More

Social Media

Light
Dark

পোপেই এখন হোপ

কল্পনার রাজ্যে কোনো এক সময় ভেবে রেখেছিলেন সুযোগ পেলেই টপ অর্ডারে খেলবেন। সেই সুযোগটা পাওয়া হচ্ছিল না। নিজে থেকেও কখনো তিনি এমন কোনো সদিচ্ছার কথা জানাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছিলেন একজন মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে। প্রচুর রান করেছেন সারের হয়ে। ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে তিনি হতে পারেন এক ভরসার নাম – এমনটা ছিল অনেকের ধারণা। তবে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে নিজের সামর্থ্যের সেরাটা দিতে পারেননি তিনি।

টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের দুরবস্থা লম্বা সময় ধরে। সেই দুরবস্থায় দলের ব্যর্থদের তালিকায় নাম লিখান ওলি পোপও।

অভিষেকের টেস্টে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। পরের ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টেও ছিল চরম ব্যর্থতার ছাপ। অভিষেক টেস্ট সিরিজে ব্যর্থতার খাতায় নাম লিখিয়ে সাদা পোশাকের যাত্রা শুরু। এরপর কেটে গেছে চল্লিশ ইনিংস; সেঞ্চুরির দেখা আর নেই। ব্যাটে রানও পাচ্ছিলেন না নিয়মিত। সাদামাটা পারফরম্যান্সেই চলছিল পোপের ক্যারিয়ার।

ads

ইংল্যান্ডের হয়ে বেন স্টোকসের টেস্ট অধিনায়কত্ব আর কোচ হিসেবে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যুগের শুরু। ১৭ ম্যাচে এক জয়ের পর আবার ঘুরে দাঁড়ালো ইংল্যান্ড। বেশ কিছু পরিবর্তনে দেখা মিলল জয়ের।

প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। আবারও লর্ডস টেস্ট। তবে পজিশনে ব্যাপক পরিবর্তন। লোয়ার মিডল অর্ডার থেকে উন্নীত হলেন তিনে। মনে মনে হয়ত ভেবে রেখেছিলেন সুযোগ পেলে উপরে খেলতে চান। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে এত সহজে ধরা দেবে সেটি হয়ত ভাবেননি তিনি।

কিন্তু দল জয় পেলেও লর্ডসে পোপের নামের পাশে যোগ হল আরও এক ব্যর্থতা। প্রথম টেস্টে করলেন দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৭ ও ১০ রান। তবু কোচ ও অধিনায়ককে পাশে পেলেন পোপ। অভিষেক সিরিজের পর আবার ট্রেন্ট ব্রিজে মাঠে নামা। পেছনের ব্যর্থতা মুছে দিতে প্রয়োজন নজরকাঁড়া একটা ইনিংসের।

কোচ আর অধিনায়ককে এবার নিরাশ করেননি তিনি। নান্দনিক এক ইনিংসে দেখা পেলেন মেইডেন টেস্ট সেঞ্চুরির। ৪২ ইনিংস খেলেছিলেন জো রুটের অধিনায়কত্বে। সেঞ্চুরির দেখা যখন পেলেন, দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস; কিন্তু ক্রিজে আরেকপ্রান্তে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুট। ড্রেসিং রুমের বেলকনি থেকে হাত তালিতে পোপের সেঞ্চুরির অভ্যর্থনা দিতে ভুল করেননি স্টোকস, ম্যাককালাম।

১৪৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ক্যারিয়ারে আগে কখনোই তিনে ব্যাট করেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছিলেন মিডল অর্ডারে। পোপের উপর সবাই ভরসা হারালেও টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রেখেছিলেন। মিডল অর্ডার থেকে উঠিয়ে আনেন তিনে; যেখানে তিনি অপরীক্ষিত একজন। ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, কাইল জেমিসন, ম্যাট হেনরিদের মত পেসারদের সামনে দিলে এক অগ্নি পরীক্ষা।

আর সেই পরীক্ষায় সহজেই উতরে গেলেন পোপ। ২৩৯ বলে ৩ ছক্কা ও ১৩ বাউন্ডারিতে ১৪৫ রানের অসাধারণ একটা ইনিংস উপহার দিলেন দলকে। চার বছর আগে এই ট্রেন্ট ব্রিজে অভিষেক সিরিজে ভারতের বিপক্ষে দুই ইনিংসে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে ক্যারিয়ারের শুরু করেছিলেন পোপ। সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ট্রেন্ট ব্রিজে তুলে নিলেন মেইডেন সেঞ্চুরি।

তিনে এখন পোপের আশার আলো দেখছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই এক পরিবর্তন হতে পারে ইংল্যান্ডের জন্য তুরুপের তাস। দেখা যাক এই তুরুপের তাস কতদূর নিয়ে যেতে পারেন নিজের আলোকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link