More

Social Media

Light
Dark

এলোমেলো মুস্তাফিজ, কালেভদ্রে কার্য্যকর

সিলেটের পিচ তখন পেসারদের অনুকূলে; টসে জিতে ফিল্ডিং নেয়া বাংলাদেশ পিচের সুবিধা আদায় করে নিতে চেয়েছে পেসারদের দিয়ে। তাসকিন আহমেদ এবং হাসান মাহমুদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে সেই চাওয়াকে পূর্ণতা দিয়েছেন। বাইশ গজে আগুন ঝরাচ্ছিলেন দুই পেসার, কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমান আসতেই দেখা মিললো ভিন্ন চিত্রের।

একসময় যাকে ভাবা হতো বাংলাদেশের স্ট্রাইক বোলার, সেই মুস্তাফিজের হাতে বল দেখে যেন হাফ ছেড়েছেন আফগানিস্তানের ব্যাটাররা। তাসকিন, হাসানদের বলের উত্তাপে যারা ছিলেন খোলসে বন্দি, তাঁরাই হাত খুলে খেলতে লাগলো ফিজের ওভার।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে এই বাঁহাতিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মোহাম্মদ নবী, ওভারের শেষ বলেও জাদরানের ব্যাট থেকে এসেছে আরেকটি বাউন্ডারির মার। সবমিলিয়ে এক লেগবাই সহ তেরো রান এসেছে মুস্তাফিজুর রহমানের সেই ওভারে। অথচ এর আগে ফাস্ট বোলারদের করা চার ওভারে রান এসেছে মাত্র ২১।

ads

বৃষ্টির বাধা শেষে খেলা মাঠে গড়ানোর পর আবারো মুস্তাফিজুর রহমানকে বোলিংয়ে এনেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এবার যেন আরো ছন্নছাড়া দ্য ফিজ, প্রথম বলেই ওয়াইড। পরের বলে অভিজ্ঞ নবীকে আউট করেছেন ঠিকই কিন্তু নতুন ব্যাটারকে মোটেই চাপে ফেলতে পারেননি। এক চার আর এক ছয়ে নিজের দ্বিতীয় ওভারে তিনি খরচ করেছেন পনেরো রান।

অবশ্য ডেথ ওভারে পুরনো কাটার মাস্টারের দেখা মিলেছে। বাউন্ডারির খোঁজে থাকা দুই আফগান আজমতউল্লাহ ওমরজাই এবং কারিম জানাতকে পরাস্ত করেছেন বেশ কয়েকবার। মাত্র তিন রানের বিনিময়ে এই ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন ইন ফর্ম অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহকে।

তিন ওভারের স্পেলে দিয়েছেন ৩০ রান, আর ঝুলিতে পুরেছেন দুই উইকেট। ইকোনমি বরাবর ১০, যেখানে আফগানিস্তান রান তুলেছে মাত্র ৬.৮২ রানরেটে। ফলে এটা স্পষ্ট যে সতীর্থ বোলারদের চেয়ে অনেক বেশি খরুচে বোলিং করেছেন তিনি, ডেথ ওভারের ওভার বাদ দিলে ফিজের পরিসংখ্যান তো আরো বাজে।

নিঁখুত লাইন, লেন্থ কিংবা বুদ্ধি খাটিয়ে বোলিং – মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম দুই ওভারে এসব কিছুই দেখা যায়নি। তিনি যে খেই হারিয়েছেন অনেকটা, সেটাও বেশ পরিষ্কার। তবে শেষদিকের ওভার দেখে আবারো ভরসা করতে হচ্ছে ফিজকে, তবে প্রথম দিকে ভাল করতে না পারলে তাঁকে বয়ে বেড়ানো কঠিনই হবে দলের জন্য।

ডেথ ওভার স্পেশালিষ্ট, কাটার মাস্টার, বামহাতি মুরালি – মুস্তাফিজুর রহমান বোলিং নৈপুণ্য দেখিয়ে ক্যারিয়ারে অনেক উপাধি পেয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছর গুলোতে নিজের সেরা ছন্দে নেই তিনি। মাঝে মাঝে ঝলক দেখালেও প্রায় সময় নিষ্প্রভ এই পেসার। গত আয়ারল্যান্ড সিরিজেও দুই ম্যাচ বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে।

যদিও সেই সফরেই শেষ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার জিতে প্রমাণ করেছেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি। দ্য ফিজকে তাই এখনি বাদের খাতায় রাখা উচিত নয়; বরং শুরু থেকেই তাসকিন, হাসানদের মত নিয়ন্ত্রিত হওয়া শেখাতে হবে।

এই তারকা নিজের সেরা ফর্মে থাকলে বাংলাদেশের বর্তমানে পেস ব্যাটারি যে আরো তীক্ষ্ণ হবে সেটা নিশ্চয়ই কাউকে বোঝানোর অপেক্ষা রাখে না; অবশ্য অন্য কেউ এটা বোঝার আগে মুস্তাফিজের নিজের বুঝতে পারাটা জরুরি, তিনি বোঝেন তো? তাঁর শরীরি ভাষায় অবশ্য মনে হয় উত্তরটা না বোধক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link