More

Social Media

Light
Dark

এই আমাদের সামর্থ্যের সীমা!

প্রথমে আপনি শিক্ষক পরিবর্তন করতে পারেন। এরপর স্কুল বদলে ফেলতে পারেন। তাতেও কাজ না হলে বাসায় সব সিস্টেম বদলাতে পারেন। এতো কিছুর পরও যদি কাজ না হয়, তাহলে আসলে মেনে নিতে হবে যে, ওই শিক্ষার্থীর যোগ্যতার দৌড়ই অতোটুকু। আর জোরাজুরি করে লাভ নেই। এটা মেনে নিয়েই এখন এগোতে হবে।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি খেলার ক্ষেত্রে কী আমাদের এমন একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোর সময় চলে এসেছে? অন্তত আমাদের ব্যাটিংয়ের দৌড় আসলে কী এটুকুই?

২০০৬ সালে বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫৪ রান করেছিলো। এই ১৫ বছর পার করে এখনও বাংলাদেশের ‘স্বপ্ন’ ওই ১৫৪ রান করা। বিষ্ময়করভাবে বেশিরভাগ সময়ই বাংলাদেশ এই সময়ে ১৫০ রান পার করতে পারেনি।

ads

টি-টোয়েন্টিতে আজকাল ১৮০ রানটা একটা বেঞ্চমার্ক হয়ে গেছে। উইকেট, কন্ডিশন, বোলার; এসব বাদ দিয়ে ভাবলেও আপনাকে লড়াই করতে গেলে ১৬০ থেকে ১৭০ রান করতে পারতে হবে। আর একেবারে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হলে আপনাকে অবশ্যই দুই শ রান পার করতে পারতে হবে জয় পাওয়ার জন্য। এখানে বাংলাদেশের আসলে কী অবস্থা?

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যা্চটিসহ বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১২৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। এর মধ্যে ৪১ বার মাত্র বাংলাদেশের ইনিংস ১৫০ পার করতে পেরেছে। মানে ৮২ ইনিংসেই বাংলাদেশ ১৫০ ছুঁতে পারেনি। এই ১২৩ ইনিংসে মাত্র দু বার বাংলাদেশ দুই শ বা তার বেশি রান করেছে। একটু বিপরীত দিক থেকে দেখলে বাংলাদেশ ১৩ বারই এক রানের নিচে আটকে গেছে।

বুঝতেই পারছেন, এটা আর যাই হোক, একটা ভালো টি-টোয়েন্টি দলের পরিসংখ্যান হতে পারে না।

সর্বশেষ ২১ ম্যাচকে আমরা যদি বিবেচনায় নেই, তাহলে দেখবো এর মধ্যে মাত্র ৩ বার বাংলাদেশ ১৫০ পার করা ইনিংস খেলতে পেরেছে। তার দুটি আবার ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এই সময়ে বাংলাদেশ টানা দু ম্যাচে এক রানের নিচে অলআউট হয়েছে।

এমন না যে, বাংলাদেশ টুকটাক জয় পাচ্ছে না।

সর্বশেষ দেশের মাটিতে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে। সেখানে ১০ ম্যাচে একবারও বাংলাদেশ ১৫০ রান করতে পারেনি। কিন্তু এর মধ্যে ৭টি ম্যাচ জিতেছে তারা।

মানেটা কী বুঝলেন?

মানে হলো, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দৌড় ওই ১২০-১৪০ রান। আপনি খারাপ উইকেটে খেলতে দিলে আমরা ১২০ রান করে বিপক্ষকে উইকেটের সুবিধা নিয়ে এর ভেতর আটকে রাখতে পারবো। স্পোর্টিং উইকেট হলে আমরা ১৪০ রান করে লড়াই করে হারবো। আর ব্যাটিং উইকেট হলে আমরা খুব জোর সেই ১৫৪!

দেখুন, আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে এবং অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছি। তিনটি সিরিজেই কিন্তু আমরা একইরকম ব্যাট করেছি। তাহলে পার্থক্য কী ছিলো?

পার্থক্য ছিলো এই উইকেটে ভয়ে ও অনভ্যস্ততায় অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড দাড়াতেই পারেনি। বিপরীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে উইকেট অতোটা আনপ্লেয়েবেল ছিলো না। আর পাকিস্তান এমন উইকেট দেখে অভ্যস্ত। ফলে আমরা পারিনি।

এতো কথার মানে একটাই, উইকেট-কন্ডিশন বা প্রতিপক্ষ আমাদের জন্য বিবেচ্য নয়। আমরা আসলে এই ফরম্যাটের ব্যাটিংটা পারিই না।

তবে শেষ করনার সময় একটু আশার কথা বলা যাক।

পারি না, মানে কখনোই পারবো না; তা তো নয়। এরা পারছে না, এই দলটা পারছে না, আগের দলগুলো পারেনি; তার মানে এই নয় যে, কেউ পারবে না। বিপিএলের বাইরে একটা দুটো ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট চালু করুন। ভালো উইকেটে ছেলেদের মন খুলে ব্যাট করতে দিন। ঠিক নতুনরা বেরিয়ে আসবে।

তখন নিশ্চিত করে বলতে পারবো-আমরাও পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link