More

Social Media

Light
Dark

টি-টোয়েন্টির অবিসংবাদিত গ্রেট

সাদা বলটায় চুমু খেয়ে আর তাঁর ঝাঁকড়া চুল হাওয়ায় দুলিয়ে দৌড় দিবেন না। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের যেই কিংবদন্তিদের দেখে আমাদের ক্রিকেটটা বুঝতে শেখা তাঁদের আর কেউ রইলেন না। উইকেটের পিছনে সাঙ্গাকারা বল করার আগ মুহূর্তে মালিঙ্গাকে কিছু একটা ইশারা দিচ্ছেন কিংবা মাহেলা কাঁধে হাত রেখে বলছেন স্ট্যাম্পটা উপড়ে নে আরেকবার। এই দৃশ্যগুলো অনেকদিন আগেই অতীত হয়েছে। শেষ স্মৃতি হিসেবে আমাদের ছিলেন শুধু সেপারামাদু লাসিথ মালিঙ্গা।

এবার আমাদের শেষ আঁকড়ে রাখা ভালবাসা মালিঙ্গাও বিদায় বললেন। সাদা বলটায় চুমু খেয়ে একেবারে আলমারিতে তুলে রাখলেন। তবু যাওয়ার আগে আমাদের হাতরে বেড়ানোর জন্য রেখে গেছেন কিছু স্ট্যাম্প চুরমার করা ছবি, কিছু ভালবাসা মাখা চুমু, কিছু সংখ্যা এবং এক কিংবদন্তির উপাখ্যান। মালিঙ্গার সেই অবিশ্বাস্য সংখ্যা গুলোতেই চোখ বুলিয়েছে খেলা ৭১।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হিসেবেই খেলাটাকে বিদায় জানিয়েছেন লাসিথ মালিঙ্গা। এই ফরম্যাটে তাঁর ঝুলিতে আছে ১০৭ উইকেট। তিনিই এই ফরম্যাটে প্রথম ১০০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন। এখন তাঁর কাছাকাছি ১০৬ উইকেট নিয়ে আছেন সাকিব আল হাসান।

ads

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তাঁর ঝুলিতে আছে ১৭০ উইকেট। ২০১৩ সালে প্রথম এই লিগে ১০০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন। তারপর ২০১৭ সালে নেন ১৫০ উইকেট।

সব ধরনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩৯০ উইকেট। যা বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ। ২০১৪-২০১৬ সময়টাতে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন। সব মিলিয়ে ২৯৫ ম্যাচে ১৯.৬৮ গড়ে এই ৩৯০ উইকেট নেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মালিঙ্গা। বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৩৮ উইকেট। তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু শহীদ আফ্রিদির। পাকিস্তানের এও অলরাউন্ডার বিশ্বকাপে নিয়েছেন মোট ৩৯ টি উইকেট।

বিগ ব্যাশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা বোলিং ফিগার লাসিথ মালিঙ্গারই। ২০১২-১৩ মৌসুমে এই মাত্র ৭ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। ডেথ ওভারেও আইপিএলের সেরা বোলার তিনি। ডেথে তাঁর ইকোনমি রেট মাত্র ৭.৮২। ডেথে অন্তত ২৫০ টি বল করা বোলারদের মধ্যে যা সেরা। আইপিএলে ডেথ ওভারে মোট ১৫২.৫ ওভার বল করেছেন তিনি। সেখানে তাঁর ঝুলিতে আছে ৯০ টি উইকেট।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই পেসার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন মোট ৫ বার। যার দুইটি এসেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। এছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১০ বার ৪ উইকেট নেয়ার কীর্তিও আছে তাঁর।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সব মিলিয়ে মালিঙ্গা নিয়েছেন ৩৯০ টি উইকেট। যার ১৫২ টিই ছিল বোল্ড। অর্থাৎ তাঁর মোট উইকেট সংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশই তিনি বোল্ড করে পেয়েছেন। যা অন্তত ২০০ উইকেট পাওয়া বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আইপিএলে মোট নয় বার পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। তবে এর একবারো সেটাকে হ্যাটট্রিকে রূপান্তর করতে পারেননি। তার চেয়ে বেশি পরপর দুই উইকেট নিয়েছেন শুধু উমেশ যাদব (১০)। ওদিকে আন্তর্জাতিক ম্যাচেও মোট ৭ বার এই কীর্তি করেছেন মালিঙ্গা। যারা দুইটিকে হ্যাটট্রিকেও রূপ দিতে পেরেছিলেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link