More

Social Media

Light
Dark

গোল্ডেন বলের অদম্য দৌড়

অনেক জল্পনা কল্পনা হয়েছে, হয়েছে অনেক বিচার বিশ্লেষণও। কাগজ কলমের হিসেব ছাড়িয়ে মাঠের ফুটবলও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে; ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে কে হতে পারে চ্যাম্পিয়ন – সেই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। কোয়ার্টার ফাইনাল ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, বাকি আছে আর মাত্র চার ম্যাচ। এরপরেই জানা যাবে বিশ্বসেরা দলটির নাম।

বিশ্বকাপের এবারের আসর শুরু হওয়ার আগে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বেশ কয়েকটি দলের নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছিল; কিন্তু টুর্নামেন্টের মাঝপথে সেসব দলের অধিকাংশই বাদ পড়ে গিয়েছে। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, ফ্রান্স, স্পেন, জার্মানি সবচেয়ে বড় নাম। অন্যদিকে শিরোপার দৌঁড়ে এখনো রয়েছে ক্রোয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা, মরক্কো এবং ফ্রান্স।

সম্ভাবনার হিসেবে এখন ফ্রান্সের দিকেই পাল্লাটা ভারি। ব্রাজিল এবং ইতালির পর তৃতীয় দেশ হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে ইউরোপীয় জায়ান্টরা। তবে উড়ন্ত ফর্মে থাকা আর্জেন্টিনা কিংবা অঘটনের জন্ম দেয়া মরক্কোকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। অন্যদিকে বর্ষীয়ান লুকা মদ্রিচের দল খুব করেই চাইবে গত আসরের অপূর্ণতাকে এবার পূর্ণতা দিতে।

ads

বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি কার হাতে উঠবে – সেটি নিয়ে যেমন আগ্রহ আছে, তেমনি আগ্রহ আছে গোল্ডেন বুট কিংবা গোল্ডেন বল নিয়েও। এই দুই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে অগ্রগামী কিলিয়ান এমবাপ্পে এবং লিওনেল মেসি। ক্লাব ক্যারিয়ারে দু’জনেই খেলেন পিএসজির হয়ে, চলতি মৌসুমে একসাথেই দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। আর সেটির পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন বিশ্ব মঞ্চেও।

এবারের বিশ্বকাপ আসরে সর্বোচ্চ পাঁচ গোল করেছেন ফরাসি তরুণ কিলিয়ান এমবাপ্পে। তাঁর পরেই আছেন স্বদেশী স্ট্রাইকার অলিভার জিরুদ এবং আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। এই দুইজনেই করেছেন চারটি করে গোল। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আরো আছেন তিন গোল করা গঞ্জালো রামোস, আলভারো মোরাতা, ইনার ভ্যালেন্সিয়া। তবে এদের কারোই আর গোলসংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ নেই।

অন্যদিকে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট এসেছেন আঁতোয়ান গ্রিজম্যান, হ্যারি কেন এবং ব্রুনো ফার্নান্দেজের কাছ থেকে। এছাড়া দুইটি করে অ্যাসিস্ট করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, লিওনেল মেসি, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ওসমান ডেম্বেলে, থিও হার্নান্দেজ, ইভান পেরিসিচ সহ আরো বেশ কয়েকজন। সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ সাতটি গোলে সরাসরি অবদান রেখেছেন ফ্রান্সের এমবাপ্পে এবং এরপরই আছেন লিও মেসি, এই আর্জেন্টাইন প্রত্যক্ষভাবে ছয় গোলে অবদান রেখেছেন।

অন্যদিকে গোলরক্ষকদের মাঝে কার হাতে উঠবে গোল্ডেন গ্লাভস তা নিয়েও রয়েছে আলোচনা। মাত্র চার ম্যাচ খেলেই ২১টি শট সেভ করেছিলেন পোল্যান্ডের ভয়চেক শেজনি। তারপরেই আছেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচ। রাউন্ড অব সিক্সটিন এবং কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার জয়ের নায়ক এই তরুণ। গোল্ডেন গ্লাভসের লড়াইয়েও তিনি সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। এছাড়া নেদারল্যান্ডসের অ্যান্দ্রেস নোপার্ট, সার্বিয়ার মিলিনকোভিচ সাভিচরা দেখিয়েছেন নিজেদের হাতের জোর।

উদীয়মান খেলোয়াড়দের মাঝে বেশ কয়েকজন বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের জাত চেনাতে ভুল করেননি। তরুণ বুকায়ো সাকা, মার্কাস রাশফোর্ড, রিচার্লিসন করেছেন তিনটি করে গোল। এছাড়া ভিনি জুনিয়র দুই অ্যাসিস্ট আর এক গোল করে ছাপ রেখেছেন নিজের। অরেলিয়েন শুয়েমেনি, ম্যাক অ্যালিস্টার, জামাল মুসিয়ালা, জুড বেলিংহ্যামরাও দর্শকদের মুগ্ধ করতে ভোলেননি।

আর মাত্র কয়েকদিন, এরপরেই জানা যাবে কে জিতবে এবারের বিশ্বকাপ; কাদের হাতেই বা উঠবে মর্যাদার সব পুরস্কার। ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া কোন উপায় নেই, কেননা অঘটনের এই ধ্রুপদী লড়াইয়ে সম্ভাবনার অংক করা অপ্রয়োজনীয়ই বটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link