সাকিব আর লিটনের ডাক পাওয়াতেই খুশী। দিল্লি ক্যাপিটালস তো আগেই রিটেইন করেছিল মুস্তাফিজুর রহমানকে, সবমিলিয়ে ২০২৩ সালের আইপিএলের আসরে দেখা যাবে বাংলাদেশের তিনজন তারকাকে। প্রকৃতির খেয়ালে একই ম্যাচেও একসাথে ল দেখা যেতে পারে তাদের।

নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে সাকিব আল হাসান আর লিটন দাস দুইজনেই হতে পারবেন কলকাতার নাইট রাইডার্সের বড় সম্পদ। অনেক বড় অংকে বিক্রি হওয়া ক্রিকেটারদের মতই পারফর্ম করার সামর্থ্য রয়েছে তাঁদের। মুস্তাফিজুর রহমানও হয়তো নিজের বোলিং জাদু দেখানোর জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান তো কলকাতার পুরনো সঙ্গী। ২০১২ এবং ২০১৪ সালে দলটির শিরোপা জয়ে সামনে থেকেই অবদান রেখেছিলেন ‘ময়না’। ৭১ ম্যাচের আইপিএল ক্যারিয়ারে সাকিবের রয়েছে কত কত ম্যাজিক মোমেন্ট। এবারও তেমন কিছু দেখাতে চাইবেন তিনি, সেই ভরসাও করা যায় তাঁর উপর। বিশেষ করে বোলার সাকিব একাই বদলে দিতে পারেন ম্যাচের গতি পথ।

অন্যদিকে গত দুই তিন বছরের বিবেচনায় লিটন দাস তো রীতিমতো বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের একজন। তিন ফরম্যাটেই রানের ফুলঝুরি দেখা যাচ্ছে এই স্টাইলিশ ব্যাটারের কাছ থেকে। টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে কাজে লাগানো কিংবা অ্যাংকরিং রোল – দুই ক্ষেত্রেই পারদর্শী লিটন। এছাড়া উইকেটের পিছনেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন এই ডানহাতি।

অবশ্য টি-টোয়েন্টির এই মারকাটারি যুগে সাকিব, লিটন দুইজনেই পিছিয়ে আছেন অন্যান্য বৈশ্বিক তারকাদের চেয়ে। এই যেমন কলকাতার মূল একাদশে জায়গা পেতে হলে সাকিবের বড় প্রতিপক্ষ সুনীল নারাইন। রহস্যময় স্পিন আর ব্যাট হাতে ঝড় তুলে ইতোমধ্যে নারাইন হয়ে উঠেছেন দলটির বড় অস্ত্র। তাঁর অফ ফর্ম ছাড়া সাকিবের সুযোগ পাওয়া কঠিনই বটে।

আবার একাদশে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ এগিয়ে আছেন লিটন দাসের চেয়ে। বিবিএল, পিএসএলসহ বিশ্বের সব ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তাই লিটনের আগে এই তরুণলে বাজিয়ে দেখতে চাইবে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট।

সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও ভাগ্যের ছোঁয়ায় নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ হয়তো পাবেন সাকিব আল হাসান এবং লিটন দাস। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেই মিলবে নিশ্চয়তা। একই সাথে গর্বিত হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। স্বদেশীদের বুক ফোলানোর এমন সুযোগ নিশ্চিতভাবেই হেলায় হারাতে চাইবেন না কেউই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link