More

Social Media

Light
Dark

আক্ষেপের বলে নাফিসের ব্যাটের আঘাত!

ঘোষণা দিয়ে ব্যাট-প্যাড তুলে রেখেছেন। তবে ব্যাটের প্রতি যে মায়া সেটা কি আর তুলে রাখা যায় বলুন। ছোট্ট বেলা থেকেই নাকি শাহরিয়ার নাফিসের ব্যাটের প্রতি ঝোঁক। প্ল্যাস্টিকের ব্যাট দিয়ে খেলার বয়সে তিনি তাঁর ভাইদের কাঠের ব্যাট নিয়ে খেলতে চাইতেন।

কান্নাকাটি করে একাকার অবস্থা করে ফেলতেন।  সেই নাফিস একদিন সত্যিকার অর্থেই ভারি ভারি ব্যাট ধরেছিলেন। ব্যাটের সাথে বাংলাদেশ দলের দায়িত্বটাও কাঁধে তুলে নিয়েছিল।

হোম অব ক্রিকেট প্রায় ফাঁকা। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা রয়েছেন এশিয়া কাপের মিশনে- সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে সেই মিশনে যোগ দিতে পারেননি লিটন দাস। ইনজুরি তাঁকে ছিটকে দেয় জাতীয় দল থেকে। সে ইনজুরি সেরে উঠেছে। তাঁকে এখন যে তাঁকে ফিরতে হবে মাঠে। তাইতো লিটন নিজের সরঞ্জামাদি নিয়ে হাজির মিরপুর একাডেমি মাঠে। সেখানেই ব্যাট করলেন খানিকক্ষণ।

ads

তবে লিটন ছাড়াও মাঠে এদিন অনুশীলন করেছেন শাহরিয়ার নাফিস। অনুশীলন ঠিক বলা যায় না, বরং বলতে হয় খানিক ব্যাট ধরবার অনুভূতিটুকু আবার চাঙ্গা করে নিলেন। শাহরিয়ার নাফিস সব ধরনের ক্রিকেট খেলা ছেড়েছেন। তবে ক্রিকেট ছাড়েননি। সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে মাঠের ক্রিকেট যে তাঁকে এখনও বেশ টানে। ওই যে কেজি খানেক ওজনের এক ফালি কাঠ সেটার মায়া থেকে মুক্তি তো আর সহজেই মেলে না।

তাইতো ছুটে নেমে গেলেন শাহরিয়ার নাফিস। তুলে নিলেন ব্যাট। রোমন্থন করলেন নিজের ফেলে আসা দিন। একসময় তো তিনিই ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম কাণ্ডারি। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের একটা দৃঢ় স্তম্ভ। বা-হাতের বিধ্বংসী এক ব্যাটার সত্ত্বা যখনই নেমেছে ব্যাট করতে তখনই আশার আলো জেগে উঠত সবার মাঝে। তিনি সে ভরসার জায়গাটা নিজেই তৈরি করে দিয়েছিলেন।

একাধারে আইসিসির উদীয়মান ক্রিকেটার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়া ছাড়াও তো কতশত অর্জন রয়েছে তাঁর। মাঝে অবশ্য পথভ্রষ্ট হয়েছিলেন। গিয়েছিলেন নিষিদ্ধ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল) খেলতে। আইসিসির আর বিসিবির সাথে জটিলতায় অনেকটা দূরে সড়ে গিয়েছিলেন। সেই দূরত্বটাই যেন কাল হয়। নিজেকে আর তেমনভাবে লাল-সবুজ জার্সিতে মেলে ধরতে পারেননি শাহরিয়ার নাফিস।

তবে ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে তাঁর ব্যাটিং গড়টা এখন অবধি বাংলাদেশের যেকোন ক্রিকেটারদের জন্যে নি:সন্দেহে ঈর্ষণীয়। নান্দনিকতার দেখাও মিলত তাঁর ব্যাটিংয়ে। তিনি যেন ছিলেন এক মুকুটহীন রাজা। তবে আক্ষেপটা হয় নিশ্চয়ই এখনও। ক্যারিয়ারটা খুব বেশি লম্বা তো আর তিনি করতে পারেননি। ক্যারিয়ারটা যতটা বর্ণিল হবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, ঠিক ততটা বর্ণিলও হয়নি শেষ দিকে এসে।

তবে সেসব কিছু এখন অতীত। সে সব আর মনেও করতে চাননা। তবে ক্রিকেট ব্যাট ধরার প্রলোভনটা এড়িয়ে যাওয়া তো মুশকিল। তিনি তাই দূরে থাকলেন না। ব্যাট-বলের সাথে খানিকটা সময় কাটালেন। সময় তিনি অবশ্য লিটনকে দিলেন। তাঁর যে এখন সহয়তা প্রয়োজন। মানসিকভাবে আরও দৃঢ়ভাবে ফিরে আসতে হবে তাঁকে। সে টোটকাই যেন দিলেন নাফিস, লিটনকে। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে এসে পড়েছেন ইনজুরিতে।

এমন পরিস্থিতিতে বড় ভাইয়ের দায়িত্বটুকুই যেন পালন করার চেষ্টা করলেন নাফিস। হয়ত তাঁর ক্ষুদ্র টোটকা আর একটু হাস্যজ্জ্বল কথোপকথন লিটনকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তুলবে। আরও বিধ্বংসী হয়ে ফিরবেন লিটন দাস। এভাবে অন্তত ক্রিকেটের সাথেই থেকে যেতে চাইবেন শাহরিয়ার নাফিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link