More

Social Media

Light
Dark

আম্পায়ারদের ভুলেই নিউজিল্যান্ড হেরেছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ

২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। কি এক রোমাঞ্চকর ফাইনাল! যার পরতে পরতে ছিল উন্মাদনা। সেসবের মাঝেই দুই আম্পায়ার করেছিলেন এক বিশাল বড় ভুল। এতবছর বাদে এসে নিজেদের সেদিনের করা ভুলের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন ফিল্ড আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস।

ইংল্যান্ডের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। ওই ম্যাচের শেষের ওভারে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা বোলার ট্রেন্ট বোল্ট প্রথম দুই বলে ডট আদায় করে চাপ বাড়িয়েছিলেন বহুগুণ।

তবে বেন স্টোকস সেদিন ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না। তৃতীয় বলে মিডউইকেট দিয়ে এক বিশাল ছক্কা হাঁকান। এরাসমাসদের করা ভুলের মঞ্চায়ন হয় ঠিক এরপরের বলে। বোল্টের ছোড়া ফুলটস বল ডিপ মিডউইকেটের দিকে ঠেলে দেন স্টোকস।

ads

সেই বল কুড়িয়ে থ্রো করেন মার্টিন গাপটিল। সেই থ্রো স্টোকসের ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। ইংল্যান্ডের রানের খাতায় ছয় রান যুক্ত করবার নির্দেশনা দেন এরাসমাসের সেদিনের সঙ্গী কুমার ধর্মসেনা। ঠিক সেখানেই আসলে ভুলটা করে বসেন দুই আম্পায়ার। যা কি-না ছিল এক বিশাল বড় ভুল।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে এরাসমাস বলেন, ‘পরের দিন সকাল বেলা আমি আমার হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে ব্রেকফাস্ট করতে যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনই কুমার নিজের রুমের দরজা খুলে আমাকে বলে, ”আমরা যে বিশাল বড় এক ভুল করেছি তুমি কি তা দেখেছো?”’

মূলত ছয় রানের জায়গায় সেই বলে হওয়ার কথা ছিল পাঁচ রান। কিন্তু রোমাঞ্চকর ফাইনালের উন্মাদনায় যেন আম্পায়াররাও ভেসে গিয়েছিলেন। তাতে করে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নও যেন ভেসে গিয়েছিল ইংলিশ চ্যানেল ধরে।

এমসিসির আইন অনুযায়ী, অতিরিক্ত রান বা ওভার থ্রো থেকে প্রাপ্ত রান মূল রানের সাথে তখনই যুক্ত হবে, যখন দুই ব্যাটার অর্ধেক পিচ পার করে ফেলবেন। এমসিসির ১৯.৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- কোন ওভার থ্রো থেকে বাউন্ডারি এলে, দৌড়ে নেওয়া রান তখনই যুক্ত হবে, যখন থ্রো করার মুহূর্তে দুই ব্যাটার একে অন্যকে পার করে যাবেন অথবা উইকেটের অর্ধেক পথ দুই ব্যাটারই পেরিয়ে যাবেন।

মার্টিন গাপটিল যখন থ্রো করেন, তখন স্টোকস ও আদিল রাশিদ একটি রান নিয়ে পরবর্তী রানের জন্যে কেবলই দৌড় শুরু করেছিলেন। অতএব ব্যাটে লেগে বলটা বাউন্ডারি হওয়ায় থ্রোয়ের আগে সম্পূর্ণ করা এক রানের সাথে ও চার রান যুক্ত হতো ইংল্যান্ডের রানের খাতায়। তাতে করে শেষ দুই বলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন হতো চার রান।

কে জানে হয়ত সেই একটি রানই যথেষ্ট হয়ে যেত নিউজিল্যান্ডের শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে। কেননা ম্যাচটি তো শেষ অবধি সুপার ওভারেও নিষ্পত্তি হয়নি। বাউন্ডারি সংখ্যায় ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকায় শিরোপা চলে যায় তাদের হাতে। তবে এরাসমাস কিংবা কুমার ধর্মসেনা কেউই বিষয়টি মাঠে খেয়াল করেননি। বরং পরদিন টিভি-তে খেলার হাইলাইটস দেখতে গিয়ে ধর্মসেনা বিষয়টি উপলব্ধি করেন।

এ বিষয়ে এরাসমাস বলেন, ‘তখন (পরদিন সকালে) আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারি। তবে মাঠের মধ্যে সেই মুহূর্তে আমরা একে-অপরকে শুধু বলেছি এটা ছয় রান।’ তাদের সেই একটু খানি গাফিলতিতে বদলে গেছে ইতিহাস। নিউজিল্যান্ডকে পুড়তে হয়েছে হতাশার তীব্র আগুনে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link