More

Social Media

Light
Dark

ওয়াসিম আকরামকে দিয়ে কাপড় ধোয়াতেন সেলিম মালিক!

উপমহাদেশীয় ক্রিকেটে আলোর কমতি নেই। আবার আছে অনেক অন্ধকার গলি। সাবেক পাকিস্তানি গ্রেট ওয়াসিম আকরামের সৌজন্যে এবার তেমনই এক অন্ধকার গলির খবর পাওয়া গেল।

স্যুইংয়ের সুলতান খ্যাত আকরামের আত্মজীবনী ‘সুলতান: আ মেমোয়ার’। সেখানে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের জানা-অজানা নানা অভিজ্ঞতাকে জনসম্মুখে এনেছেন। এই বইতেই সাবেক এক সতীর্থের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযোগের বোমা ফাটালেন তিনি। আকরামের সরাসরি অভিযোগের তীর তাঁর তৎকালীন সতীর্থ ও সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিকের দিকে।

ওয়াসিম আকরাম তখন জাতীয় দলে নবাগত। সেই শুরুর দিনগুলোতে সতীর্থ সেলিম মালিকের দ্বারা তিনি বারংবার দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছিলেন। পাকিস্তানের হয়ে আকরামের অভিষেক ঘটে ১৯৮৪ সালে। এর ঠিক দুই বছর আগে মালিকের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক ঘটে। সেই হিসেবে মালিক সিনিওরিটির সুবিধা নিতেন বলে অভিযোগ এনেছেন ওয়াসিম আকরাম।

ads

ওয়াসিম আকরাম তাঁর আত্মজীবনীতে জানান যে, বিদেশ সফরে গেলে নিজের বয়সে বড় হওয়া ও দলে সিনিয়র হওয়ার সুযোগ নিয়ে সেলিম মালিক রীতিমতো তাঁকে ‘চাকর’ হিসেবে ব্যবহার করতেন। বিষয়টা এক সময় তীব্র হয়ে ওঠে যে। তখন, একবার ক্ষেপে গিয়ে প্রতিবাদ করেন ওয়াসিম আকরাম।

আকরাম তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘তিনি আমার জুনিয়র স্ট্যাটাসের সুবিধা নিতেন। সেলিম মালিক বড্ড নেতিবাচক ও স্বার্থপর ছিলেন। আমার সাথে একজন চাকরের মতো আচরণ করতেনন। তিনি আমাকে দিয়ে তাঁর শরীর ম্যাসাজ করার দাবি করতেন, আমাকে তাঁর জামাকাপড় এবং বুট ধুয়ে দেয়ার আবদার করতেন। একবার আমি ভীষণ রেগে গিয়েছিলাম। তখন রমিজ, তাহির, মহসিন, শোয়েব মোহাম্মদ সবাই মিলে আমাকে নাইটক্লাবে নিয়ে যায়।’

সতীর্থ হওয়া সত্ত্বেও আকরাম ও মালিক দুজন দুজনকে দেখতে পারতেন না একদম। আকরাম এমনকি মালিকের অধীনেও খেলেছিলেন। সেলিম মালিক ১৯৯২-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর অধীনে দলটি ১২ টেস্টের মধ্যে সাতটি এবং ৩৪টি ওয়ানডের মধ্যে ২১ টিতে জয়ের দেখা পেয়েছিল।

একই দলে খেললেও আকরাম ও মালিকের মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্কটা বরাবরই ছিল। পরে যখন ওয়াসিম অধিনায়ক হলে, তাঁর দলেও খেলেন সেলিম মালিক। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে মালিক খেলেন ওয়াসিমের নেতৃত্বে। সেবার রানার আপ হয় পাকিস্তান।

২০০০ সালের দিকে মালিক ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং আজীবনের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন। অবশ্য নিষিদ্ধ হলেও সেলিম মালিক ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুসের প্রতিও নানা অভিযোগ এনেছিলেন। মালিকের অভিযোগ ছিল- তিনি অধিনায়ক থাকাকালীন আকরাম তাঁর সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকতেন। কারণ আকরামের চোখ ছিল মালিকের অধিনায়কত্বের পজিশনটির দিকে।

সেলিম মালিক বলেন, ‘যখন আমি ওয়াসিমের কাছে বল হস্তান্তর করতে যেতাম, সে আমার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নিতো। তাছাড়া কারণ সে আমার সাথে কথা বলতো না। আমি অধিনায়ক হয়েছিলাম বলে তাঁর আমার উপর রাগ ছিল। ওয়াসিম এবং ওয়াকার উভয়েই আমাকে সরাতে চেয়েছিল।’

সেলিম মালিকের দাবি তিনি মাঠে ওয়াসিমকে আরও বলতেন, ‘ওয়াস, তুমি বিশ্বের এক নম্বর বোলার। এই ব্যাটারকে আউট করো। যদি তা নাও পার, এতে আমার কিছু যায় আসে না। তবে, এটা তোমার মান-সম্মানের ব্যাপার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যখন তাঁকে অনুপ্রাণিত করছি সে তখন আমাকে উপেক্ষা করে রান আপের দিকে হাঁটছে।’ সব মিলিয়ে এর আগে ওয়াসিম আকরামের বিরুদ্ধে একাধিকবার উপেক্ষা ও গোয়ার্তুমির অভিযোগই এনেছিলেন সেলিম মালিক।

এইদিকে ওয়াসিম আকরামের পক্ষ থেকে অভিযোগের ধরণটা আবার একেবারেই ভিন্ন। এই অভিযোগে খলনায়ক সেলিম মালিকই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link