More

Social Media

Light
Dark

বৃষ্টির হানা-সৌম্যর ঝড়-আরেকটি হার

ওয়ানডে সিরিজে অসহায় আত্নসমর্পণ করে  নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াটওয়াশ হওয়ার পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও বড় ব্যবধানে হেরেছিলো বাংলাদেশ। কোনো ম্যাচেই লড়াই পর্যন্ত করতে পারেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে এসে সৌম্য সরকারের ব্যাটে লড়াইয়ের আভাস দিলেও শেষের দিকে বাকি ব্যাটসম্যানরা সময়ের দাবি মেটাতে না পারায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ২৮ রানে হেরে (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্বতিতে) এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হার নিশ্চিত করে হোয়াটওয়াশের শঙ্কায় রয়েছে সফরকারীরা।

ম্যাকলিন পার্ক, নেপিয়ারে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্বতিতে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১৬ ওভারে ১৭১ রান। লক্ষ্যটা বড় ছিলো; কিন্তু তাড়া করা অসম্ভব ছিলো না। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে লিটন দাসকে(৬) হারালেও বাংলাদেশকে কক্ষপথে রেখেছিলেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

ads

দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের ৪৯ বলে ৮১ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। অফ স্পিনার ফিলিপসের শর্ট বলে পুল করে চার মেরে মাত্র ২৫ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য সরকার। কিন্তু এর পর আর বেশীক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি সৌম্য। দ্বিতীত স্পেলে বল করতে আসা টিম সাউদির প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন সৌম্য সরকার।

৫ টি চার ও ৩ টি ছয়ের সাহায্যে সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৫১ রান। সৌম্য সরকার আউট হওয়ার পরই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। নাঈম শেখ ৩৫ বলে ৩৮ রান করলেও বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষের লড়াই চালিয়ে যেতে না পেরে বরং দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ।

১২ বলে ২১ রান করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চেস্টা করলেও তা যথেষ্ঠ ছিলো না। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দ্রুত আউট হয়ে গেলে নির্ধারিত ১৬ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২ টি করে উইকেট শিকার করেন টিম সাউদি, অ্যাডাম মিলনে ও হামিশ বেনেট।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটামুটি ভালোই করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালেন। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ‘গোল্ডেন ডাক’ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া অ্যালেন আজ রানের খাতায় খুলেছেন নাসুম আহমেদকে রিভার্স সুইপে চার মেরে।

এরপর সাবলীল ভাবে খেলতে থাকা অ্যালেন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তাসকিনের প্রথম বলে  ছয় মারার পর দ্বিতীয় বলে ডাউন দা উইকেট এসে আবারো ছয় মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মিড অনে। কিন্তু সফরের আগের চার ম্যাচের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ক্যাচ ফেলে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

তবে ১৫ রানে জীবন ফিরে পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি ফিন অ্যালেন। তাসকিনের ঐ ওভারের শেষ বলে নাঈম শেখের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১০ বলে ১৭ করে ফিরে যান কিউই এই ওপেনার। ৩৬ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি মার্টিন গাপটিলও। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের লেগ স্টাম্পে করা ফুল লেংথের বল গাপটিলের ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট ফাইন লেগে গেলে অবিশ্বাস্য ভাবে ঝাপিয়ে পড়ে এক হাতে  মুঠোবন্দি করেন তাসকিন।

১৮ বলে ২১ রান করে গাপটিল আউট হয়ে যাওয়ার পরের ওভারের প্রথম বলেই আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ডেভন কনওয়েকে ফিরিয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া পেসার শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের লাফিয়ে ওঠা বলে মিঠুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ডেভন

এরপর দ্রুত উইল ইয়াঙ ও মার্ক চ্যাপমানকে শেখ মেহেদী হাসান ফিরিয়ে দিলে ১১১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু যখনই দুই দলের লড়াই জমে ওঠে তখনই হানা দেয় বৃস্টি। বৃস্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী না হলেও বৃস্টি শেষে পুনরায় খেলা শুরু হলে নিউজিল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিশেলের ঝড় স্থায়ী হয়েছিলো অনেকক্ষণ।

কিন্তু এই জুটি ২৭ বলে ৬২ রান যোগ করার পর আবারো হানা দেয় বৃস্টি। দ্বিতীয় বার বৃস্টি আসার সময় নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিলো ১৭.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান। এর পর বৃস্টি থামলেও আর ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্বতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১৬ ওভারে ১৭১ রান।

ফিলিপস ৩১ বলে ৫৮ রান ও মিশেল ১৬ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশি বোলারদের ভিতর মেহেদী হাসান ২ টি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড: ১৭৩/৫ (ওভার: ১৭.৫; গাপটিল- ২১, অ্যালেন- ১৭, কনওয়ে- ১৫, ইয়াঙ- ১৪, ফিলিপস- ৫৮*, চ্যাপম্যান- ৭, মিশেল- ৩৪*) (নাসুম- ৪-০-২৫-০, সাইফউদ্দিন- ৩-০-৩৫-১, তাসকিন- ৩.৫-০-৪৯-১, শরিফুল- ৩-০-১৬-১, মেহেদি ৪-০-৪৫-২)।

বাংলাদেশ: ১৪২/৭ (ওভার: ১৬; লিটন- ৬, সৌম্য- ৫১, নাঈম- ৩৮, মাহমুদউল্লাহ- ২১, আফিফ- ২, মিঠুন-১, মেহেদী- ১২*, সাইফউদ্দিন- ৩) (হামিশ বেনেট- ৩-০-৩১-২, টিম সাউদি- ৪-০-২১-২, অ্যাডাম মিলনে- ৩-০-৩৪-২)

ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ২৮ রানে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link