More

Social Media

Light
Dark

মেসিময় মিয়ামির মায়াবী মুহূর্ত

সেই চিরচেনা রক্ষণচেরা পাস, বল নিয়ে কারিকুরি, মোহাবিষ্ট ড্রিবলিংয়ের দৃশ্যায়ন। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাস গালিচার ফুটবল মর্ত্যলোকে পড়লো লিওনেল মেসির পদচ্ছাপ।

ইন্টার মিয়ামির হয়ে শুরু হলো নতুন এক অধ্যায়। ‘নতুন’ শুরুর সেই অধ্যায়ে মেসি চমকে দিবেন না, তা কী করে হয়!

যাকে ঘিরে ডিআরবি পিএনকে স্টেডিয়ামের এ মহার্ঘ্য আয়োজন, সেই মেসি নিজেকে রাঙালেন নিজের মতো করেই। ট্রেড মার্ক ফ্রি-কিক থেকে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল করলেন।

ads

আর তাতেই  লিগস কাপে ম্যাচের ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে ইন্টার মিয়ামি। লিওনেল মেসির অভিষেক হতে পারে, তবে শুরু থেকে তিনি খেলবেন না— এমনটা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন কোচ জেরার্ডো মার্টিনো।

গ্যালারিভর্তি দর্শকদের তাই অপেক্ষা বাড়ছিলই। অবশ্য ম্যাচের প্রায় মুহূর্তেই ক্যামেরা চোখ খুঁজে নিয়েছে সাইডবেঞ্চে বসে থাকা মেসিকে। চললো অপেক্ষা।

তবে, এর মাঝেই মেসি প্রথম একাদশে না থাকলেও ম্যাচের ৪৪ মিনিটে গোল পেয়ে যায় মিয়ামি। তবে সেই গোলও যেন মাঠে থাকা দর্শকদের অপেক্ষার অতৃপ্ততা কমাতে পারছিল না।

কারণ, তাদের যে মাঠের মেসিকে দেখা চাই-ই চাই। বিরতির পরও মেসি থাকলেন সেই সাইডবেঞ্চেই। ততক্ষণে ‘মেসি মেসি’ রবে পুরো স্টেডিয়াম মুখরিত।

দর্শকদের চাওয়াটা টের পেলেন কোচ জেরার্ডো মার্টিনোও। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে আসলো সেই মুহূর্ত। মেসি নামলেন মাঠে। পুরো স্টেডিয়াম তখন রোমাঞ্চকর সেই মুহূর্তে উত্তপ্ত।

সেই উত্তপ্ততা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল স্টেডিয়ামে ইন্টার মিয়ামির অন্যতম মালিক ডেভিড বেকহাম, মেসির সাবেক সতীর্থ সার্জিও আগুয়েরো , বাস্কেটবল মহাতারকা লেব্রন জেমন, টেনিস কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস আর আমেরিকান অভিনেত্রী কিম কার্দাশিয়ানের উপস্থিতিতে।

কিন্তু, মেসির অভিষেকের রঙিন মুহূর্ত ম্লান হয়ে পড়ল ১১ মিনিট বাদে। ৬৫ মিনিটে মিয়ামির জালে গোল জড়িয়ে ক্রুজ আজুলকে সমতায় ফেরান ইউরিয়েল আনতুনা। এরপর থেকেই বদলে যায় ম্যাচের গতিবিধি।

একাধিকবার সম্ভাবনা জাগিয়েও ক্রুজ আজুলের রক্ষণের দেয়াল শেষ পর্যন্ত টপকানো যাচ্ছিল না। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে যদিও সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছিলেন মেসি।

কিন্তু গোলটি বাতিল হয়ে অফসাইডের চক্রে পড়ে। ম্যাচের সময় তখন ৯০ মিনিট পেরিয়ে অন্তিম মুহূর্তে। ১-১ গোলে ড্র’য়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ম্যাচের ফল।

কিন্তু, মেসির অভিষেক কি এতটাই নির্লিপ্ততায় শেষ হবে? রাজকীয় অভিষেকের তাড়নাটা বোধহয় মেসিও অনুভব করছিলেন।

খানিক বাদে সেই ভাবনাটাই বাস্তবে পরিণত করলেন। মেসিজাদু আসলো একদম শেষ মুহূর্তে। ম্যাচের ৯৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হন মেসি। রেফারির বাঁশিতে ফ্রি-কিক পায় মিয়ামি।

মেসি নিজেই নিলেন সেই ফ্রি-কিক। এরপর আসলো সেই মুহূর্ত। ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া সে ফ্রি-কিকটি আটকানোর কোনো সুযোগই পাননি ক্রুজের গোলরক্ষক।

গোলপোস্টের ডান পাশের ওপরে কোণা ঘেঁষে বল চলে যায় জালে। আর মেসির ঐ গোলেই ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইন্টার মিয়ামি।

ইন্টার মিয়ামির জয়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা বুঝা গিয়েছে কোচ আর দলটির মালিক ডেভিড বেকহামের উচ্ছ্বসিত মুহূর্ত দেখেই।

জানিয়ে রাখা ভাল, মেসির এই গোলেই ১৪ মের পর আবারো জয়ের মুখ দেখলেন ইন্টার মিয়ামিতে। মেসিময় মিয়ামি, এমনটাই তো চেয়েছিল মিয়ামিবাসী।

মেসির সকার অভিষেকে তাই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ হয়ে গেল মিয়ামি। আর মোহনীয় এক মায়াবী মুহূর্তের সাক্ষী হল ফুটবল বিশ্ব।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link