More

Social Media

Light
Dark

তানজিম সাকিবের আগ্রাসনই শেষ কথা নয়

ইনসাইড এডজ, উইকেট গেল উপড়ে। পাথুম নিসাঙ্কা পরিণত হলেন বিশ্বকাপে তানজিম হাসান সাকিবের প্রথম উইকেটে। দিনের শুরুটা আগ্রাসী মনোভাবে করেছেন। খানিকটা আগ্রাসন তিনি দেখালেন কুশল মেন্ডিসকেও।

সেটাই বরং সাকিবের শক্তির জায়গা। যদিও এর আগেই উইকেটের দেখা পেয়ে যেতে পারতেন তানজিম সাকিব। নিজের প্রথম ওভারেই পাথুম নিসাঙ্কাকে ফেরাতে পারতেন তিনি। তবে স্লিপে ফিল্ডার ছিলো না, তাতে বাউন্ডারিই হজম করতে হয়েছে সাকিবকে।

এই জায়গাটা আবার তানজিম সাকিবের সবচেয়ে বড় দূর্বলতার জায়গা। ‘গেম অ্যাওয়ারনেস’ বড্ড প্রয়োজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে। সেখানেই বেশ ঘাটতি রয়েছে সাকিবের। তিনি যখন নতুন বল হাতে বোলিং করতে এলেন, তখন নিজেও হয়ত ভাবেননি বল ব্যাটের খোঁচা লেগে স্লিপ অঞ্চলে ক্যাচ উঠবে।

ads

তারই উচিত ছিল অধিনায়ককে বোঝানো যে তিনি ঠিক কেমন বল করতে চলেছেন। অবশ্য তানজিম সাকিব নিজেও হয়ত আন্দাজ করতে পারেননি যে তিনি ঠিক কোন লাইন আর লেন্থে বল ছুড়বেন। সাকিবের এই দূর্বলতার জায়গা বেশ পুরনোই বলা চলে।

তিনি যেন ঠিক বুঝে উঠতে পারেননা প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে কিভাবে কাবু করা যায়। ম্যাচের পরিস্থিতি, উইকেটের কন্ডিশন ও স্টেডিয়ামের আবহাওয়া পড়তে পারাটাও খেলার একটা বিশাল এক অংশ। সেখানেই ঘাটতি রয়েছে তানজিম হাসান সাকিবের। সেই অনুযায়ী বল করতে হয়। অধিনায়ককে পরামর্শ দিতে হয় ফিল্ডার সাঁজাতে।

সাধারণত বোলারদের চাহিদা মেনেই ফিল্ডার সাজিয়ে থাকেন অধিনায়করা। সে কাজটির অভাব দেখা গেছে সাকিবের বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে। ফিল্ডার সাজানোর এই দায় অবশ্য অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও দেওয়া যায়। তবে তানজিম কোন ভাবেই সে দায় এড়াতে পারেন না। তানজিমকেই ভরসা জোগাতে হতো অধিনায়ককে। সেটা করতে পারেননি তরুণ পেসার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তানজিম হাসান সাকিবের অভিষেক খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। জাতীয় দলের জার্সি গা চাপানোর পরই আসলে তাকে সমালোচনা ঘিরে ধরে। সেই সমালোচনা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় পারফরমেন্স। সাকিব অবশ্য নিজের পারফরমেন্সের কার্য্যকারিতা বাড়াতে নিজের স্কিলের উন্নতি করেছেন।

তার বোলিং ঝুলিতে অস্ত্রের কমতি নেই। স্লোয়ার, ব্যাক অব হ্যান্ড ডেলিভারি, ইয়োর্কার, কাটার, বাউন্সার সব ধরণের ডেলিভারি তিনি করতে পারেন অনায়াসে। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ পরবর্তী সময়ে নিজের গতির বেশ ভাল উন্নতি করেছেন তিনি।

প্রায় ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বল করবার দক্ষতা অর্জন করেছেন। বোলিংয়ের নানামুখী বৈচিত্র্যও রপ্ত করেছেন তানজিম সাকিব। এখন স্রেফ তার গেম অ্যাওয়ারনেস বাড়ানো প্রয়োজন। সেটা অবশ্য দ্রুতই করতে হবে তানজিম হাসান সাকিবকে। নতুবা দ্রুতই খয়ে যাওয়া নক্ষত্রে পরিণত হবেন তিনি।

নিজের বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচে তিন উইকেট পেয়েছেন তিনি। নিশ্চয়ই বেশ দারুণ এক শুরু। তবে রান খরচ করেছেন ৮০টি। সেটাও নিশ্চয়ই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা প্রয়োজন। তেমনটা কেবল সম্ভব হবে ম্যাচ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পড়তে পারার মধ্য দিয়ে।

নতুবা সব ধরণের বৈচিত্র কেবল বিফলেই যাবে। সমালোচনাও পিছু ছাড়বে না। পরিশেষে হারিয়ে যাওয়ার তালিকায় যুক্ত হবে তরুণ এই পেসার। তবে হারিয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা ভুলে নিজেকে আরেকটু মেরামত করাতেই মন দেওয়া উচিৎ তাঁর। আর সাথে সহজাত ব্যাটার পরিচয়টা হবে বাড়তি একটা পাওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link