More

Social Media

Light
Dark

স্বমহীমার আগ্রাসী শাহীন

অধীর আগ্রহের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার দিনে ‘চেরি অন টপ’ শাহীন শাহ আফ্রিদির বোলিং। শুরুতেই ভারতের ব্যাটিং দূর্গে আঘাত। তাও আবার কি চোখ ধাঁধানো এক একটি বল! ভারতের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটারকে নিজের পকেটে পুরে নিলেন মাত্র ১ ওভারের ব্যবধানে। সেখান থেকেই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের শুরুটা করেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

রোহিত শর্মা আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনেই বলেছিলেন যে তাদের কাছে শাহীন আফ্রিদিরা নেই। তাদের কাছে যারা আছেন তাদেরকে খেলেই প্রস্তুতি সেরেছেন ভারতীয় অধিনায়ক। তবে ময়দানে সেই প্রস্তুতি যেন কোন কাজেই আসল না। শাহীন শাহর বিপক্ষে প্রস্তুতিটা যেন খোদ শাহীন আফ্রিদির বিপক্ষে খেলেও হয় না।

ম্যাচের দিনে তিনি যেন একেবারে অন্য একটা চরিত্রে পরিণত হন। এখনও পুরোপুরি ফিট সম্ভবত নন তিনি। নেপালের বিপক্ষেও প্রথম স্পেলের পর বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। একটু-আধটু সমস্যার মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন আফ্রিদি। তবে ভারতের বিপক্ষে ক্লান্তি আর খানিক চোট হারিয়ে যায় বহুদূরে। নিজের ঝুলিতে থাকা সব রকম অস্ত্র নিয়েই হাজির হন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

ads

আর তাতে প্রথম শিকারেই পরিণত হন রোহিত শর্মা। দূর্দান্ত এক ফুলার বল, অফ স্ট্যাম্পে পিচ করা বল, ভেতরের দিকেই ঢুকলো। সেই বলে ব্যাট ছোঁয়াবার সুযোগটা রোহিতে হয়নি। তবে বল ঠিকই ছুঁয়েছে স্ট্যাম্প। ১১ রানের মাথায় ভারতীয় অধিনায়ক প্যাভিলনে।

এরপরেই থেমে যাবেন শাহীন আফ্রিদি, তেমনটা ভাবা নেয়াহেত ভুল। তিনি থামেননি। থামেনি আফ্রিদির আগ্রাসন। ভারত দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটারটাও আফ্রিদির শিকারে পরিণত হন। বিরাট কোহলির উইকেটও উপড়ে ফেলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

শুরুর সেই ধাক্কা সামলে নিতে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে ভারতকে। তবে একটা সময় ঈশান কিষান ও হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটে ভর করে ভারত শক্ত অবস্থানে ফেরে। মাঝের ওভারগুলোতে পাকিস্তান থেকেছে একেবারেই উইকেট শূন্য। আফ্রিদিও পাক্সিতানকে উইকেট এনে দিতে পারেননি। লম্বা সময় ধরে বহাল ছিল ঈশান ও হার্দিকের যুগলবন্দী।

পাকিস্তানী বোলারদের শুরুর আগ্রাসনটা কোথাও একটা মিলিয়ে যায়। তবে শাহীন শাহ আফ্রিদি আবারও ফেরেন উইকেট শিকারের উৎসবে। একটু দেরী করেই ফেরেন। তবে তাতে ভারতের রান পাহাড় গড়ার মিশনে ব্যঘাত ঘটে। সেটার শুরুটা অবশ্য করেছিলেন হারিস রউফ। ঈশানকে বাবর আজমের ক্যাচে পরিণত করে পাকিস্তানি এই ‘স্পিডস্টার’।

তখনও অবশ্য বহাল তবিয়তে নিজের কাজটি করে যাচ্ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। তাকে ফেরানোটা প্রচণ্ড প্রয়োজন হয়ে পড়ে পাকিস্তানের জন্যে। বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধেন আফ্রিদি। এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়ে থাকা আগা সালমান ক্যাচ লুফে নিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি। শাহীনের স্লো অফ কাটার বুঝে উঠতে পারেননি হার্দিক। তাতে আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে পাকিস্তানের হাতে।

তবে শাহীন ভারতের রানের চাকা ধসিয়ে দেন সেই ওভারেই। রবীন্দ্র জাদেজাকেও ফেরান শাহীন। ভারত এক ওভারে দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটারকে হারায়। ভারতের ৩০০ রানের স্বপ্ন থমকে যায় মুহূর্তের মধ্যেই। শুধু উইকেট তুলেই যে শাহীন আটকে দিয়েছেন ভারতীয়দের তা কিন্তু নয়।

রান খরচের দিক থেকেও আফ্রিদি ছিলেন বেশ কৃপণ। কোটার সবগুলো ওভার শেষে মাত্র ৩৫ রান খরচা করেছেন পাকিস্তানের এই সুপারস্টার। ইকোনমি রেট ৩.৫০। দূর্দান্ত এই বোলিংয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে দেননি শাহীন। ক্যারিয়ারের আরও একটি ফাইফার যুক্ত না হওয়ার আক্ষেপ তবুও থেকেই যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link