More

Social Media

Light
Dark

জশ বাটলার, সীমিত ওভারের রাজা

সাদা বলের ক্রিকেটে বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটারদের একজন জশ বাটলার। আইপিএলের গত মৌসুমে জিতেছিলেন সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের খেতাব। ফর্মটা ধরে রেখেছেন এবারের মৌসুমেও, সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের দৌড়ে টিকে আছেন ভালোভাবেই। 

ক্যারিয়ারের শুরুতে ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। টপ অর্ডারের গড়ে দেয়া ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়ার দায়িত্বটা ভালোভাবেই পালন করেছেন বাটলার। কিন্তু ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্টের এক সিদ্ধান্তে বদলে যায় বাটলারের জীবন, বনে যান পুরোদস্তুর ওপেনার। এরপর থেকেই বাটলারের ব্যাটে রানের ফোয়ারা, পাওয়ার প্লেতেই প্রতিপক্ষ বোলারের মনোবল গুঁড়িয়ে দেবার দায়িত্বটা পালন করছেন দারুণভাবেই। 

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটার হিসেবে সুনাম ছিল বাটলারের। কেবলমাত্র পেশির জোর নয়, বরং নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ৩৬০ ডিগ্রী ক্রিকেটার হিসেবে। উইকেটের চারপাশে শট খেলার দক্ষতা তাঁকে আলাদা করে তুলেছে বাকি ওপেনারদের তুলনায়।

ads

সাদা বলের ক্রিকেটে বাটলারকে থামানোর যেন কেউ নেই। ইংল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির প্রথম চারটি রেকর্ড বাটলারের দখলে। টি টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড তাঁর দখলেই।  

কেবলমাত্র ব্যাটিং নয়, উইকেটের পেছনে দাঁড়াতেও সমান পটু এই তারকা। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বগুণের সুবাদেই কিনা ইয়ন মরগ্যান পরবর্তী যুগে ইংল্যান্ডের সাদা বলের নেতৃত্বভার উঠেছে তাঁর কাঁধে। অধিনায়কত্ব পেয়েই দলকে জিতিয়েছেন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।

পুরো বিশ্বকাপজুড়েই ব্যাট হাতে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই তারকা। বছরশেষের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও শিরোপা ধরে রাখার মিশনে তাঁর নেতৃত্বেই মাঠে নামবে থ্রি লায়ন্সরা। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আলো ছড়ালেও আইপিএলে বাটলারের সেরাটা দেখতে ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ কয়েক বছর। গত সব আক্ষেপ যেন সুদে – আসলে মিটিয়ে দিয়েছেন গত মৌসুমে। রাজস্থানের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে রেকর্ডবুকে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন।

সমান চারটি করে সেঞ্চুরি আর হাফসেঞ্চুরিতে ১৫০ স্ট্রাইকরেট এবং ৫৭ গড়ে ১৭ ইনিংসে করেন ৮৬৩ রান। যদিও ফাইনালে গুজরাট টাইটান্সের কাছে হেরে রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাটলারের দলকে। 

তবে এবারের মৌসুমে যেন দলকে চ্যাম্পিয়ন করাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বাটলার। তরুণ যশস্বী জয়সওয়ালকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলেছেন টুর্নামেন্টের সেরা উদ্বোধনী জুটি। যদিও মৌসুমের শুরুতে ফর্মে ছিলেন না, মাঝে মধ্যে তরুণ জয়সওয়ালের পাশে বড্ড নিষ্প্রভ লাগছিলো তাঁকে। বেশ কয়েকটি মাঝারি মানের ইনিংস খেললেও সেগুলো ঠিক বাটলার সুলভ ছিল না। তবে প্রিয় প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে পেয়েই যেন পুরনো ছন্দে ফিরলেন এই তারকা। 

গত মৌসুমেই হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে খেলেছিলেন আইপিএলে ক্যারিয়ার সেরা ১১৬ রানের ইনিংস। ছন্দটা ধরে রাখলেন জয়পুরেও, তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কোনো জবাব ছিল না প্রতিপক্ষের বোলারদের কাছে। ইনিংসের শুরুতে খানিকটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে খোলস ছেড়ে বেরিয়েছেন বাটলার।

৫৯ বলে ৯৫ রান করে আউট হবার পথে ১০টি চারের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন চারটি ছক্কা। ভুবনেশ্বর কুমারের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে না ফিরলে হয়তো এদিনও সেঞ্চুরিটা পেয়েই যেতেই বাটলার। 

টুর্নামেন্টের শেষদিকে এসে যেন শুরুর ছন্দটা হারিয়ে ফেলেছে রাজস্থান রয়্যালস। গতবারের সাফল্যকে ছাপিয়ে যেতে তাই বাটলারের ফর্মে ফেরাটা ভীষণ জরুরি ছিল দলটির জন্য। বাটলার নিজেও চাইবেন রানের ধারাটা বজায় রেখে দলকে শেষ চারে নিয়ে যেতে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link