More

Social Media

Light
Dark

স্বপ্ন পূরণের দ্বিতীয় সিঁড়ি

সেমিফাইনালে পেরুকে ১-০ গোলে পরাজিত করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেওয়ার সময়ই ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে আর্জেন্টিনাকে চেয়েছিলেন। হয়তো নেইমারের চাওয়া পূরণ করতেই কলম্বিয়াকে পরাজিত করে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসির দল।

এবার ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে শিরোপা জিততে চান নেইমার। প্রথম স্বপ্ন পূরণ শেষে এখন দ্বিতীয়টি পূরণের পথে রয়েছেন তিনি। একটা সময় দক্ষিণ আমেরিকা চ্যাম্পিয়নশিপ নাম নিয়ে শুরু হয়েছিল মহাদেশীয় শ্রেষ্টত্বের এই আসর। নাম পরিবর্তন করে পরে হয়ে যায় কোপা আমেরিকা কাপ।

এরই মধ্যে মোট নয়বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে সাতবার ডিয়েগো ম্যারাডোনর দেশ হাসলেও পেলের দেশ জিতেছে মাত্র দুটিতে। সে হিসেবে যে কোন দলই জিততে পারে কোপার শিরোপা। এদিকে এখন পর্যন্ত ২০ বার ফাইনালে নয়বার শিরোপা উল্লাসে মাতার সুযোগ হয়েছে নেইমারদের। অপরদিকে আর্জেন্টিনা ২৮ বার ফাইনালে খেলে ১৪ বার শিরোপা উল্লাসে মাতার সুযোগ পেয়েছেন। মহাদেশীয় কোন টুর্নামেন্টে এতবার শিরোপা জেতার রেকর্ড নেই কোন দলেরই। তবে সর্বশেষ কয়েকটি আসরে আবার ব্রাজিল নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে।

ads

সর্বশেষ দুটি আসরই এর পক্ষে কথা বলতে যথেষ্ট। সে কারণে ব্রাজিলকে এবারের ফাইনালে ফেবারিট বলতে হচ্ছে। যদিও মেসিকে সর্বকালের সেরা বলেছেন ব্রাজিলের দানি আলভেজ। স্বদেশি নেইমারকে সময়ের সেরা বলেছেন সাবেক বার্সা ডিফেন্ডার। তবে নিজের প্রিয় খেলোয়াড় হিসেবে মেসির দলকে পরাজিত করে শিরোপা জেতার লক্ষ্য স্থির করেছেন নেইমার। সেটি যে সহজ নয় তা বলাই বাহুল্য।

বিশ্ব ফুটবলই যেখানে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বলতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় সেখানে একটি দেশ অপর দেশকে পরাজিত করে শিরোপা জিতলে এর গুরুত্ব বেড়ে যায় কয়েকগুন। মেসির প্রতি নেইমারের দুর্বলতা বেশ পুরনো। তবে মাঠে কিন্তু কেউ কাউকে একচুলও ছাড় দেন না। পেশাদারী ফুটবলে এটি কোনভাবেই যে সম্ভব নয়। মেসি যেমন কোপায় আর্জেন্টিনায় শক্তির উৎস ব্রাজিলেরও বেলায়ও তেমনি মেসি। পুরো টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত খেলেছে ব্রাজিল, সেটি নেইমারের পায়ের ছোঁয়াতে। সেমিফাইনালে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচেও নেইমার দলকে জিতিয়েছেন।

বা প্রান্ত থেকে তার বাড়িয়ে দেওয়া বলেই লুকাস পাকুয়েতা গোল করে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। ইকুয়েডরের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচে নেইমারকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। সেই ম্যাচে ড্র করে পয়েন্ট খোয়ালেও সেটিতে কোন সমস্যা হয়নি কোয়াটারে যেতে। নেইমার ব্রাজিলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি বোঝা যাবে একটি পরিসংখ্যান দিলেই। এখন পর্যন্ত দেশের জার্সি গায়ে ১১০ ম্যাচ খেলে ৬৮ গোল করেছেন নেইমার।

এছাড়া ৪৯ টি গোলে সতীর্থদের সহায়তা করেছেন। সবমিলিয়ে ১১৭ টি আন্তর্জাতিক গোল অবদান রাখা নেইমারকে অবিশ্বাস্য না বলে কোন উপায় নেই। দলে তার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু সেটিও এখানে পরিস্কার। কোপা আমেরিকার নক আউট পর্বে সর্বশেষ চারটি ম্যাচের সবকটিতে ব্রাজিল হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকে। ২০০৭ সালের ফাইনালে মেসি থাকলেও পেরে ওঠেননি রবিনহো-আলভেজদের নিয়ে গড়া দলের সাথে।

এবার যতটা না বদলা নেবার তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি শিরোপা জেতার। সেটি যে অনেকটাই অসম্ভব সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা। নেইমার সে কারণেই জেতার লক্ষ্যটাকে বেশি করে স্থির করেছেন। যে কোপা এবার অনিশ্চিত ছিল সেটিতে ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল নিশ্চয়ই শিরোপা জিতে উল্লাসটা করতে চাইছেন।

কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা ঘুরে নিজ দেশে আসর আয়োজনের পর শিরোপা স্বপ্ন দেখাটা বাড়াবাড়ি কিছু নয়। প্রিয় খেলোয়াড়ের প্রতিপক্ষ হিসেবে তাই শিরোপা জেতার লক্ষ্যটাই এখন নেইমারের। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ মানেই উত্তেজনায় ঠাসা থাকে। সেই আঁচই এবারের ম্যাচে থাকবে। তবে বাংলাদেশে কিছুটা হলেও যে বেশি থাকবে সেটি বোঝাই যাচ্ছে। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে একে অপরকে বিদ্ধ করছেন তাতে করে মাঠের লড়াইটা যে সহজ হবে সেটি বিশ্লেষকরা বলেই দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link