More

Social Media

Light
Dark

আন্তর্জাতিক ময়দান থেকে পাড়ার ক্রিকেটার!

যাকে বলা হয় ‘টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ’, যার মাথায় রয়েছে অসংখ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা, ঝুলিতে রয়েছে অর্ধশত এবং শতরানের ইনিংস। বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট – বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম বড় পারফরমারও ছিলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান যুগের সেরা স্পিনার নাথান লিঁও বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসে, সাব্বির রহমানের ব্যাটিং স্টাইল দেখে বিরাট কোহলির সাথে তুলনা দেন। সেই সাব্বির রহমান এখন দেশের হয়ে ব্যাট হাতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচই খেলতে পারছে না।

২০১৬ সালে ঢাকায় টি টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে সাব্বির ছিলেন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট। যেখানে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, তিলকারত্নে দিলশান, শোয়েব মালিক, শহীদ আফ্রিদির মতো খেলোয়াড়দের মধ্যে সাব্বির হন মূল পর্বে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

ads

ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য হঠাৎ করেই ছিটকে পড়েন দল থেকে। এরপর প্রায় ৩ বছরের বেশি সময় তিনি জাতীয় দলের বাইরে। যেখানে ছিটকে পরার কিছু দিন আগেও ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের সাথে ওয়ানডে সিরিজে সাব্বির রহমানের একটি আছে ১০২ ও ৪৩ রানের বড় ইনিংস।

শ্রীলঙ্কার সাথেও ২০১৯ সালের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি হয় সাব্বির রহমানের খেলোয়ার হিসেবে শেষ ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামা।সেই সিরিজে সাব্বির প্রথম ম্যাচে তোলেন ৬০ রান।

২০১৯ বিশ্বকাপের আগে সাব্বির রহমান সম্পর্কে নির্বাচকরা বলেন সাব্বির রহমান থাকা মানে ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বর জায়গা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা।তবে সাব্বির রহমানকে নিয়ে কখনোই পুরোপুরি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেননি নির্বাচকরা।

নানা সময়ে সাব্বির রহমান জড়িয়েছেন বিতর্কে। সাব্বির রহমান নিষিদ্ধও হন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডিসিপ্লিনারি কমিটির সিদ্ধান্তে। তবে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাব্বির রহমানকে তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুরোধে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপের পরেই দুটো সিরিজ খেলার পর সাব্বিরকে আর বিবেচনায় আনা হয়নি জাতীয় দলে।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বাদ পড়েন সাব্বির। সাব্বির বাংলাদেশের হয়ে দুটো ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন।

সাব্বির রহমান এর রানের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে আমরা দেখি, বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে সাব্বির রহমান ১১টি টেস্ট ম্যাচ খেলে (২৪ গড়ে) করেছেন ৪৮১ রান । ওয়ানডে খেলেছেন ৬৬টি, রান তুলেছেন ১৩৩৩, গড় ২৫.৬৩। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাব্বির ৪৪টি ম্যাচ খেলে ৯৪৬ রান তুলেছেন, গড়ে প্রায় ২৫।

সেই সাব্বিরকে আজকাল একেবারেই স্থানীয় টুর্নামেন্টগুলোতে খ্যাপ খেলতে দেখা যায়? দোষটা মূলত কার? প্রথমত, সাব্বিরের নিজের দায়টাই সবচেয়ে বেশি। তিনি ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নিজের প্রতি তেমন যত্নশীল ছিলেন না।

তবে, দল থেকে ছিটকে পরার দোষটা শুধু তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়াটা ঠিক হবে না। সাব্বির রহমানের নিজের একাগ্রতার কমতি আছে অবশ্যই কিন্তু পুরো দোষটা অবশ্যিই এই ক্রিকেটারের নয়। বিসিবি কিংবা স্থানীয় কোচদেরও তাঁকে পরিচর্যার ক্ষেত্রে আরো আন্তরিকতা দেখানোর সুযোগ ছিল। সাব্বির প্রতিভা অবশ্যই বাংলাদেশে অভিনব। ফলে, তাঁর দিকে খেয়াল রাখার ক্ষেত্রে কোচদের কাজের ধরণটাও অন্যরকম হতে পারতো।

সাব্বিরের জন্য সময়টা শেষ হয়ে যায়নি। তবে, দিনকে দিন লড়াইটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে, একটা বিষয় ইতিবাচক যে, সাব্বির হাল ছাড়েননি। আর ইদানিং নিজের প্রতি আগের চেয়ে তিনি যত্নশীল হয়েছেন। শৃঙ্খলা বিষয়ক সমস্যাও কাটছে। এবার কেবল রানে ফেরার পালা, তাহলেই হয়তো দেশের ক্রিকেট এক অপ্রাপ্তির বেদনা থেকে মুক্তি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link