More

Social Media

Light
Dark

জশ দ্য বস

ছোটবেলা থেকেই রাগবি, হকি, টেনিস আর ফুটবলে ছিলেন সমান পারদর্শী। যার জন্য হাতে কব্জির জোরটাও স্বাভাবিকভাবে একটু বেশি। একটু বেশি না বলে অনেক বেশি বললেও ভুল হবে না। যার কারণে বলকে সহজেই বাউন্ডারি ছাড়া করতে পারেন জশ বাটলার।

রাজস্থান রয়্যালসের (আরআর) এই ওপেনারের ব্যাট যেন চার-ছক্কা ছাড়া কথাই বলে না। প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালানোটা বাটলারের জন্য এখন নিত্যদিনের রুটিন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ব্যাট হাতে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। জশের ব্যাটিং প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের কপালে দাগ কাটছে চিন্তার!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৬৪ বলে ১২৪ রানের তাণ্ডবময় এক ইনিংস। ঠিক যেখানে তিনি শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই আবার শুরু করেছেন এবারের আসরেও। নিজেদের প্রথম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের (এসআরএইচ) বিপক্ষে খেলেন ২৮ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। পরের ম্যাচেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের (এমআই) বিপক্ষে খেললেন ৬৮ বলে ১০০ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরির দেখাও মিললো বাটলারের ব্যাটেই।

ads

সবশেষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর (আরসিবি) বিপক্ষে খেললেন ৪৭ বলে ৭০ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাও আবার স্রেফ ৬ ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি, নেই কোনো চারের মার! ৪৭ বলে ১৪৯ স্ট্রাইক রেটে করেছেন অপরাজিত ৭০ রান। দীনেশ কার্তিক-শাহবাজ আহমেদের তাণ্ডবের কারণে ম্যাচটা হেরে গেলেও অবশ্য রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন বাটলার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটিও চার না মেরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা এখন বাটলারের দখলে। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টে কোনো চার না মেরেই ৬৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এলটন চিগুম্বুরা। এখন পর্যন্ত এটি ছিল চার না মেরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। এরপর ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে চার না মেরে ৬৩ রান করেছিলেন ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস। তবে এই দু’জনকে ছাপিয়ে এই রেকর্ডে এখন বাটলারের নাম।

ব্যাট হাতে শুধু সেঞ্চুরি নয়, বাটলারের স্ট্রাইক রেটও স্পর্শ করেছে সেঞ্চুরির মাইলফলক! চলতি আসরে ৩ ম্যাচে ১৪৩ স্ট্রাইক রেটে প্রায় ১০৩ গড়ে করেছেন ২০৫ রান! তিন ম্যাচেই মাথায় নিয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের ‘অরেঞ্জ ক্যাপ’।

এবার যদি প্রশ্ন করা হয়, বাটলারকে বর্তমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা বললে কি ভুল হবে? গেল দুই বছরে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ২২ ম্যাচে করেছেন ৮৮০ রান! গড় ৫৭ আর স্ট্রাইক রেট ১৪৭! ২২ ম্যাচের আটটিতেই করেছে ফিফটি, আছে এক সেঞ্চুরিও!

বাটলারের এই বদলে যাওয়ার পেছনে তাঁর ব্যাটিং পজিশন। ওপেনিংয়ে উঠে আসার পর থেকেই ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের জন্য যমদূত রূপে নিজেকে জাহির করেছেন বাটলার। ওপেনিংয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ ইনিংসে ৫৭ গড়ে ১১ ফিফটি আর ১ সেঞ্চুরিতে করেছেন ১১৪৪ রান! অপরদিকে চার, পাঁচ, ছয় ও সাত নম্বর পজিশনে ৫২ ইনিংসে মাত্র ২৪ গড়ে ১৩৪ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন মাত্র ৯৯৬ রান! বাকি পজিশনগুলোর পারফরম্যান্সের তুলনায় ওপেনিংয়ের পারফরম্যান্সে আকাশ-পাতাল পার্থক্যটা স্পষ্ট।

দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভ কিংবা মিড উইকেটের উপর দিয়ে নজরকাঁড়া ছক্কা। পুল শটে বাউন্ডারি কিংবা পেসারদের বিপক্ষে স্কুপ শট – বাটলারের ঝুলিতে শটের কমতি নেই। বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করাটাই তাঁর মূল লক্ষ্য। ইনিংসের প্রথম বল থেকেই তিনি চেষ্টা করেন বোলারের উপর চড়াও হওয়ার। তাঁর দিনে বোলাররাও যে থাকে নিরুপায়! প্রতিপক্ষের অধিনায়কও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে থাকেন বাটলার শো!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link