More

Social Media

Light
Dark

প্রথম বাঁধায় সফল কলকাতা

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪ তম আসরের এলিমেনিটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে ৪ উইকেটে হারিয়ে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এখন ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দিল্লী ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হবে ইয়ন মরগ্যানের দল।

এলিমেনিটরে জেতা কলকাতার সামনে এখন তৃতীয় বারের মত আইপিএলের ফাইনাল খেলার হাতছানি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ফাইনাল খেলেছিল দলটি। আর এলিমেনিটরে হেরে আরো একটি আসর হতাশায় শেষ হলো ব্যাঙ্গালুরুর। এবার ভালো শুরু পেয়েও শেষটা ভালো হলো না বিরাট কোহলিদের।

সুনীল নারাইনের বোলিং তাণ্ডবে স্বপ্ন ভঙ্গ হলো ব্যাঙ্গালুরুর। এই স্পিনার চার ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে শিকার করেন চার উইকেট। নারাইন একাই ধসিয়ে দেন ব্যাঙ্গালুরুর টপ অর্ডার। এই স্পিনারের বোলিং তাণ্ডবেই মাত্র ১৩৯ রানের লক্ষ্য পায় কলকাতা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষের দুই ওভারে সমীকরণাটা কঠিন হয়ে গেলেও সাকিব আল হাসানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জয় নিশ্চিত করে কলকাতা।

ads

৬ বলে ৯ রান করে অপরাজিত থাকেন সাকিব। এর আগে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন কলকাতার দুই ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও শুভমান গিল। ৫.২ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে দু’জন সংগ্রহ করেন ৪১ রান। হার্শাল প্যাটেলের প্রথম শিকার হয়ে ১৮ বলে ২৯ রান করে গিল ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি।

গিলের বিদায়ের পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি রাহুল ত্রিপাঠি। যুজবেন্দ্র চাহালের দুর্দান্ত এক বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান এই ব্যাটসম্যান। ৫ বলে ৬ রান করে রাহুল ফিরে যাওয়ার পর বিদায় নেন আরেক ওপেনার আইয়ার। ৩০ বলে ২৬ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলে প্যাটেলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।

৭৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কলকাতা একটু চাপে পড়লেও উইকেটে এসে টানা তিন ছয়ে চাপ আলগা করে দেন সুনীল নারাইন। বল হাতে তাণ্ডব চালানোর পর ব্যাট হাতেও ঝড়ো শুরু করেন নারাইন। কিন্তু ১৫ বলে ২৬ রান করে নারিন, ২৫ বলে ২৩ রান করে রানা ও শেষের দিকে ১২ বলে ১০ রান করে দীনেশ কার্তিক ফিরে গেলে জমে যায় ম্যাচ।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ১২ রান প্রয়োজন হয় কলকাতার। সাকিবের ৬ বলে ৯ রান ও মরগ্যানের ৭ বলে ৫ রানে ভর করে ২ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে কলকাতা। ব্যাঙ্গালুরুর বোলারদের ভিতর দুটি করে উইকেট শিকার করেন হার্শাল প্যাটেল, যুজবেন্দ্র চাহাল ও মোহাম্মদ সিরাজ।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ব্যাঙ্গালুরুকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার বিরাট কেহলি ও দেবদূত পাদ্দিকাল। উদ্বোধনী জুটিতে দু’জন মাত্র ৫.১ ওভারে সংগ্রহ করেন ৪৯ রান। লকি ফার্গুসনের দারুণ ডেলিভারিতে ১৮ বলে ২১ রান করা পাদ্দিকাল বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে এই জুটি। উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার পরই রানের গতি থেমে যায় ব্যাঙ্গালুরুর।

ইনিংসের প্রথম ওভারে ৭ রান দেওয়া সাকিব আল হাসান এই সময় টানা আরো তিন ওভার বল করে দেন মাত্র ১৭ রান। কিন্তু এই স্পিনার কোন উইকেট পাননি। তবে সাকিব উইকেট না পেলেও বল হাতে তাণ্ডব চালান সুনীল নারিন। শ্রীকার ভারতকে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার পর বিরাট কোহলিকে বোল্ড করে দেন এই স্পিনার।

১৬ বলে ৯ রান করেন ভারত আর কোহলির ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৩৯ রান। ৮৮ রানে ৩ উইকেট হারানো ব্যাঙ্গালুরুর ইনিংসে আবার জোড়া আঘাত হানেন নারাইন। এবার সবচেয়ে বড় শিকার দুটি ধরেন এই স্পিনার। প্রথমে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এবিডি ভিলিয়ার্সকে বোল্ড করে দেওয়ার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৯ বলে ১১ রান করেন ডি ভিলিয়ার্স এবং ম্যাক্সওয়েল করেন ১৮ বলে ১৫ রান।

১১২ রানে ৫ উইকেট হারানো ব্যাঙ্গালুরু এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেননি। শেষের দিকে শাহবাজ আহমেদের ১৪ বলে ১৩ রান ও হার্শাল প্যাটেলের ৬ বলে ৮ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান সংগ্রহ করে ব্যাঙ্গালুরু। কলকাতার পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন সুনীল নারিন। এছাড়া দুটি উইকেট পেয়েছেন লকি ফার্গুসন। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন সাকিব আল হাসান।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু: ১৩৮/৭ (ওভার: ২০; কোহলি- ৩৯, পাদ্দিকাল- ২১, ভারত- ৯, ম্যাক্সওয়েল- ১৫, ভিলিয়ার্স- ১১, শাহবাজ- ১৩, প্যাটেল- ৮*) (নারাইন- ৪-০-২১-৪, সাকিব- ৪-০-২৪-০ ফার্গুসন- ৪-০-৩০-২)

কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৩৯/৩ (ওভার: ১৭; আইয়ার- ২৬, গিল- ২৯, রানা- ২৩, নারাইন- ২৬, কার্তিক- ১০, সাকিব- ৯*, মরগ্যান-৫* ) (চাহাল- ৪-০-১৬-২, প্যাটেল- ৪-০-১৯-২, সিরাজ- ৪-০-১৯-২)

ফলাফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link