More

Social Media

Light
Dark

ড্রাগনকে খোঁচানোর বিপদ…

১৯৯৩ সাল, বেনসন অ্যান্ড হেইজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম ফাইনাল। মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ২৩৯! রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার দারুণ শুরু!

সদ্যই এক ওপেনারকে ফিরিয়ে ছন্দে এসেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দানব কার্টলি অ্যামব্রোস! ওয়ান ডাউন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসলেন ডিন জোন্স! বোলিং প্রান্তে অ্যামব্রোস তখন লেজ উঁচিয়ে অপেক্ষমান। কিন্তু বাঁধ সাধলেন ডিন জোন্স। পূর্ব পরিকল্পনামত আম্পায়ারকে অভিযোগ করে বসলেন অ্যামব্রোসের বোলিং হ্যান্ডের সাদা রিস্টব্যান্ড নিয়ে। ওটা না খুললে ব্যাটিং করবেন না তিনি!

আম্পায়ার পড়লেন মহা ফাঁপরে! প্রায় সাত ফুটি দানবকে রিস্টব্যান্ড খুলতে রাজি করানো! ধারাভাষ্য কক্ষে রিচি বেনোর আওয়াজ, ‘হি হ্যাজ টু কনভিন্স দ্য জায়ান্ট!’

ads

অ্যামব্রোস রিস্ট ব্যান্ড খুললেন! প্রথম বলটাই সাঁই করে বের হয়ে গেল ডিনের পাশ দিয়ে! পরেরটা হাঁটুতে, পরেরগুলো এক একটা মিসাইল! দানব রেগে গেছে! একটু আগেই করা ডেলিভারিগুলো থেকে মিনিমাম ৬/৭ কিলোমিটার/আওয়ার দ্রুতগতিতে ডেলিভার করা হচ্ছে! ডিনো কোনমতে অ্যামব্রোসকে রুখলেন, কিন্তু বাকিরা স্রেফ উড়ে গেল! অস্ট্রেলিয়া বনাম অ্যামব্রোসের এই লড়াইয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তীরে তুললেন অ্যামব্রোস!

দ্বিতীয় ফাইনালেও তিন উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দিয়ে ম্যান অব দ্য ফাইনাল সেই অ্যামব্রোসই।

ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। সফরের টেস্ট সিরিজে ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে আবারও হন্তারক অ্যামব্রোস! এরপর সেই ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম পারফরম্যান্স!  ১ রান খরচায় ৭ উইকেট!

সিরিজ শেষে বোর্ডার বলেছিলেন, ডিনো ম্যাচের আগেই যখন বলল সে অ্যামব্রোসের রিস্ট ব্যান্ড খুলতে যাচ্ছে, আমরা তখনই বারণ করেছিলাম। ইউ নেভার টিকেল এ ড্রাগন, নেভার মিনস নেভার!

এই ঘটনা নিয়ে অসংখ্য বার চর্চা হয়েছে। অসংখ্য আর্টিকেল লেখা হয়েছে। অন এয়ারে অসংখ্যবার ডিন জোন্সকে এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে হয়েছে। হোয়াই ডিন? জোন্স বরাবরই বলেছেন, ‘ইট ওয়াজ আ মিসটেক!’

তবুও ডিনো এড়াতে পারেননি প্রশ্নটি। কারণ এই একটি ঘটনাই একা হাতে একটি দলকে পুরো সিরিজেই গুড়িয়ে দেবার দৃষ্টান্ত তৈরি করিয়েছিল! ডিনো চলে গেছেন, তাকে আর এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে হবে না। এমব্রোজকে প্রশ্ন করলে তিনিও আজকাল শুধু মুচকি হেসে এড়িয়ে যান। তবুও লেখকের লেখায় উঠে আসে সেই ঘটনা! বারবার মনে করিয়ে দিয়ে যায় ‘ইউ নেভার টিকেল আ ড্রাগন, নেভার মিনস নেভার!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link